
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ওয়াকফ সংশোধনী বিল নিয়ে তোলপাড় সংসদ। বিতর্কে অংশ নিয়ে তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাফ কথা ওয়াকফ সংশোধনী বিল দেশের মুসলিমদের ধর্মীয় স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ। কেন্দ্রীয় সরকারের দাবি, নতুন আইন হলে ওয়াকফ নিয়ে দুর্নীতি দূর হবে। মুসলিমরা উপকৃত হবেন। কিন্তু কী এই ওয়াকফ।
ওয়াকফ কী
মুসলিমরা তাদের সম্পত্তির কিছুটা অংশ ধর্মীয় কাজকর্মে ও মুসলিম সম্প্রদায়ের উন্নতির জন্য দান করে থাকেন। খুব সহজ করে বললে এটাই হল ওয়াকফ। এই সম্পত্তির আয় থেকে মসজিদের খরচ চালানো হতে পারে, শিক্ষার কাজে ব্যবহার হতে পারে, অনাথদের সাহায্য করা হতে পারে। ওইসব সম্পত্তি পরিচালনা করার জন্যে রয়েছে ওয়াকফ বোর্ড। ওয়াকফ দুই ধরনের হয়ে থাকে। একটি হল যে সম্পত্তির দেখাভাল ও তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন জনসাধারণ। অন্যটি হল, কোনও সম্পত্তি ওয়াকফ করে দেওয়া হল তবে তার দেখাভাল করবেন সম্পত্তি দানকারীই। এনিয়ে পুরনো আইন রয়েছে। তা এবার সংশোধন করতে চলেছে কেন্দ্র। গোটা দেশে মোট ৮.৭ লাখ ওয়াকফ সম্পত্তি রয়েছে। ভারতীয় রেল ও সেনাবাহিনীর পরই দেশে ওয়াকফের বেশি সম্পত্তি রয়েছে।
সরকার কী করতে চাইছে
ওয়াকফের সংজ্ঞা বদল করা।
ওয়াকফ সম্পত্তি রেজিস্ট্রেশন করার পদ্ধতির বদল।
ওয়াকফ সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণে টেকনোলজির ব্যবহার বাড়ানো।
সরকার চাইছে ট্রাস্ট আর ওয়াকফের একটা পার্থক্য করতে। মুসলিমরা যে কোনও আইনেই কোনও সম্পত্তি ট্রাস্ট করুক না কেন তা আর ওয়াকফ বলে গন্য হবে না।
নিষ্ঠার সঙ্গে ধর্ম পালনকারী মুসলিমরাই একমাত্র তাদের সম্পত্তি ওয়াকফ করতে পারবেন।
কোনও সম্পত্তি ওয়াকফ করার আগে সেই সম্পত্তির কোনও মহিলা ওয়ারিশ যদি থাকেন তাহলে তাদের প্রাপ্য মিটিয়ে দিতে হবে। বিধবা, অনাথ ও বিবাহ বিচ্ছিন্ন মহিলাদের স্বার্থ দেখতে হবে।
কোনও সরকারি সম্পত্তি যদি কেউ ওয়াকফ বলে দাবি করেন তাহলে তার তদন্ত করতে পারবেন কালেক্টরের উপরের ব়্যাঙ্কের কোনও অফিসার।
ওয়াকফ সম্পত্তির আয় যদি ১ লাখ টাকার উপরে হয় তাহলে সেই আয়ের অডিট করাতে হবে। ওই অডিট করবেন রাজ্যের অডিটররা।
ওয়াকফ সম্পত্তির বর্ণনা থাকবে একটি সেন্ট্রালাইজড পোর্টালে।
যারা মোতোয়াল্লি বা দেখভাল করেন তাদের ওয়াকফ সম্পত্তির রেজিস্ট্রেশন করাতে হবে।
কেন্দ্রীয় ও রাজ্যের ওয়ারফ বোর্ডে ২ জন অমুসলিম প্রতিনিধি থাকবেন।
টানা আইনি জটিলতা এড়াতে ওয়াকফ সম্পত্তিতে ১৯৬৩ সালের লিমিটেশন আইন বলবত হবে।
যে কোনও সম্পত্তিতে ওয়াকফ বলে ঘোষণা করা যাবে না।
কেন বিরোধিতা
বিরোধীদের বক্তব্য় ওয়াকফ আইন সংশোধন করার মাধ্যমে সরকার ওই সম্পত্তি কব্জা করতে চাইছে। মুসলিমদের ধর্মীয় অধিকার খর্ব করতে চাইছে। দেশের ধর্ম নিরপেক্ষ কাঠামোয় আঘাত করার চেষ্টা হচ্ছে। ওয়াকফ বোর্ড অমুসলিমদের প্রবেশাধিকার নিয়ে এক শ্রেণির মুসিলমদের আপত্তি রয়েছে।
(Feed Source: zeenews.com)