পিছন পানে তাকাই যদি কভু : নিম-হলুদ বেটে শুদ্ধস্নান, মুখে ছোঁয়ানো মধু আর হারিয়ে যাওয়া ‘পয়লা বৈশাখ’

পিছন পানে তাকাই যদি কভু : নিম-হলুদ বেটে শুদ্ধস্নান, মুখে ছোঁয়ানো মধু আর হারিয়ে যাওয়া ‘পয়লা বৈশাখ’

এই গোটা চৈত্র-বৈশাখ মাসটাই যেন অপাংক্তেয় মফঃস্বলের মাস। সংক্রান্তির দিন ঝড় উঠবেই। নেড়া ছাদের ওপর হেলে পড়ত পাশের বাড়ির আমগাছটা‌।

পিছন পানে তাকাই যদি কভু

একটা সাইকেলের বেল শুনলেই একছুট্টে চলে যাওয়া। ঝুলি থেকে যা বেরবে তা মণিমাণিক্যের কম কী! চিঠি জোড়া নববর্ষের শুভেচ্ছা। শুরুতেই অনুযোগ, ‘অনেকদিন তোমার পত্র পাই না।’ তারপর হলদে পোস্টকার্ডের দিনগুলো পেরিয়ে দূরভাষ এল। ‘হালখাতার রং লাল কেন হয়’, এমনিই কিছু অবান্তর প্রশ্ন করতে করতে মায়ের হাত ধরে হেঁটে যাচ্ছিল যে শিশু, আজ তার বয়স কত? অথচ টেলিফোনে সবাইকে শুভ নববর্ষ জানানোর দায়িত্ব পড়ত তার ওপরেই। ‘প্রণাম নিও’ বলার অনিবার্য উত্তর , ‘তুমিও আমার আশীর্বাদ নিও’। পাড়ার প্রতিটা বাড়িতে সেদিন একইরকম ক্যালেন্ডার। যার নীচের দিকটা খানিক ধারালো। মাস বদলাতে গেলে পাতা ছিঁড়ে ফেলতে হয়। নিম-হলুদ বেটে স্নান করে খড়খড়ে নতুন জামা পরা‌। তারপরেই মুখে মধু ছোঁয়ানো। বৈশাখ আসত বটে মফঃস্বলে। বাড়ি জোড়া চৈত্রসেল। বিছানায় সস্তার চাদর। তার আয়ুষ্কাল হয় তো ওই মাসটাই। গলার ভাঁজে ঘামের সঙ্গে মিশে যাওয়া পাউডারের ছোপ। দুপুরে কালোজিরে দেওয়া আমের ঝোল। কুঁজোর গায়ে লালে আঁকা স্বস্তিক। দরজায় নিমপাতা, দোকানে আমের পল্লব। ‘এই লভিনু সঙ্গ তব…’