#নয়াদিল্লি: এক টানা প্যাচপ্যাচে গরমের পর বর্ষা বেশ স্বস্তি নিয়ে এসেছে। আর সেই সঙ্গেই নিয়ে এসেছে একরাশ সমস্যাও; ওটা ছাড়া জীবন হয় না! ফলে, বর্ষার জল থেকে পেটের সমস্যা হবে, চোখের সমস্যা হবে, ত্বক আর চুলেরও হবে বই কি! আপাতভাবে আরামদায়ক মনে হলেও তাই এই ঋতুতে আমাদের ত্বক ও চুলের বাড়তি যত্নের প্রয়োজন রয়েছে। ত্বকের যত্ন নিলেও অনেকেই চুলকে উপেক্ষা করেন। কিন্তু এই সময় অতিরিক্ত আর্দ্রতার জন্য চুলের বেশি ক্ষতি হয়। এতে খুশকি, চুল পড়া এবং অন্যান্য সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে মেঘলা আবহাওয়ায় চুল শুকোতে দূর হয়, চুল হয়ে ওঠে চিটচিটে, জটও পড়ে যায় সহজেই। তাই বর্ষাকালে সবচেয়ে বেশি চুলের যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। তাহলে এবারের বর্ষায় স্বাস্থ্যকর চুলের জন্য কী কী করা উচিত জেনে নেওয়া যাক এক এক করে।
১. চুল শুকনো থাক
বর্ষাকালে চুল শুকনো রাখা খুবই জরুরি। বৃষ্টির জলে চুলের জন্য ক্ষতিকারক নোংরা এবং অ্যাসিডিক থাকে। চুলের জল মোছার জন্য নরম মাইক্রোফাইবার তোয়ালে ব্যবহার করা যায় যা জল তাড়াতাড়ি শুষে নেবে এবং চুল পড়াও কমবে।
২. নারকেল তেলের ব্যবহার
শ্যাম্পুর ১৫ মিনিট আগে নারকেল তেল ব্যবহার করলে তা চুলের প্রিকন্ডিশনিং-এ সাহায্য করে। এর ফলে পুরুষ এবং মহিলাদের মাথার ত্বকের সমস্যাও কমে।
৩. সঠিক ডায়েট দরকার
চুলকে স্বাস্থ্যকর রাখতে ডায়েটেরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। আসলে আমরা যা খাই তার উপরে চুলের গুণমান নির্ভর করে। সেক্ষেত্রে ডায়েটে প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার যেমন ডিম, আখরোট, দুগ্ধজাত দ্রব্য, গোটা শস্য এবং সবুজ শাকসবজি রাখতে হবে যা চুলের জেল্লা বজায় রাখবে। আবার বেরি, বাদাম, পালংশাক এবং মিষ্টি আলু চুলের বৃদ্ধির জন্য কিছু ভালো খাবার।
৪. ঠিক চিরুণি ব্যবহার
ভিজে অবস্থায় আচঁড়ালে কিন্তু চুল দুর্বল হয়ে যায়। মোটা দাঁড়ার চিরুনি ব্যবহার করতে হবে যাতে সহজেই চুলের জট ছাড়ানো যায়। আবার চুলের স্বাস্থ্যের জন্য নিজের আলাদা চিরুনি রাখতে পারলে ভালো হয়। এতে চুলে ছত্রাক সংক্রমণ এড়ানো যায়।
৫. নিম ও হলুদের পেস্ট
বর্ষাকালে খুশকি কিংবা যে কোনো ছত্রাক সংক্রমণ থেকে রেহাই পেতে হলুদ ও নিমের পেস্ট খুব ভালো কাজ করে। নিম এবং হলুদ দুটিরই অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল, অ্যান্টিফাঙ্গাল, অ্যান্টিসেপটিক, অ্যান্টিভাইরাল এবং অ্যান্টিইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা খুশকির চিকিৎসার জন্য উপযুক্ত সমাধান। পাশাপাশি দুটিই ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ। ফলে চুল এবং মাথার ত্বককে স্বাস্থ্যকর করে তোলে।
৬. চুল ছোট করলে সাহায্য হতে পারে
চুল পড়ার সমস্যা সমাধানের একটি সহজ উপায় হল চুল ছোট করে কাটা। এতে চুলের গোড়ায় যেমন টান পড়ে না, তেমনই চুল মেনটেন করতেও সুবিধে হয়।
৭. সঠিক শ্যাম্পু, কন্ডিশনার এবং সিরাম ব্যবহার
বর্ষাকালে আমাদের চুল শুকনো, ভঙ্গুর এবং ফ্রিজি হয়ে যায়। অতিরিক্ত আর্দ্রতার কারণে চুলের জেল্লা থাকে না। তাই চুলের ধরনের উপর নির্ভর করে সঠিক শ্যাম্পু এবং কন্ডিশনার ব্যবহার করলে তা চুলকে ঠিক রাখতে অনেক সাহায্য করবে। শ্যাম্পু করার পরে অতিরিক্ত ভলিউম এবং বাউন্স করতে কন্ডিশনার ব্যবহার দরকার। এটি চুলকে অনেকটা সময় ঝলমলে এবং বাউন্সি রাখবে। পাশাপাশি ভাল হেয়ার সিরাম ব্যবহার করলে চুল রুক্ষ হবে না।
৮. চুল বেঁধে রাখা
বাইরে বেরোলে যাতে চুল ভিজে না যায় তাই পলিটেল বা খোঁপা করে রাখা যায়। এটি চুল কোঁকড়ানো আটকাবে। পাশাপাশি, চুলকানি এবং বার বার চুলে বৃষ্টির জল জমে মাথার ত্বকে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ বাঁচায়।
৯. হেয়ার কালার এবং স্টাইলিং কম করা
হেয়ার ব্রোকেজের প্রবণতা থাকলে চুল শুষ্ক এবং ভঙ্গুর হয়, এক্ষেত্রে বর্ষাকালে চুলে রঙ না করাই ভালো। কারণ যে ধরনের কালার চুলকে বেশি শুষ্ক এবং প্রাণহীন করে তোলে। আসলে রঙের মধ্যে এক ধরনের রাসায়নিক থাকে যা বৃষ্টির জল পড়লে চুলকে নিস্তেজ করে তোলে।
১০. স্টাইলিং করতে হিট প্রোটেকশন স্প্রে ব্যবহার
বর্ষার মরসুমে চুলের স্টাইলিং-এর জন্য কোনও স্টাইলিং প্রোডাক্ট চুলে লাগানোর আগে ভালো হিট প্রোটেকশন স্প্রে, মরোক্কান বা আর্গান অয়েল ব্যবহার করলে ভালো। না হলে চুলের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।