Exclusive: মহীরুহ পতন, তরুণ মজুমদারের জীবনাবসানে শোকস্তব্ধ অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়-হরনাথ চক্রবর্তী

Exclusive: মহীরুহ পতন, তরুণ মজুমদারের জীবনাবসানে শোকস্তব্ধ অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়-হরনাথ চক্রবর্তী

News

oi-Koushik Chakraborty

পতন ঘটল ভারতীয় চলচ্চিত্রের এক অন্যতম মহীরুহ। তরুণ মজুমদারের প্রয়াণে সমাপ্ত হল এক ঐতিহাসিকত অধ্যায়, যেই অধ্যায়ের প্রতিটি পৃষ্টার ছড়িয়ে রয়েছে একাধিক মনিমাণিক্য-অলংঙ্কার-রত্ন। তরুণ মজুমদার শুধু একজন কিংবদন্তি চিত্র পরিচালক ছিলেন না, তিনি বাংলার রূপ-রস-গন্ধকে অবলম্বন করে রঙিন পর্দায় মানুষের জীবন এবং দু’চোখ ভরা স্বপ্নের ছবি আঁকতেন। তিনি ছিলেন মৃণাল সেন, সত্যজিৎ রায়, তপন সিনহা, ঋত্বিক ঘটকদের জুড়ি। তাঁর প্রয়াণে এই পঞ্চ নক্ষত্রের শেষ তারকার পতন ঘটল।

তরুণ মজুমদারের মৃত্যু নাড়িয়ে দিয়ে গিয়েছে টলিউডিরে দুই প্রথিতযশা চিত্র পরিচালক হরনাথ চক্রবর্তী এবং অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়কে। তরুণ মজুমদারের প্রয়াণের খবর জানিয়ে প্রতিক্রিয়া নেওয়ার জন্য এই প্রতিবেদক যখন হরনাথ চক্রবর্তীর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাঁর কথার মধ্যে স্বজন হারার বেদনা ধরা পড়ছিল। তিনি বলেন, “খুব বড় ক্ষতি হয়ে গেল টলিউডের। ওনার মতো একজন মহান পরিচালককে হারাল টালিগঞ্জ। উনি আমাদের অভিভাবকের মতো ছিলেন, আমাদের অত্যন্ত শ্রদ্ধার মানুষ ছিলেন। ওনার ছবি েখে আমরা বড় হয়েছি। ওনার ছবি দেখতে দেখতে মানুষ বাংলার মাটির গন্ধ পেতেন। রবীন্দ্র সংগীতকে বাংলার ছবির মধ্যে দিয়ে যিনি মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিয়েছেন তিনি তরুণ মজুমদার। প্রচুর শিল্পীকে তারকা বানিয়েছেন গোটা কেরিয়ারে এই মানুষটা। ওনার কাছে সারা জীবন ঋনী থাকব আমরা। ওনার আত্মার শান্তি কামনা করি।”

Exclusive: মহীরুহ পতন, তরুণ মজুমদারের জীবনাবসানে শোকস্তব্ধ অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়-হরনাথ চক্রবর্তী

এ দিন তাঁর সঙ্গে তরুণ মজুমদারের কাটানো সময়ের স্মৃতিচারণও করেছেন হরনাথ। গতকাল অর্থাৎ রবিবার পর্যন্ত হাসপাতে ভর্তি কিংবন্তি পরিচালকের সঙ্গে কথা হয়েছে তাঁর। তিনি বলেন, “ওনাকে অত্যন্ত শ্রদ্ধা করতাম আমি। এমনিতে মাঝে মধ্যেই বিভিন্ন বিষয়ে ওনার সঙ্গে কথা হতো। উনি বিভিন্ন পরমার্শ দিতেন। যখন তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন তখনও ওনার সঙ্গে আমার কথা হয়। ওনাকে আমি ফোন করেছিলাম, উনি ফোন ধরেও ছিলেন কিন্তু তখন কথাটা কিছুটা জড়িয়ে যাচ্ছিল।”

Exclusive: মহীরুহ পতন, তরুণ মজুমদারের জীবনাবসানে শোকস্তব্ধ অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়-হরনাথ চক্রবর্তী

তরুণ মজুমদারের প্রয়াণে একই রকম ভরাক্রান্ত পরিচালক তথা সঙ্গীত শিল্পী অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়। ব্যক্তিগত স্তরে সেই ভাবে গভীর যোগাযোগ না থাকলেও চলচ্চিত্র জগতের এই কিংবদন্তির প্রয়াণে ভেঙে পড়েছেন তিনি। তাঁর সঙ্গে কথা বলার সময়েই বোঝা যাচ্ছিল কতটা নাড়া দিয়ে গিয়েছে তাঁকে এই চিত্র পরিচালকরে প্রয়াণ। এই প্রতিবেদককে তিনি বলেছেন, “তরুণ মজুমদারের চলে যাওয়া এক অপূরণীয় ক্ষতি। এই যে মানুষগুলো তাঁদের জীবন দেখার দৃষ্টিভঙ্গি, আদর্শ, সিনেমা দেখার নজর সবই অন্য রকম ছিল। এই মানুষগুলোর ছেড়ে যাওয়া স্থান কখনও ভরাট করা যাবে না। তরুণ মজুমদারের মধ্যে নিপাট বাঙালিয়ানা ছিল, সেটা তাঁর পোষাক থেকে শুরু করে, ছবি তৈরি সব কিছুতে লক্ষ্যণীয় ছিল। বাঙালি যেখানেই থাকে সেখানে একটা মিষ্টতা থাকে, এই মিষ্টতাটা আমরা তরুণ মজুমদারের ছবিতে দেখতে পাই।”

এত বড় মাপের শিল্পী হলেও কখনও ঔদ্বত্য বা হামলে পড়া স্বভাবটা ছিল অনিন্দ্যর মধ্যে, আজও তা নেই। সেই কারণেই থেকে দেখলেও সামনাসামন পরিচয় কখনও করা হয়ে ওঠেনি তরুণ মজুমদারের সঙ্গে। কিংবদন্তি চলচ্চিত্রকারের সঙ্গে সামনাসামনি পরিচয় না হয়ে ওঠার অপ্রাপ্তিটা যে রয়েই গেল তা ফোন রাখার আগে জানিয়ে দিলেন চন্দ্রবিন্দুর অন্যতম প্রাণভোমরা।

(Source: oneindia.com)