
#নয়াদিল্লি: অগুরু এক ধরনের ভেষজ। একে অউধও বলা হয়। সুগন্ধী তেল, ধূপকাঠি এবং ভেষজ ওষুধ তৈরিতে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। হাঁপানি, গাউট, আর্থ্রাইটিস, প্রদাহ, চর্মরোগ, চুলের সমস্যা, গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যা, নিঃশ্বাসের দুর্গন্ধ, কার্ডিয়াক অসঙ্গতি, জ্বর, ক্রমাগত হেঁচকি, লিভারের অসুখ-সহ একাধিক চিকিৎসায় অগুরুর ব্যবহার উল্লেখযোগ্য। পুরুষের প্রজনন সংক্রান্ত সমস্যাতেও অগুরু ব্যবহারের চল রয়েছে।
অগুরুর স্বাস্থ্য উপকারিতা:
সর্দি এবং ঠান্ডা লাগায় – সর্দি, কাশি হলে অস্বস্তির শেষ থাকে না। রাতের ঘুম নষ্ট হয়। অ্যান্টিইনফ্লেমেটরি, অ্যান্টিবায়োটিক এবং এক্সপেক্টোর্যান্ট বৈশিষ্ট্য সমৃদ্ধ অগুরু ঠান্ডা লাগার যে কোনও চিকিৎসায় দারুণ কার্যকরী। বুকে বসা সর্দি দূর করতে এবং নাক দিয়ে জল পড়া আটকাতে এর ব্যবহার বহু প্রাচীন। এজন্য প্রথমে অগুরু কাঠ জলে সেদ্ধ করে কাত্থ তৈরি করে নিতে হবে। তারপর মধু মিশিয়ে সেটা পান করতে হবে। এতে সর্দি, কাশির সঙ্গে শ্বাসকষ্টও দূর হয়।
ব্রঙ্কাইটিস নিরাময়ে – কাসা রোগ, ডাক্তারি পরিভাষায় বলা হয় ব্রঙ্কাইটিস। এটা এমন একটা অবস্থা যাতে বায়ুনালীতে প্রদাহ এবং ফুসফুসের ব্রঙ্কি এবং ব্রঙ্কিওলে শ্লেষ্মা জমা হয়। ব্রঙ্কাইটিসের প্রধান কারণ হল ভাত এবং কফ দোষ। শ্বাসযন্ত্রের ট্র্যাক্টে জমা শ্লেষ্মা বাতাসের মুক্ত প্রবাহকে বাধা দেয়। অগুরু শ্বাসনালী থেকে শ্লেষ্মা বের করে দিতে সাহায্য করে।
ব্যথা এবং প্রদাহ রোধে – অগুরুতে অ্যান্টিইনফ্লেমেটরি, অ্যান্টিবায়োটিক বৈশিষ্ট রয়েছে। ফলে এটা ব্যথা এবং প্রদাহ নিরাময়ে কাজ করে। জয়েন্টে ব্যথা গাউট, রিউমাটয়েড এবং অস্টিওআর্থারাইটিসের মতো দীর্ঘস্থায়ী অটোইমিউন প্রদাহজনিত রোগের সম্ভাবনা হ্রাস করে। বেদনাদায়ক পেশির খিঁচুনি, ঘা, বাতজনিত অবস্থা এবং অন্যান্য প্রদাহজনিত সমস্যাগুলিরও চিকিৎসা হয় অগুরুতে। অগুরু পাউডারে সামান্য নারকেল মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে জয়েন্টে লাগালে ব্যথা থেকে মুক্তি মেলে।
ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখে: অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্যে সমৃদ্ধ অগুরু ক্ষতিকারক ইউভিএ এবং ইউভিবি রশ্মির কারণে ত্বককে র্যাডিকাল অক্সিডেটিভ ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন লক্ষণ যেমন ডার্ক সার্কেল, বলিরেখা, দাগ, সূক্ষ্ম রেখার ঝুঁকি কমায়। এর শক্তিশালী অ্যান্টিইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্যগুলি অ্যালার্জির হাত থেকে বাঁচায়। পাশাপাশি ব্রণ, পিম্পল এবং জিট কমায় এবং মসৃণ এবং উজ্জ্বল ত্বক প্রদান করে।
খিদে বাড়ায়: অনেক সময় সংক্রমণ ব্যাধি থেকে সেরে ওঠার সময় খিদে চলে যায়। এঁদের জন্য অগুরু অত্যন্ত উপকারী। আয়ুর্বেদ অনুসারে, ক্ষুধা হ্রাস সাধারণত দুর্বল হজম বা অগ্নিমান্দ্যের কারণে ঘটে। এই ভেষজ নিয়মিত গ্রহণ একটি প্রাকৃতিক ক্ষুধাদায়ক হিসাবে কাজ করে।