
প্রাক্তন ক্রিকেটার চেতেশ্বর পুজারার পরিবারে শোক, শ্যালক জিতের আত্মহত্যা
প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার চেতেশ্বর পুজারার (Cheteshwar Pujara) পরিবারে নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া। বুধবার সকালে রাজকোটে নিজের বাড়িতে আত্মঘাতী হন তাঁর শ্যালক জিৎ পাবারি (Jeet Pabari)। সকালে তাঁকে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
মৃত্যুর সময় পুজারার শ্যালকের আত্মহত্যার নেপথ্যের কারণ এখনও সম্পূর্ণ পরিষ্কার না হলেও, প্রাথমিকভাবে পুলিস একটি আইনি জটিলতা ও মানসিক অবসাদের দিকে ইঙ্গিত করছে।
ঘটনার বিবরণ ও পুলিসের তদন্ত
রাজকোটের হরিহর সোসাইটিতে জিৎ পাবারি থাকতেন। স্থানীয় সূত্র ও পুলিস জানিয়েছে, বুধবার সকালে পরিবারের সদস্যরা শব্দ পেয়ে অচৈতন্য অবস্থায় তাঁকে দেখতে পান এবং দ্রুত একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু সেখানে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। স্থানীয় সূত্রের খবর, বুধবার সকালে রাজকোটে নিজের বাড়িতেই গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। প্রতিবেশীরা শব্দ শুনে তড়ঘড়ি জিতকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। তবে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পুলিস কোনও সুইসাইড নোট পায়নি। পরিবারের সদস্যরাও বিধ্বস্ত। সেভাবে তাঁদের সঙ্গেও কথা বলতে পারেননি মালব্যনগর থানার পুলিস আধিকারিকরা। তবে আত্মহত্যার মামলা রুজু করে তদন্ত করা হচ্ছে।
মালব্যনগর থানার পুলিস আধিকারিকরা এই ঘটনায় আত্মহত্যার মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছেন। ঘটনাস্থলটি ‘অ্যাকটিভ ক্রাইম সিন’ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে এবং ফরেন্সিক টিম সমস্ত কিছু খতিয়ে দেখছে। পুলিস কোনও সুইসাইড নোট পায়নি।
এসিপি বি. জে. চৌধুরি (ACP B.J. Chaudhary) জানান, পরিবারের সদস্যরা মানসিকভাবে প্রস্তুত হলে তাঁদের বয়ান রেকর্ড করা হবে। পাশাপাশি প্রতিবেশী, আত্মীয় এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সাক্ষীদের সঙ্গেও কথা বলা হবে—যাতে ঘটনার সঠিক সময়কাল (Timeline) এবং কারণ খুঁজে বের করা যায়।
আত্মহত্যার নেপথ্যে আইনি জটিলতা?
পুলিসের প্রাথমিক তদন্তে আত্মহত্যার কারণ হিসাবে একটি আইনি জটিলতা সামনে এসেছে।
পুলিস সূত্রে খবর-
মামলা: প্রায় বছরখানেক আগে, ২০২৪ সালের ২৬ নভেম্বর, জিৎ পাবারির বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনে তাঁর প্রাক্তন বাগদত্তা একটি মামলা দায়ের করেন।
অভিযোগ: প্রাক্তন বাগদত্তা অভিযোগ করেন যে বাগদান হওয়ার পর জিৎ তাঁকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। পরে তিনি বিনা কারণে বাগদান ভেঙে দেন এবং মারধরের অভিযোগও আনেন। অভিযোগ ওঠে, পাবারি চেতেশ্বর পুজারার নাম নিয়েও ওই মহিলাকে হুমকি দিয়েছিলেন।
মামলার অগ্রগতি: যদিও জিৎ পাবারি এই মামলায় আগাম জামিন নিয়েছিলেন এবং তদন্তে সহায়তা করছিলেন, তবে জানা গিয়েছে যে তিনি বেশ কিছুদিন ধরে এই আইনি জটিলতা এবং সম্মানহানির কারণে অবসাদে ভুগছিলেন।
জিৎ আমদানি–রপ্তানি ব্যবসা (Import-Export Business) চালাতেন। তবে প্রাথমিক তদন্তে পুলিস তাঁর ব্যবসায় লোকসান বা আর্থিক সংকটের কোনও সম্ভাবনা দেখছে না। আত্মহত্যার নিশ্চিত কারণ জানতে ফরেন্সিক রিপোর্ট, পরিবারের বক্তব্য এবং অন্যান্য প্রমাণ সংগ্রহের পরই তদন্ত সম্পূর্ণ হবে।
(Feed Source: zeenews.com)
