#নয়াদিল্লি: ব্যাঙ্কটাই যেন এখন উঠে এসেছে মুঠোফোনে! আসলে আমাদের দেশে বর্তমানে প্রযুক্তির উন্নতির কারণে ব্যাঙ্কিংয়ের বিষয়টা ভীষণই সহজ হয়ে উঠেছে। যার ফলে মুহূর্তের মধ্যে এক অ্যাকাউন্ট থেকে অন্যের অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো সম্ভব। অর্থাৎ টাকা-পয়সা লেনদেনের প্রক্রিয়াটা এখন সহজ থেকে সহজতর হয়ে গিয়েছে। শুধু তা-ই নয়, কেনাকাটার সময় টাকা মেটানোর প্রক্রিয়াও সহজ হয়ে গিয়েছে। আর নগদ টাকাও সঙ্গে নিয়ে ঘুরতে হয় না। তবে সব কিছুর যেমন ভালো দিক থাকে, তেমনই আবার খারাপ দিকও রয়েছে।
আসলে নতুন প্রযুক্তির কারণে ব্যাঙ্কিং সহজ হয়ে গেলেও বাড়ছে বিপদ। কারণ দিন-দিন পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ব্যাঙ্ক জালিয়াতি বা ব্যাঙ্ক প্রতারণার ঘটনা। আর আজকাল তো প্রায় সব সময়ই এই ব্যাঙ্ক জালিয়াতির খবর শোনা যায়। ফলে নিজেদের গ্রাহক এবং তাঁদের টাকা-পয়সা সুরক্ষিত রাখতে তৎপর হচ্ছেন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষও।
সম্প্রতি একটা নতুন ধরনের জালিয়াতি (Bank Fraud)-র বিষয় আবার সামনে আসছে। আর এই নিয়ে গ্রাহকদের সাবধানও করেছে আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক (ICICI Bank)। আজ এই বিষয়টা নিয়েই আলোচনা করে নেওয়া যাক।
আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের সাবধানবাণী (Warning):
হ্যাকাররা প্রতিদিনই কোনও-না-কোনও নতুন ফন্দি নিয়ে হাজির হয়। আর এই বিষয়েই গ্রাহকদের সতর্ক করতে দিন কয়েক আগে একটি ই-মেল বয়ানে আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, আমরা সব সময় আপনাদের এবং আপনাদের প্রিয়জনদের অর্থ সুরক্ষিত রাখতে সদা তৎপর। তাই আমরা একটা নতুন ধরনের জালিয়াতির বিষয়ে আপনাদের সতর্ক করতে চাইছি। আসলে এই ধরনের জালিয়াতি ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ছে।
কিন্তু কীভাবে হচ্ছে এই প্রতারণা? ব্যাঙ্ক কর্তপক্ষের দাবি, এ-ক্ষেত্রে সাধারণত প্রতারকরা গ্রাহকদের হোয়াটসঅ্যাপ অথবা ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে নিচ্ছে। তার পরে সেই অ্যাকাউন্ট থেকে তাঁর ফ্রেন্ডলিস্ট কিংবা কন্ট্যাক্ট লিস্টে থাকা মানুষজনদের কাছে মেসেজ পাঠাচ্ছে ওই হ্যাকাররা। এ-বার সেই মেসেজে মূলত টাকা চাইছে তারা। আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক ওই ই-মেলে আরও জানিয়েছে যে, এমনকী অনেক সময় গ্রাহকের কন্ট্যাক্ট লিস্ট কিংবা ফ্রেন্ড লিস্টে থাকা কেউ কেউ ওই মেসেজ পেয়ে সেটাকে গুরুত্ব দিচ্ছেন।
সেটা যে জালিয়াতি হতে পারে, সেই ধারণাই মনে আসার কোনও সম্ভাবনাই থাকছে না। এ-বার বন্ধু তালিকায় থাকা কারওর কাছ থেকে এমন মেসেজ পেয়ে তাঁকে কল না-করেই কিংবা নিশ্চিত না-হয়েই অনেকে সেই ফাঁদে পা দিয়ে টাকা পাঠিয়েও দিচ্ছেন।
শুধু তা-ই নয়, আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক নিজেদের গ্রাহকদের উদ্দেশে আরও সতর্কবাণী দিয়ে জানিয়েছে, সাবধান থাকতে হবে এবং সব সময় এই সব ক্ষেত্রে নিশ্চিত হয়ে নিতে হবে। আর যদি হোয়াটসঅ্যাপ কিংবা ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়, তা-হলে তা কর্তৃপক্ষের কাছে তা অবিলম্বে জানাতে হবে।
ডেবিট কার্ড সংক্রান্ত নিরাপত্তা:
এ-ছাড়া এটিএম কার্ড বা ডেবিট কার্ড জালিয়াতির বিষয়ে সতর্ক করতেও আর একটি ই-মেল মারফত গ্রাহকদের আরও কিছু নির্দেশ দিয়েছে আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক। দেখে নেওয়া যাক ব্যাঙ্ক কর্তপক্ষের সেই সাবধানবাণীও।
-
- ধরে নিতে হবে যে, এটিএম কার্ড অথবা ডেবিট কার্ড হচ্ছে গ্রাহকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মূল চাবি।
-
- তাই এটা অন্য কাউকে ব্যবহার করতে দেওয়া একেবারেই উচিত নয়। আর এর পিন অন্য কোথাও লিখে রাখা উচিত নয়।
-
- কখনও ফোন বা ই-মেল মারফত যদি কেউ গ্রাহকের টাকা-পয়সা সংক্রান্ত তথ্য চায়, তা-হলে সেটা কখনওই তার সঙ্গে শেয়ার করা উচিত নয়।
-
- এটিএম কিংবা ব্যাঙ্কের ব্রাঞ্চে গিয়ে কোনও অপরিচিত ব্যক্তির থেকে সাহায্য নেওয়া উচিত নয়, বরং তার পরিবর্তে ব্যাঙ্কেরই কোনও কর্মীর থেকে সাহায্য নেওয়া যেতে পারে।
-
- এটিএম থেকে নগদ বা ক্যাশ টাকা তোলার সময় লক্ষ্য রাখতে হবে যে, পিছনে যেন কেউ দাঁড়িয়ে না-থাকেন। এটিএম মেশিনে পিন দেওয়ার সময় নিজের অন্য হাত দিয়ে কি-প্যাড আড়াল করে রাখতে হবে।
-
- আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক কিন্তু কখনও ই-মেল বা ফোন করে গ্রাহকের পিন, পাসওয়ার্ড কিংবা গ্রাহকের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানতে চাইবে না।
-
- অপরিচিত কোনও ই-মেল থেকে কোনও লিঙ্ক এলে তা খুলে দেখার প্রয়োজন নেই। কারণ এই লিঙ্কে এক বার ক্লিক করলেই ভুয়ো ওয়েবসাইটে পৌঁছে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
-
- ব্যাঙ্ক থেকে এসএমএস এবং ই-মেল সার্ভিস নোটিফিকেশনের জন্য গ্রাহকদের রেজিস্টার করাতে হবে। যাতে ব্যাঙ্কের বিভিন্ন কার্যকলাপের সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকতে পারেন গ্রাহক।
-
- যদি কখনও কোনও গ্রাহক নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে অস্বীকৃত কোনও লেনদেন দেখেন, তা-হলে দেরি না-করে তা ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে।
-
- নিজের স্মার্টফোন কিংবা ল্যাপটপে কার্ড সংক্রান্ত কোনও তথ্য রেখে দেওয়া একেবারেই উচিত নয়।
(Source: news18.com)