
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: জুবিন গর্গের (Zubeen Garg) মৃত্যু ঘিরে বাড়ছে ধোঁয়াশা। সম্প্রতি অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা দাবি করেন যে খুন করা হয়েছে গায়ককে। এরই মাঝে জুবিনের ফ্যানেদের জন্য সুখবর। অসমের প্রয়াত সংগীত কিংবদন্তি জুবিন গর্গকে দেওয়া হল মরণোত্তর সম্মান। এই স্বীকৃতি সঙ্গীত ও সংস্কৃতিতে তাঁর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাবের জন্যই প্রদান করা হয়েছে। এই দিন তাঁকে শুধুমাত্র একজন গায়ক হিসেবে নয়, অহমিয়া শিল্পের ধারক-বাহক হিসাবে তুলে ধরা হয়।
কটন বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে, প্রয়াত জুবিন গর্গকে মরণোত্তর ডক্টর অফ লিটারেচার (ডি.লিট) উপাধি প্রদান করা হয়। তাঁর বোন, পাল্মে বরঠাকুর, তাঁর পক্ষে এই সম্মান গ্রহণ করেন এবং এই মুহূর্তটিকে গভীরভাবে আবেগপ্রবণ এবং একই সঙ্গে তিক্ত-মিষ্টি বলে বর্ণনা করেন।
এই ডিগ্রিটি সঙ্গীত, সংস্কৃতি এবং সামাজিক জীবনে তাঁর বিশাল অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ দেওয়া হয়। সমাবর্তন চলাকালীন, অসমের রাজ্যপাল এই ডিগ্রিটি প্রদান করেন। তিনি স্বীকার করেন যে কীভাবে জুবিনের কাজ আঞ্চলিক ও জাতীয় গানের জগতের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করেছে এবং কীভাবে তাঁর উত্তরাধিকার আগামী প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করে চলেছে।
প্রসঙ্গত, অসমের কাছে জুবিন গর্গ শুধু একজন গায়ক ছিলেন না, তিনি ছিলেন অহমিয়া সংস্কৃতির প্রতীক। তাঁর কেরিয়ারে তিনি বহু ভাষায় গান গেয়েছেন, ট্র্যাডিশনাল মিউজিকের সঙ্গে মিশিয়েছেন কনটেম্পোরারি সুরকে এবং অসমের গন্ডি পেরিয়ে পৌঁছে দিয়েছেন বৃহত্তর দর্শকের কাছে। তাঁর গান সকল বয়স,পটভূমি এবং ভৌগোলিক সীমানা পেরিয়ে মানুষের হৃদয়ে সাড়া ফেলেছিল।
অনেকেই তাঁকে শুধু তাঁর কণ্ঠস্বরের জন্য নয়, তাঁর উদারতা ও সবধর্মের সর্বস্তরের মানুষের প্রতি তাঁর প্রতিশ্রুতির জন্য স্মরণ করেন। সমাবর্তনে তাঁর বোন বলেন, কীভাবে তিনি নিজের সমস্যার মধ্যেও জীবদ্দশায় বহু মানুষকে সাহায্য করেছিলেন। তাঁর অনুপস্থিতিতে ডি.লিট প্রাপ্তি আসলে তার শূন্যতা।
প্রসঙ্গত, ২০২৫ সালের ১৯শে সেপ্টেম্বর সিঙ্গাপুরে জুবিন গর্গের মর্মান্তিক মৃত্যুতে স্তব্ধ হয়ে যায় অসমের জনজীবন। নর্থ ইস্ট ইন্ডিয়া ফেস্টিভ্যালের সময় একটি ব্যক্তিগত ইয়ট থেকে সাঁতার কাটার সময় ৫২ বছর বয়সী এই শিল্পী ডুবে যান। যা প্রথমে দুর্ঘটনা বলে মনে হয়েছিল, তা শীঘ্রই ফৌজদারি তদন্তের দিকে মোড় নেয়, অসম সরকার এটিকে খুন বলে দাবি করে। তাঁর ম্যানেজার এবং ইভেন্ট আয়োজক সহ সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং ২০২৫ সালের ১২ই ডিসেম্বরের মধ্যে একটি বিস্তারিত চার্জশিট দাখিল করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সম্প্রতি জুবিন গর্গের শেষ ছবি “রৈ রৈ বিনাল” মুক্তি পায় ৩১শে অক্টোবর। এই মিউজিক্যাল রোমান্টিক ড্রামায় তাঁকে একজন অন্ধ শিল্পী হিসেবে দেখানো হয়েছে। রেকর্ড ব্রেকিং ব্যবসা করেছে এই ছবি। অহমিয়া ছবির ইতিহাসে এটিই সর্বোচ্চ আয়কারী একটি ছবি। এই ছবি দেখতে গিয়ে আবেগে ভাসেন দর্শকরা।
(Feed Source: zeenews.com)
