সঠিক মানসিকতাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, নতুন চাকরিপ্রার্থী কীভাবে তা গড়ে তুলবেন?

সঠিক মানসিকতাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, নতুন চাকরিপ্রার্থী কীভাবে তা গড়ে তুলবেন?

#নয়াদিল্লি: চাকরিপ্রার্থীরা যে সব কোম্পানিতে কাজ করতে চান, সেই সব কোম্পানি সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য এখন হাতের মুঠোয়। কারা সেখানে কাজ করেন, কারা প্রাক্তন কর্মচারী, সবকিছুই জানা। চাকরিপ্রার্থীদের এই চিন্তা-ভাবনা থেকে বোঝা যায়, তাঁরা কীভাবে কোম্পানি সম্পর্কে গবেষণা করেন, চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতির মোকাবিলায় কীভাবে নিজেকে তৈরি করতে চান।

একজন ব্যক্তির মানসিকতাই তাঁর জন্য সুযোগ তৈরি করে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, কারও অসাধারণ দক্ষতা রয়েছে এবং কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে তিনি অভিজ্ঞতাও অর্জন করেছেন। কিন্তু তারপরেও অনেক সময় উপযুক্ত চাকরি মেলে না। চাকরির খোঁজে শুধু দিন কেটে যায়।

চাকরির খোঁজ চলতেই থাকবে কিন্তু এখানে আসল সমস্যাটা হল মানসিকতার। চাকরি খোঁজার সঙ্গে সঙ্গে একটি ধারণা তৈরি করে সেই অনুযায়ী কাজের দিকে মনোনিবেশ করা উচিত। কেউ স্টার্টআপ তৈরিতে ব্যর্থ হতে পারেন কিন্তু তাঁর মানসিকতা তাঁর হয়ে অনেক কথা বলবে। প্রচেষ্টাই তাঁর নেতৃত্বের দক্ষতা এবং দূরদৃষ্টির পরিচয় দেবে। শুধু তাই নয়, সেটাই তাঁকে অনেক দূর নিয়ে যাবে।

স্টার্টআপ বনাম এন্টারপ্রাইজের মানসিকতা

চাকরির ক্ষেত্রে মানসিকতা একটা বড় ফ্যাক্টর। স্টার্টআপ এবং প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায় চাকরির জন্য আবেদনের সময় কীভাবে কাজ করা উচিত, সেই নিয়ে আলোচনা করা হল।

স্টার্টআপ:

নিয়োগের সময় স্টার্টআপগুলিতে ভিন্ন চিন্তাভাবনা কাজ করে। ক্রিয়াকলাপ, প্রযুক্তি, বিপণন, বিক্রয় বা অন্য যে কোনও বিভাগে চাকরিপ্রার্থী কীভাবে ১০ গুণ পার্থক্য আনতে পারে তার উপর ভিত্তি করেই তারা নিয়োগ করে। স্টার্টআপে বিভিন্ন পর্যায়ে নিয়োগ হয়, যেমন, গ্রোথ স্টেজ, বৃদ্ধির পর্যায় এবং হাইপার গ্রোথ।

সবেমাত্র একটা ধারণাকে পুঁজি করে ছোট দল নিয়ে স্টার্টআপগুলি পথ চলা শুরু করেছে। তহবিল সংগ্রহ করছে। ব্যবসায়িক মডেল তৈরি করা হচ্ছে। যা প্রাথমিকভাবে দলে যোগদানের জন্য লোকেদের সন্ধান করার সময় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

এই ধরনের চাকরির জন্য একজন প্রার্থীর মানসিকতা হবে সর্বোচ্চ মান যোগ করা। তাদের ডিগ্রি বা অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে নয়, নিয়োগ হতে পারে যোগ্যতার ভিত্তিতে। এই কাজে উত্তেজনা আছে। বেশ কিছু স্টার্টআপে শুরুর দিকের কর্মচারিরাই উদ্যোক্তা। বিশ্বমানের পণ্যের মালিকানা এবং সরবরাহ করার মানসিকতা হাজার হাজার স্টার্টআপকে সাফল্যের দিকে নিয়ে গেছে।

ভারতে ফ্লিপকার্ট গাইজ, ফ্লিপকার্ট মাফিয়ারা উড়ান, কিউরফিট-এর মতো সংস্থার প্রতিষ্ঠা করেছে। বিদেশে ‘পেপল’-এর মতো বিশ্ববিখ্যাত উদাহরণ রয়েছে। তাদের শুরুর দিকের কর্মচারিরাই লিঙ্কইডিন, পালানটির, ইউটিউবের মতো অনেক ইউনিকর্ন এবং এন্টারপ্রাইজ কোম্পানির প্রতিষ্ঠা করেছে। এই ধরণের কাজে সর্বদা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে, প্রতিনিয়ত শিখতে হবে এবং সর্বদা নিজের সেরাটা দিতে হবে।

এন্টারপ্রাইজ:

এন্টারপ্রাইজগুলিতে নিয়োগের একটি কাঠামোগত পদ্ধতি রয়েছে। নতুন প্রোডাক্ট লাইন তৈরি করা কিংবা বিদ্যমান প্রোডাক্ট লাইনের বিস্তার, এই দুই ক্ষেত্রেই তারা নিয়োগ করে। এক্ষেত্রে ঝুঁকি কম, কারণ বহু পথ পেরিয়ে এসেছে তারা। তবে এখন এন্টারপ্রাইজগুলো যখন স্টার্টআপের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নামে তখন এমন ব্যক্তির সন্ধান করা হয় যে উন্নত মানের পণ্য তৈরি বা বিক্রির মাধ্যমে খেলা ঘুরিয়ে দিতে পারে। এক্ষেত্রে অ্যামাজন, ওয়ালমার্ট, পেপল বা সিসকোর নাম করা যায়। এরা সেরা চাকরিপ্রার্থীকে নিয়োগের জন্য তীব্র আগ্রাসন দেখিয়েছে।

ইন্টারভিউতে ‘করা’-র বদলে ‘করেছি’-র উপর জোর দেওয়া হয়। হাইপারগ্রোথ কোম্পানিগুলিও সেরা ব্যক্তিকে নিয়োগের জন্য মরিয়া, এক্ষেত্রে তাঁদের ব্যাকগ্রাউন্ড দেখে নেওয়াটা ইদানিং নিয়ম হয়ে গিয়েছে। এই ধরনের চাকরিতে দ্রুত শেখার মানসিকতা রাখতে হবে।

পৃথিবী দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে। এই মুহূর্তে টিউলিও, গোজেক, সুউগি এবং পোস্টম্যানের মতো কোম্পানি রয়েছে। তারা কাগজের ডিগ্রির চেয়ে বাস্তবের অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে নিয়োগ করে।

প্রার্থীর মানসিকতা এই ধরনের পদগুলি সুরক্ষিত করার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

এটা বোঝার জন্য ইন্সটাহায়ার-এ একটি প্রযুক্তি তৈরি করা হয়েছে। একজন প্রার্থী তাঁর অভিজ্ঞতা এবং ব্যক্তিত্বের ভিত্তিতে একটি চাকরির পোস্ট দেখেন। এটি একটি প্রার্থীর নির্দিষ্ট মূল বৈশিষ্ট্যগুলি অ্যাক্সেস করার এবং তারা যে কোম্পানির জন্য আবেদন করছে তার ডিএনএ বোঝার উপর ভিত্তি করে তৈরি।

একজন প্রার্থী তাঁর জীবনীপঞ্জীর চেয়ে আরও বেশি কিছু। নিয়োগের ধরনগুলো দেখলেই বোঝা যায়, কীভাবে একজন প্রার্থীর ব্যক্তিত্ব, মানসিকতা এবং বিভিন্ন অ্যাসাইনমেন্টের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি তাদের পরবর্তী কর্মসংস্থানকে প্রভাবিত করে।

Published by:Dolon Chattopadhyay

(Source: news18.com)