#মিয়ামি: সমুদ্রের তলদেশে মারণ পুলের সন্ধান পেলেন বিজ্ঞানীরা। লবণাক্ত ওই ধরণের হ্রদে সমুদ্রের সাধারণ মাত্রার থেকেও বেশি ঘনীভূত অবস্থায় লবণ রয়েছে।
সম্প্রতি মিয়ামি ইউনিভার্সিটির (Miami University) একদল বিজ্ঞানী লোহিত সাগরের (Red Sea) তলদেশে একটি প্রাণঘাতী পুল আবিষ্কার করেছেন।
এই পুলটি ভেসে আসা যে কোনও কিছুকে মুহূর্তের মধ্যেই হত্যা করতে সক্ষম। গবেষণা অনুসারে, আন্ডারওয়াটার ভেহিকেল ব্যবহার করে ভূপৃষ্ঠের ১.৭ কিলোমিটার নিচে গিয়ে বিজ্ঞানীরা ব্রাইন পুলটি (Brine Pool) আবিষ্কার করেছেন।
ওই বিজ্ঞানীদের দল দশ ঘন্টার গবেষণাকর্মে মাত্র পাঁচ মিনিটের জন্য পুলটি অতিক্রম করেছিলেন।
গবেষকরা ব্যাখ্যা করেছেন যে, ব্রাইন পুল হল সমুদ্রতলের একটি অত্যন্ত ঘনীভূত লবণ এবং অন্যান্য রাসায়নিক উপাদানে পূর্ণ অংশ যা ঠিক তার পাশেরই সমুদ্রের জলের চেয়ে তুলনামূলক ভাবে বেশি লবণাক্ত।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এর ঘনীভূত অবস্থা যে কোনও প্রাণীকে মেরে ফেলতে সক্ষম।
লাইভ সায়েন্সের (Live Science) প্রধান গবেষক স্যাম পারকিস (Sam Purkis) জানিয়েছেন যে, ‘পৃথিবীর সবচেয়ে চরম পরিবেশের মধ্যে এই পুলটি অন্যতম’, এবং ‘কোনও প্রাণী যদি এই পুল অতিক্রম করার চেষ্টা করে তবে এর ঘনীভূত অবস্থা মুহূর্তের মধ্যে তাকে হত্যা করে’।
পারকিস আরও জানান, চিংড়ি এবং ঈল মাছ শিকারের জন্য সাগরের এই লবণাক্ত অংশকে ব্যবহার করে। তারা শিকারকে ছলে-কৌশলে নিয়ে আসে এর সীমানায়, এর পর সেই হতভাগ্য প্রাণী একবার পুলে পড়লেই মারা যায়।
গবেষকরা সবচেয়ে আশ্চর্যজনক বিষয় যা দাবি করেছেন তা হল, এই ধরনের পুলের আবিষ্কার তাদের সাহায্য করবে কীভাবে আমাদের গ্রহে প্রথম মহাসাগর তৈরি হয়েছিল সেই বিষয়ে জানতে।
তারা আরও জানিয়েছেন যে, ব্রাইন পুলগুলি প্রচুর সংখ্যক জীবাণুর আবাসস্থল এবং নানান জীবজগতের বৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ।
এই আবিষ্কার অপরিহার্য ভাবে আমাদের জানতে সাহায্য করবে একই রকম প্রতিকূল পরিস্থিতিতে এলিয়েন গ্রহগুলিতে কোনও জীব বেঁচে থাকতে পারে কিনা বা বেঁচে রয়েছে কি না তা জানতে।
বিজ্ঞানী পারকিস জানিয়েছেন যে, ‘যতক্ষণ না আমরা পৃথিবীতে জীবনের শেষ সীমা নির্ণয় করতে না পারছি ততক্ষণ পর্যন্ত এমন কিছু নির্ণয় করা কঠিন হবে যে আমাদের এলিয়েন গ্রহগুলিতেও এমন কোনও জীবনের অস্তিস্ত্ব রয়েছে কি না’।
অন্য দিকে, নিউ ইয়র্ক পোস্টের মতে, বিজ্ঞানীদের দ্বারা আবিষ্কৃত এটিই প্রথম ব্রাইন পুল নয়।
গত ৩০ বছরে ওসেনোগ্রাফাররা লোহিত সাগর, ভূমধ্যসাগর এবং মেক্সিকো উপসাগরে এমন কয়েক ডজন মারণ পুল আবিষ্কার করতে সক্ষম হয়েছেন। তবে এবারে এর থেকে নতুন কোনও তথ্য পাওয়া সম্ভব হয় কি না সেটাই দেখার বিষয়!
(Source: news18.com)