#হাওড়া: ভ্রমণপিপাসুদের কাছে ফেভারিট ডেস্টিনেশনের তালিকা নব নিযুক্ত হাওড়ার এক গ্রাম। গ্রামের সৌন্দর্য উপভোগ করতে দূর-দূরান্ত থেকে আসছেন মানুষ, কয়েক বছর ধরে এক শিল্পী তাঁর সৃজনশীল ভাবনায় একটি আস্ত গ্রাম গড়ে তুলেছেন। এ ঘটনা বোধহয় বাংলায় বিরল। আর এই অসাধ্য সাধন করেছেন বিশিষ্ট শিল্পী রণজিৎ কুমার রাউত। সেই গ্রাম ঘুরে দেখতে হলে আপনাকে পৌঁছে যেতে হবে গ্রামীণ হাওড়ার শ্যামপুর থানার অন্তর্গত ধান্দালিতে।
প্রবাদপ্রতিম বাঙালি সাহিত্যব্যক্তিত্ব পূর্ণেন্দু পত্রীর নামে শিল্পী রনজিৎ কুমার রাউত গড়ে তুলেছেন আস্ত একটি শিল্পগ্রাম, যার নাম পূর্ণেন্দু স্মৃতি শিল্পগ্রাম। গ্রামের প্রবেশপথ থেকে বাগানের ডাস্টবিন, বা কংক্রিটের দেওয়াল থেকে গাছের তল—সর্বত্রই অনন্য শিল্প ভাবনার ছোঁয়া। প্রায় সাড়ে পাঁচ বিঘা জমির উপর গড়ে ওঠা এই শিল্পগ্রামে রয়েছে নয়নাভিরাম আর্ট ও হস্তশিল্পের গ্যালারি। যেখানে রণজিৎ বাবু ও বহু স্বনামধন্য শিল্পীর তৈরি প্রায় ৩০০টিরও বেশি শৈল্পিক কর্মকান্ড স্থান পেয়েছে।
শিল্পগ্রামে রয়েছে পুকুর, রাজহাঁস, ধানের গোলা, কুয়ো, তাঁত বোনার মেশিন, ঢেঁকি, বিভিন্ন ফল ও ফুলের গাছ, প্রজাপতির জন্য বিশেষ বাগান, অজস্র মনীষীর মূর্তি-সহ শৈল্পিক নিদর্শন। পাশাপাশি গ্রামে গাছের ডাল কিংবা দেওয়াল বিভিন্ন প্রান্তে ঝোলানো রয়েছে ছোট-বড় অসংখ্য ঘন্টা, যা গ্রামের সৌন্দর্য কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। গ্রামের মধ্যেই রয়েছে শিশুদের স্কুল। শিল্পীর স্বপ্ন দিয়ে তিল তিল করে গড়া শিল্পগ্রামকে বাংলার পর্যটন মানচিত্রে তুলে ধরতে উদ্যোগী জেলা প্রশাসন।
ঠিকানা- হাওড়া, শ্যামপুর ধান্দালি গ্রাম
গুগুল লোকেশন:
ধান্দালি শিল্প গ্রাম।
শিল্পগ্রামে জোরকদমে চলছে হোম-স্টে তৈরির কাজ। হাতে কয়েকঘন্টা সময় থাকলে খুব স্বল্প প্রবেশমূল্যের বিনিময়ে ঘুরে দেখা যেতে পারে এই অনন্য শিল্পগ্রাম। শীতে পিকনিকেরও ব্যবস্থা রয়েছে। কেউ চাইলে এখানে রাত্রিবাসও করতে পারেন। অদূরেই রয়েছে গড়চুমুক ডিয়ার পার্ক, বেলাড়ি রামকৃষ্ণ আশ্রমের মত একাধিক জায়গা। এই শিল্পগ্রামকে ঘিরে ইকো-ট্যুরিজমের সম্ভবনা যে প্রবল তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা। যাঁরা শিল্পকে ভালোবাসেন, কিংবা যাঁরা ব্যস্ত জীবনের ফাঁকে কিছুটা সময় শান্ত, সবুজ মুক্ত প্রকৃতির বুকে সময় কাটাতে চান তাঁদের জন্য শ্যামপুরের এই শিল্পগ্রাম যে অন্যতম ফেভারিট ডেস্টিনেশন তার আর বলার অপেক্ষা রাখেনা। সামনেই স্বাধীনতা দিবসকে কেন্দ্র করে লম্বা ছুটি, চাইলে ঘুরে আসতেই পারেন।
রাকেশ মাইতি