জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ভারতে হিন্দু পণ্ডিতদের একটি অংশ ‘হিন্দু জাতি হিসাবে ভারতের সংবিধান’-এর একটি খসড়া তৈরি করছেন। বিভিন্ন সূত্র মারফত জানা গিয়েছে যে এই নথিটি মাঘ মাসে মাঘ মেলা ২০২৩ এর সময় আয়োজিত হতে চলা ‘ধর্ম সংসদ’-এ উপস্থাপন করার কথা রয়েছে। এই বছরের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হওয়া মাঘ মেলায়, ভারতকে নিজস্ব “সংবিধান” সহ একটি ‘হিন্দু রাষ্ট্র’ করার জন্য ‘ধর্ম সংসদ’-এ একটি প্রস্তাব পাস করা হয়। এখন, শাম্ভবী পীঠধীশ্বরের পৃষ্ঠপোষকতায় ৩০ জনের একটি দল এই ‘সংবিধানের’ একটি খসড়া তৈরি করছে। এই খবর জানিয়েছেন বারাণসী-ভিত্তিক শঙ্করাচার্য পরিষদের সভাপতি স্বামী আনন্দ স্বরূপ।
স্বরূপ আরও বলেন, ‘সংবিধানটি ৭৫০ পাতার হবে এবং এর বিন্যাসটি এখন ব্যাপকভাবে আলোচনা করা হবে। ধর্মীয় পণ্ডিত এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা এবং বিতর্ক অনুষ্ঠিত হবে। এর ভিত্তিতে, প্রয়াগরাজে অনুষ্ঠিত হতে চলা মাঘ মেলা-২০২৩-এ অর্ধেক সংবিধান (প্রায় ৩০০ পাতা) প্রকাশ করা হবে। এর জন্য একটি ‘ধর্ম সংসদ’ অনুষ্ঠিত হবে বলেও জানিয়েছেনস্বরূপ।
তিনি আরও বলেন, শিক্ষা, প্রতিরক্ষা, আইন-শৃঙ্খলা, ভোটের ব্যবস্থাসহ অন্যান্য বিষয় নিয়ে এখনও পর্যন্ত ৩২টি পৃষ্ঠা তৈরি করা হয়েছে। স্বরূপ বলেন, ‘এই হিন্দু রাষ্ট্রের সংবিধান অনুযায়ী, দিল্লির পরিবর্তে বারাণসীই হবে দেশের রাজধানী। এছাড়াও, কাশীতে (বারাণসী) একটি ‘ধর্ম সংসদ’ গড়ার প্রস্তাবও রয়েছে’ এতে।
খসড়া প্রস্তুতকারী দলটিতে রয়েছেন স্বরূপ; হিন্দু রাষ্ট্র নির্মাণ সমিতির প্রধান কমলেশ্বর উপাধ্যায়; সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী বিএন রেড্ডি; প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ আনন্দ বর্ধন; সনাতন ধর্মের পণ্ডিত চন্দ্রমণি মিশ্র এবং বিশ্ব হিন্দু ফেডারেশনের সভাপতি অজয় সিং সহ আরও অনেকে।
জানা গিয়েছে এই নথির কভার পাতায় ‘অখন্ড ভারত’-এর একটি মানচিত্র রয়েছে৷ স্বরূপ বলেন, ‘বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, শ্রীলঙ্কা এবং মায়ানমারের মতো ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন দেশগুলোকে একদিন একীভূত করা হবে বলে দেখানোর চেষ্টা করা হয়েছে।’
নথির বিশদ বিবরণে, স্বরূপ বলেছেন যে প্রতিটি বর্ণের লোকদের দেশে বসবাসের সুবিধা এবং নিরাপত্তা থাকবে এবং অন্যান্য ধর্মীয় বিশ্বাসের মানুষকে ভোট দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে না। ‘হিন্দু রাষ্ট্রের সংবিধানের খসড়া অনুসারে, মুসলিম এবং খ্রিস্টানরা ভোটাধিকার বাদে সাধারণ নাগরিকের সমস্ত অধিকার ভোগ করবে। তাদের ব্যবসা করতে, চাকরি পেতে, শিক্ষা এবং যে কোনও সাধারণ নাগরিকের দ্বারা উপভোগ করা সমস্ত সুযোগ-সুবিধাগুলি তাদেরকে দেওয়া হবে, তবে তাদের ভোটাধিকার ব্যবহার করার অনুমতি দেওয়া হবে না।’
স্বরূপের মতে, ১৬ বছর পূর্ণ করার পরে নাগরিকরা ভোটদানের অধিকার পাবেন। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার বয়স ২৫ বছর নির্ধারণ করা হয়েছে। ‘ধর্ম সংসদের’ জন্য মোট ৫৪৩ জন সদস্য নির্বাচিত হবেন, স্বরূপ বলেন, নতুন ব্যবস্থা ব্রিটিশ আমলের নিয়ম-কানুন বাতিল করবে এবং সবকিছু ‘বর্ণ’ পদ্ধতির ভিত্তিতে পরিচালিত হবে।
তিনি বলেন, ত্রেতা ও দ্বাপর যুগের উপর ভিত্তি করে শাস্তির বিচার ব্যবস্থা হবে। তিনি আরও বলেন, ‘গুরুকুল ব্যবস্থাকে পুনরুজ্জীবিত করা হবে এবং আয়ুর্বেদ, গণিত, নক্ষত্র, ভু-গর্ভ, জ্যোতিষশাস্ত্র ইত্যাদি শিক্ষা দেওয়া হবে।’ এছাড়াও প্রত্যেক নাগরিককে বাধ্যতামূলক সামরিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে এবং কৃষিকে সম্পূর্ণ করমুক্ত করা হবে।
(Source: zeenews.com)