‘দুর্নীতিতে জড়িতদের থেকে টাকা উদ্ধার করতে হবে’, প্রশাসনকে কড়া বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর

‘দুর্নীতিতে জড়িতদের থেকে টাকা উদ্ধার করতে হবে’, প্রশাসনকে কড়া বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর

সুমন ঘরাই, হাওড়া : পঞ্চায়েত ভোটের (Panchayat Election) আগে প্রশাসনকে কড়া বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর। ‘পঞ্চায়েতে দুর্নীতিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে হবে। গ্রামোন্নয়ন প্রকল্পে টাকার গরমিল ধরা পড়লেই এফআইআর করতে হবে’, জেলাশাসকদের এমনই নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (CM Mamata Banerjee)। কেন্দ্রের পর্যবেক্ষক দলের অ্যাডভাইসরির পরই মুখ্যমন্ত্রীর জেলাশাসকদের নির্দেশ ‘দুর্নীতিতে জড়িতদের থেকে টাকা উদ্ধার করতে হবে’।

রাজ্যের একাধিক জেলায় ঘুরে ঘুরে কেন্দ্রের ১৫ সদস্যের পর্যবেক্ষক দল একটি রিপোর্ট তৈরি করেছে। যে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটির রিপোর্টে আশঙ্কা, রাজ্যে একাধিক গ্রামনোন্নয়ন প্রকল্পের টাকায় দুর্নীতি হয়েছে। ১০০ দিনের কাজ, বাংলা আবাস যোজনায় সহ গ্রামে গ্রামে সুবিধা পৌঁছে দেওয়ার একাধিক প্রকল্পে গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে দুর্নীতি হয়েছে বলেই ইঙ্গিত ছিল কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক তথা তথ্যসন্ধানী দলের রিপোর্টে। পাশাপাশি সেই রিপোর্টে সরাসরি হুঁশিয়ারি ছিল, কেন্দ্রের তরফে রাজ্যের জন্য যে টাকা বরাদ্দ হয় তা ঠিকমতো কাজে লাগানো না হলে বিভিন্ন গ্রামনোন্নয়ন প্রকল্পের টাকা আর দেওয়া হবে না কেন্দ্রের তরফে।

এমনিতেই রাজ্যের তরফে অভিযোগ, প্রায় ৭ মাস ধরে কেন্দ্রের তরফে একাধিক প্রকল্পের টাকা পাচ্ছে না কেন্দ্র। এমন অবস্থায় কিছুদিন আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাক্ষাতের পর রাজ্যের বরাদ্দ নিয়ে দাবিও পেশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু তার কিছুটা পরেই রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ কতটা বাস্তবায়িত হয়েছে, তা বিস্তারিতভাবে ঘুরে দেখে কেন্দ্রের পর্যবেক্ষক দল।

কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকদের যে রিপোর্ট পৌঁছনোর পরই তা পৌঁছয় মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। সবদিক খতিয়ে দেখে দুর্নীতির গন্ধ স্পষ্ট হতেই জেলাশাসকদের মাধ্যমে প্রশাসনকে কড়া পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। গ্রামোন্নয়ন প্রকল্পের টাকায় গরমিল ধরা পড়লেই পঞ্চায়েত, গ্রাম পঞ্চায়েত নির্বিশেষে এফআইআরের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সরাসরি রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানের তরফে। পাশাপাশি দুর্নীতিতে জড়িত কেউ প্রমাণিত হলে তাঁদের থেকে টাকা উদ্ধার করার কড়া নির্দেশিকাও দেওয়া হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর তরফে। যদিও এই পদক্ষেপকে ‘বিভ্রান্ত করার চেষ্টা’ বলে কটাক্ষ করেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ।

সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। তার আগে কেন্দ্রের পর্যবেক্ষক দলের দুর্নীতি ইঙ্গিতের পরই তড়িঘড়ি কড়া ব্যবস্থার পথে হাঁটার পথ নিল রাজ্য সরকার। এই পদক্ষেপের সুফল আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে শাসক দলের ভোটবাক্সে ঠিক কতটা পরে, সেটাই দেখার।