বৈশ্বিক উষ্ণায়ন: পৃথিবীর তাপমাত্রা ক্রমাগত বাড়ছে, বিশ্ব উষ্ণায়নের কারণে জীবন বিপন্ন

বৈশ্বিক উষ্ণায়ন: পৃথিবীর তাপমাত্রা ক্রমাগত বাড়ছে, বিশ্ব উষ্ণায়নের কারণে জীবন বিপন্ন
ছবি সূত্র: ইন্ডিয়া টিভি
বৈশ্বিক উষ্ণতা

হাইলাইট

  • 2050 সালের মধ্যে পৃথিবীর তাপমাত্রা দুই ডিগ্রি বাড়তে পারে
  • যদি সতর্ক না করা হয়, তাহলে প্রতি বছর তিন মাস ধরে পৃথিবীতে আগুন বর্ষণ করবে।
  • জ্বলন্ত তাপ ত্বকের ক্যান্সার এবং তাপপ্রবাহের ঝুঁকি বাড়াবে

বৈশ্বিক উষ্ণতা: গ্লোবাল ওয়ার্মিং নিয়ে বিশ্ব সতর্ক থাকার দাবি করলেও এখন পর্যন্ত তা ঠেকাতে গৃহীত পদক্ষেপ অপ্রতুল প্রমাণিত হয়েছে। এ কারণেই পৃথিবীর তাপমাত্রা ক্রমাগত বাড়ছে। এ কারণে প্রতিবছরই প্রচণ্ড গরমে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। বিজ্ঞানীরা সতর্ক করেছেন যে, ২০৫০ সাল নাগাদ সময়মতো দৃঢ় পদক্ষেপ না নিলে পৃথিবীর তাপমাত্রা দুই ডিগ্রির বেশি বাড়তে পারে। এমতাবস্থায় বলা যায় পৃথিবীতে আগুনের বর্ষণ হবে। মানুষ গরম সহ্য করবে না। এসির মতো যন্ত্রপাতিও কাজ করা বন্ধ করে দেবে। মানুষের ত্বক জ্বলতে শুরু করবে। তারা ডিহাইড্রেশন এবং ত্বকের ক্যান্সার সহ অন্যান্য গুরুতর রোগের ঝুঁকি বাড়াবে।

বিজ্ঞানীদের মতে, গত দুই দশকে পৃথিবীর তাপমাত্রা ইতিমধ্যে এক ডিগ্রি বেড়েছে। এতে জনগণও ভোগান্তিতে পড়েছে। প্রতি বছরই প্রচণ্ড তাপ ও ​​আর্দ্রতার সম্মুখীন হচ্ছেন মানুষ। এর পরও মানুষ সজাগ ও সচেতন হতে পারছে না। বৈশ্বিক উষ্ণতা রোধে বিশ্বের সব দেশকে একসঙ্গে দৃঢ় পদক্ষেপ নিতে হবে। এর পাশাপাশি বিশ্বের সকল নাগরিককেও এ দিকে তাদের দায়িত্ব পালন করতে হবে। ছোট বা বড় দায়িত্ব সবাইকে পালন করতে হয়। বৃক্ষরোপণের এলাকা বাড়াতে হবে। প্রত্যেক মানুষকে শপথ নিতে হবে যে তিনি প্রতি বছর অবশ্যই কিছু চারা রোপণ করবেন এবং পরিবেশ পরিষ্কার রাখবেন। যাতে পৃথিবীর তাপমাত্রা কমানো যায়। জলবায়ু পরিবর্তন বন্ধ করা না হলে এর পরিণতি হবে ভয়াবহ।

এই সমস্যা হতে পারে

বিশ্বের 230 টিরও বেশি মেডিকেল জার্নালের প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে যে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে মানুষ বর্তমান সময়ে অনেক অপ্রত্যাশিত এবং অপ্রত্যাশিত মারাত্মক রোগের শিকার হচ্ছে। সারা বিশ্বে তাপজনিত মৃত্যুর হার বাড়ছে। প্রচণ্ড গরমে কিডনির কার্যকারিতাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ব্যর্থতার কারণেও মানুষ মারা যাচ্ছে। গরমের কারণে পানিশূন্যতা থেকে শুরু করে হার্ট ও ফুসফুসের রোগও ঘটছে। বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ফলে বিভিন্ন নতুন ভাইরাল সংক্রমণেরও খবর পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সন্তান জন্মদানে সমস্যা, বিভিন্ন ধরনের অ্যালার্জি ও মানসিক রোগও হয়ে থাকে। এ কারণে অনেক সময় চিকিৎসকরাও অসুস্থদের বাতাস ও পানি পরিবর্তন করে, অর্থাৎ পরিচ্ছন্ন পরিবেশে ঘুরে আসার পরামর্শ দেন।

ভারতে বৈশ্বিক উষ্ণতার আরও প্রভাব
বিজ্ঞানীদের মতে, ভারতে বৈশ্বিক উষ্ণতার প্রভাব খুব বেশি। উচ্চ বায়ু দূষণের কারণে এ দেশে মৃত্যুও বিশ্বে সবচেয়ে বেশি। শ্বাসতন্ত্র, ফুসফুস ও হৃদযন্ত্রের রোগ ক্রমাগত বাড়ছে। মানুষের মধ্যে ত্বকের ক্যান্সারের ঘটনাও বাড়ছে। দূষিত পানির কারণে সৃষ্ট রোগের গ্রাফও বাড়ছে।

2050 সালের মধ্যে পৃথিবীর তাপমাত্রা দুই ডিগ্রি বাড়তে পারে
কারেন্ট সায়েন্স জার্নালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০৫০ সাল নাগাদ বিশ্বে পৃথিবীর তাপমাত্রা প্রায় দুই ডিগ্রি বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। যদি এটি ঘটে তবে এর পরিণতি খুব মারাত্মক হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে বিশ্বের ৫০ শতাংশের বেশি মানুষ তাপপ্রবাহের শিকার হতে পারে। অর্থাৎ প্রতি বছর তাদের একশ দিনের বেশি প্রচণ্ড ও অসহনীয় গরমের প্রকোপ সইতে হবে। এমন পরিস্থিতিতে বেশিরভাগ মানুষের মৃত্যুও হতে পারে।

কোথাও ভয়ানক বন্যা হবে, কোথাও বিপজ্জনক খরা হবে
বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণে ভয়াবহ বন্যায় মানুষের জীবন ধ্বংস হয়ে যাবে এবং অনেক দেশ ভয়াবহ খরার কবলে পড়বে বলে সতর্ক করেছেন বিজ্ঞানীরা। এতে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা সহজ হবে। শত কোটি মানুষ এক স্থান থেকে অন্য স্থানে পাড়ি জমাতে বাধ্য হবে। এভাবে তাদের জীবন হুমকির মুখে পড়বে। সংক্রামক রোগ দ্রুত মানুষকে ধরবে। পৃথিবীতে খাদ্য ও পানির তীব্র ঘাটতি দেখা দেবে।

(Source: indiatv.in)