ঘুমোনোর সময় নাক ডাকেন? সাবধান! শরীরে বাসা বেঁধে থাকতে পারে ভয়ঙ্কর এই মারণ রোগ!

ঘুমোনোর সময় নাক ডাকেন? সাবধান! শরীরে বাসা বেঁধে থাকতে পারে ভয়ঙ্কর এই মারণ রোগ!

নাসিকা গর্জন (Snoring) বিষয়টা শুনতে হয় তো ততটাও গুরুতর নয়। কিন্তু আসল বিষয় হল যে, এটা কতটা গুরুতর, সেটা অনেকেই বুঝে উঠতে পারেন না। তবে এই নাসিকা গর্জনের মধ্যেই বাসা বেঁধে লুকিয়ে থাকতে পারে মারণ রোগ এমনকী ক্যানসারও (Cancer)।

আসলে কেউ নাক ডাকলে বড়জোর তাঁর পাশে ঘুমিয়ে থাকা মানুষটির সমস্যা হতে পারে। আপাতদৃষ্টিতে মনে হতে পারে যে, অন্যের ঘুমে ব্যাঘাত ছাড়া তেমন কোনও অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। এমনকী যিনি নাক ডাকছেন, তাঁর তো কোনও সমস্যা হবেই না। ব্যাপারটা তেমন নয়। সাম্প্রতিক একটি গবেষণার রিপোর্ট বলছে যে, যাঁরা নাক ডাকেন, তাঁদেরই ক্যানসারের ঝুঁকি সবথেকে বেশি। ফলে বোঝাই যাচ্ছে, এই মুহূর্তে নাসিকা গর্জনের সমস্যার সমাধান সন্ধান করতে হবে।

প্রথমেই জেনে নিতে হবে, কেন একটা মানুষ নাক ডাকেন। আসলে যখন কেউ ঘুমোন, তখন শ্বাসনালীতে বাধার উৎপত্তি হতে পারে। আর যার জেরে নাক ডাকার মতো সমস্যা তৈরি হয়। এর ফলে সেই মানুষটা ঘুমের সময় সঠিক ভাবে শ্বাসপ্রশ্বাস গ্রহণ করতে পারে না। এটা এক ধরনের ঘুম সংক্রান্ত রোগ। যাকে অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া বা ওএসএ (OSA) বলা হয়। এ-নিয়ে গবেষণা চালিয়েছেন এক দল সুইডিশ বিশেষজ্ঞ। তাঁদের দাবি, আসলে রাতে ঘুমোনোর সময় যাঁরা নাক ডাকেন, তাঁদের দেহে অক্সিজেনের ঘাটতি থাকে।

গবেষণার বিষয়ে:

সুইডেনের প্রায় ৬২৮১১ জন রোগীর উপর গবেষণা চালিয়েছেন ওই গবেষকরা। পাঁচ বছর আগেই এই সমস্যার চিকিৎসা করতে শুরু করেছিলেন তাঁরা। এই গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের দেহের আকার-আকৃতি, স্বাস্থ্যজনিত অন্যান্য সমস্যা, আর্থ-সামাজিক অবস্থান – এই সব কিছুকেই নজরে রাখা হয়। গবেষকরা এই রোগীদের দুটো দলে ভাগ করে নেয়। একটা বিভাগে ছিলেন ২০৯৩ জন রোগী, যাঁদের ঘুমজনিত সমস্যা ছিল। আর এঁদের দেহে ক্যানসারের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গিয়েছে। আর বাকিদের ঘুমজনিত সমস্যা থাকলেও ক্যানসারে আক্রান্ত হননি তাঁরা। এই গবেষণাটি চালিয়ে বিশেষজ্ঞরা আরও দেখেছেন যে, যাঁরা তীব্র ভাবে নিদ্রাজনিত সমস্যায় ভুগছেন, তাঁদের শিরায় রক্ত জমাট বাঁধার ঝুঁকি সবথেকে বেশি। যেটা প্রাণঘাতী পর্যন্ত হতে পারে।

ওএসএ কি আদৌ ক্যানসারের জন্য দায়ী?

সুইডেনের উপসালা বিশ্ববিদ্যালয় (Uppsala University)-এর সিনিয়র কনসালট্যান্ট এবং গবেষক ডা. অ্যান্ড্রিয়াস পাম (Dr. Andreas Palm) বলেন, “গবেষণায় আমরা দেখেছি যে, ওএসএ-র কারণে অক্সিজেনের ঘাটতি কিন্তু স্বতন্ত্র ভাবে ক্যানসারের জন্য দায়ী। এর অর্থ হল, দু’টো বিষয়ের মধ্যে যোগসূত্র রয়েছে। কিন্তু ওএসএ-র দরুন ক্যানসার হয়, এটা নয়।” ওই গবেষক দলটি আরও জেনেছে যে, যে-সব মানুষের দেহের ওজন অতিরিক্ত অথবা যাঁরা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত কিংবা ধূমপান ও মদ্যপানে আসক্ত, তাঁদেরই ঝুঁকি সবথেকে বেশি। এই গবেষণা থেকে এ-ও জানা গিয়েছে যে, যাঁদের দেহে তীব্র ওএসএ-র সমস্যা রয়েছে, তাঁদের সাধারণত ক্যানসার থাকে।

(Source: news18.com)