জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: এবার আশার আলো কি দেখা যাচ্ছে? শেষ হতে চলেছে কি করোনার ভয়াবহ সংক্রমণের পালা? অন্তত তেমনই ভাবছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তারা খেয়াল করে দেখেছে, সাম্প্রতিক বিশ্বে করোনার নতুন সংক্রমণের সংখ্যা নাটকীয়ভাবে কমেছে। আর এরই প্রেক্ষাপটে বুধবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বিশ্বকে এই অতিমারী শেষ করার সুযোগটি কাজে লাগাতে আহ্বান জানিয়েছে। ২০১৯ সালের শেষ দিকে চিনে প্রথম করোনা শনাক্ত হয়। পরে তা মহামারী ক্রমে অতিমারীর রূপ ধারণ করে। ছড়িয়ে পড়ে সারা বিশ্বে। বিশ্বে এখনও পর্যন্ত প্রায় ৬১ কোটি মানুষ করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। আর মারা গিয়েছেন প্রায় ৬৪ লাখ মানুষ। ২০২০ সালে করোনা ভয়ংকর ভাবে ছড়িয়ে পড়ে। ২০২১ থেকে তার প্রকোপ কখনও কমে, কখনও বাড়ে। অবশেষে ২০২২ সালের মার্চের পর থেকে করোনার প্রাণঘাতী শক্তি যেন একটু একটু করে কমতে দেখা যায়।
এর মধ্যে গত সপ্তাহে বিশ্বে করোনায় সব চেয়ে কম সংক্রমণ ঘটেছে বলে জানিয়েছেন ডব্লিউএইচও’র প্রধান টেডরস অধানম ঘেব্রেয়সুস। তবে ডব্লিউএইচও প্রধান সব চেয়ে আশার কথা শুনিয়েছেন বুধবার। এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেছেন– অতিমারী শেষ করার জন্য আমরা কখনোই খুব ভালো অবস্থানে ছিলাম না। এখনও হয়তো নেই। তবে এবার অন্তত করোনার শেষ দেখা যাচ্ছে। এই পরিস্থিতির সুযোগ কাজে লাগাতে বিশ্বের কিছু পদক্ষেপ করা জরুরি। তিনি আরও বলেন, ‘যদি আমরা এখনও এর সুযোগ না নিই, তাহলে আমাদের করোনার আরও ভ্যারিয়েন্ট, আরও সংক্রমণ, আরও মৃত্যু দেখতে প্রস্তুত থাকতে হবে। কেননা তখন আগামী দিনে আসবে আরও বাধাবিঘ্ন, থাকবে আরও অনিশ্চয়তা, মুখোমুখি হব আরও নতুন নতুন ঝুঁকির।’ তবে রাষ্ট্রসংঘের স্বাস্থ্যবিষয়ক সংস্থা সতর্ক করে বলেছে, করোনার সংক্রমণের সংখ্যা কমার বিষয়টি নিয়ে বিভ্রান্তি আছে। কারণ, অনেক দেশ তো পরীক্ষা করাই কমিয়ে দিয়েছে।
‘হু’র করোনাসংক্রান্ত কারিগরি বিষয়ের প্রধান তথা মার্কিন এপিডেমিয়োলজিস্ট মারিয়া ভন কেরখোভ বলেন, তাঁরা জানেন, সংস্থাটির কাছে করোনার সংক্রমণের যে তথ্য আসছে, তা প্রকৃত নয়। তাঁরা মনে করেন, সংক্রমণের প্রকৃত সংখ্যা অনেক বেশি। করোনার সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর সব সদস্যকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যে বিনিয়োগ করার জন্য দেশগুলির প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ‘হু’। সংস্থাটি একই সঙ্গে করোনার পরীক্ষা ও জিনোম সিকোয়েন্সিংও অব্যাহত রাখতে বলেছে। ‘হু’ প্রধান বলেছেন, আমরা একত্রে এই অতিমারী শেষ করতে পারি। কিন্তু তা তখনই সম্ভব হবে, যদি সব দেশ, টিকা উৎপাদনকারী সব সংস্থা, বিশ্বের সমস্ত জনগোষ্ঠী ও সম্প্রদায় এবং ব্যক্তিগত ভাবে সকলে এগিয়ে আসে!