চুল খোলা রাখায় গুলি করে হত্যা মহিলাকে, বিদ্রোহের আগুনে ইরান

চুল খোলা রাখায় গুলি করে হত্যা মহিলাকে, বিদ্রোহের আগুনে ইরান

হিজাব বিদ্রোহের জেরে নতুন করে হিংসার আগুনে জ্বলছে ইরান। নীতি পুলিশের বিরুদ্ধে সেদেশে গর্জে উঠেছেন বহু মহিলা। চলছে লড়াই। চলছে আন্দোলন। ধর্মের নামে মহিলাদের ওপর জুলুম চালানোর প্রতিবাদে গর্জে উঠেছেন সেখানের মহিলারা। হিজাব পুড়িয়ে চুল কেটে সেখানে প্রতিবাদে মুখর হয়েছেন তাঁরা। সদ্য ইরানের প্রেসিডেন্ট এক মার্কিন মহিলা সাংবদিককে হিজাব পরে ইন্টারভিউ না নেওয়ার জন্য ইন্টারভিউও দেননি। তবে তারপর সদ্য এক মহিলা মুক্তকেশী হয়ে ভিডিয়ো পোস্ট করায় তাঁকে গুলি করে হত্যা করা হল।

এই খবর হাদিস নাজাফিকের। ২০ বছর বয়সী ওই তরুণীকে সদ্য গুলি করে হত্যা করা হয়েছে ইরানে। তাঁর অপরাধ বলতে তিনি মাথায় কোনও কাপড় না দিয়ে আন্দোলনে অংশ নেন। হিজাব বিরোধী আন্দোলনে যোগ দেন হাদিস নাজাফিক। ইসলামিক গার্জের হাতে নৃশংসভাবে খুন হতে হয় তাঁকে। প্রথমে তাঁকে মারধর করা হয়। তারপর তাঁর সারা দেহে ৬ বার গুলি চালিয়ে হত্যা করা হয়। তাঁর মুখে , বুকে , ঘাড়ে গুলি করা হয়েছে। সম্প্রতি তাঁর একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়। সেখানে তাঁকে দেখা যায়, খোলা চুলে তিনি খোঁপা বাঁধতে বাঁধতে এগিয়ে যাচ্ছেন। ইরানে হিজাব বিরোধী আন্দোলনের তিনি মুখ হয়ে ওঠেন। মনে করা হচ্ছে, তাঁর হত্যা মৌলবাদী ও ইসলামিক গার্ডের তরফে আন্দোলনকারীদের প্রতি বার্তা। এই হিজাব বিতর্ক ঘিরে সরকারি পুলিশ ও বাহিনীর হাতে অন্তত ৭৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁরা প্রত্যেকেই আন্দোলনকারী। গ্রেফতার করা হয়েছে ১ হাজার ২০০ জনকে।

তবে নাজাফিকের মৃত্যুর পর ইরানে কোনও মতেই থামছে না বিক্ষোভ। বরং তা আরও বেড়েছে। স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে গর্জে উঠছে মানুষ। ‘বেলা চাও’ গানের মধ্য দিয়ে প্রতিবাদ জানানো হচ্ছে ইরানের রাস্তায়। প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন আরব দুনিয়ার অনেকেই। প্রতিবাদের ভিডিয়ো নেট মাধ্যমে ক্রমাগত ভাইরাল হয়েছে। বেকায়দায় পড়লেও কিন্তু অবস্থান বদলে নারাজ ইরানের সরকার। তেহরানের দাবি, বিক্ষোভের এই গোটা পর্যায়ই হল আসলে আমেরিকার ষড়যন্ত্র। এই আন্দোলনকে মদত দিচ্ছে ‘কোমলা’ নামের এক বাম সংগঠন, ইরানের দাবি সেই সংগঠনের সঙ্গে জড়িত রয়েছে জঙ্গিরাও। প্রসঙ্গত, উল্লেখ্য, মহিলাদের জন্য কঠোর পোশাক বিধি রয়েছে ইরানে। সেই আইন অনুসারে কোনও বালিকার বয়স ৭ বছরের উপর হলে তাকে হিজাব পরতেই হবে। উল্লেখ্য, নীতি পুলিশের অত্যাচারে ইরানে মাহাসা আমিনের মৃত্যু ঘিরে তোলপাড় হয়। তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশি ভ্যানে তোলার সময় বেধড়ক মারধর করা হয়। যদিও পুলিশ তা অস্বীকার করছে। পরে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।