সপ্তমীতে মাছ-বাহার! ইলিশ, চিংড়ি আর রকমারি মাছের নানা পদে সেজে উঠুক পাত!

সপ্তমীতে মাছ-বাহার! ইলিশ, চিংড়ি আর রকমারি মাছের নানা পদে সেজে উঠুক পাত!

#কলকাতা: রাত পোহালেই ষষ্ঠী শেষ। সপ্তমী মানেই কলা বউ স্নান, নবপত্রিকা স্থাপন, অন্যদিকে অফিস-স্কুল-কলেজের ব্যস্ত রুটিনের বাইরে পুজোর চারটে দিন যেন মন খুলে বাঁচার রসদ জোগায়! চারপাশে শুধুই বিরাজ করে নির্ভেজাল উৎসব উপভোগের মেজাজ! ফলে জোরকদমে প্যান্ডেল হপিং থেকে খানাপিনা আর পুজোর আড্ডা চলতে থাকে।

আর ষষ্ঠীতে অনেকেই যেহেতু নিরামিষ খান, তাই সপ্তমীর দিনটায় মাছ হলে কেমন হয়! বিশেষ করে যদি পাতে থাকে ইলিশের নানা পদ, তা-হলে তো পুজো জমে ক্ষীর! পুজোর ক’টা দিন বাড়িতে রান্নাবান্নার পাট রাখতে না-চাইলে বাইরে কোনও খাঁটি বাঙালি রেস্তোরাঁয় গিয়ে কিংবা বাড়িতে বসেই ইলিশ মাছের নানা পদ অর্ডার করে নিতে পারি আমরা। যাঁরা নিজেরা রাঁধতে চান, তাঁরাও বাড়িতে বানিয়ে নিতে পারেন ইলিশ প্ল্যাটার। অবশ্য সবাই যে ইলিশ পছন্দ করেন, তেমনটা নয়। সে-ক্ষেত্রে নিজের পছন্দ মতো মাছের স্পেশাল সাবেকি ডিশ রেঁধে কিংবা অর্ডার করে নেওয়াই যায়। কথা না-বাড়িয়ে তাই দেখে নেওয়া যাক, সপ্তমীতে কী কী খাওয়াদাওয়া করা যেতে পারে।

ইলিশ প্ল্যাটার:

খাতায়-কলমে এখন শরৎকাল পড়ে গেলেও বর্ষা কিন্তু এখনও বিদায় নেয়নি। ফলে সপ্তমীতে জমিয়ে ইলিশ খাওয়াই যেতে পারে। ইলিশ প্ল্যাটারে তাই রাখা যেতে পারে ইলিশ মাছের লোভনীয় নানা পদ। আর ইলিশ-উপাচারে পাত সাজাতে প্রথমেই রাখতে হবে জুঁইফুলের মতো সাদা ভাত। পাশে ইলিশ ভাজা এবং ইলিশ ভাজার তেল। আর ইলিশ ভাজার পাশেই পরিবেশন করা যেতে পারে ইলিশ মাছের মাথা দিয়ে রাঁধা কচুর-শাক এবং ইলিশ মাছের ল্যাজা-ভর্তা। আসলে ইলিশ মাছের লেজের দিকটায় বেশি কাঁটা থাকে বলে অনেকেই তা খেতে চান না। তাই অনায়াসে বানিয়ে নেওয়া যেতে পারে ইলিশের লেজের ভর্তা! আর থালার পাশে আলাদা আলাদা বাটিতে সাজিয়ে দেওয়া যেতে পারে বেগুন দিয়ে ইলিশ মাছের ঝোল, সর্ষে ইলিশ কিংবা সর্ষে আর নারকেল দিয়ে ইলিশ ভাপাও। ইলিশ প্ল্যাটারে দই ইলিশ জুড়ে দিলেও কিন্তু মন্দ হয় না! আর পাশেই ছোট্ট একটা প্লেটে পরিবেশন করা যেতে পারে ইলিশ মাছ এবং গোবিন্দভোগ চাল-সহযোগে রাঁধা ইলিশ মাছের পোলাও। শেষ পাতে অবশ্যই রাখতে হবে তেঁতুল সহযোগে রান্না করা ইলিশ মাছের মাথার টক। ফলে গোটা বাড়ি তো ইলিশের গন্ধে ম’ ম’ করবেই, সেই সঙ্গে ইলিশের স্বর্গীয় স্বাদ মন এবং পেট – দুইই ভরাবে!

চিংড়ি মাছের নানা পদ:

ইলিশের গন্ধ আর স্বাদ আবার অনেকেই পছন্দ করেন না। আসলে অনেকেই আছেন, যাঁরা ইলিশের তুলনায় চিংড়িটাই বেশি পছন্দ করেন। তাই তাঁদের জন্য রইল চিংড়ি মাছের নানা পদে পাত সাজানোর আইডিয়া। থালায় প্রথমে সুন্দর করে দুধ-সাদা ভাত বেড়ে তার পাশে পরিবেশন করতে হবে কুচো চিংড়ির বড়া, চিংড়ি মাছের কাটলেট আর চিংড়ি দিয়ে বানানো ভর্তা। আর ভাতের থালার পাশে আলাদা আলাদা বাটিতে পরিবেশন করা যায় চিংড়ির মালাইকারি কিংবা ডাব চিংড়ি, লাউপাতা দিয়ে চিংড়ি ভাপা, কচুপাতা চিংড়ি, শাপলা চিংড়ি এবং নারকেল ও চিংড়ির পুরে ঠাসা পটলের দোলমার মতো সুস্বাদু সব পদ। এই সবের সঙ্গে যদি থাকে চিংড়ির বিরিয়ানি, তা-হলে তো একেবারে জমেই উঠবে সপ্তমীর স্পেশাল ভূরিভোজ।

নানা মাছের রকমারি পদ:

চিংড়ি-ইলিশ ছাড়াও মাছ-প্রেমীরা মেন্যু সাজাতে পারেন অন্যান্য মাছের রকমারি পদ দিয়েও। তাই সাদা ভাতের সঙ্গে প্রথম পাতেই থাকবে মাছের শুক্তো। মাছের শুক্তোর মতোই এর পাশাপাশি আলাদা আলাদা বাটিতে পরিবেশন করতে হবে মাছের মাথা দিয়ে মুগ ডাল, সঙ্গে ফিশফ্রাই কিংবা তোপসে ফ্রাই। ডাল আর ফ্রাই তো না-হয় গেল! এ-বার পালা সাইড ডিশের! তাই ভাতের থালার পাশে সাজিয়ে দেওয়া যায় কই মাছের গঙ্গা-যমুনা কিংবা তেল কই, পাবদার ঝাল, চিতল মাছের মুইঠ্যা এবং ভেটকি মাছের পাতুরি। মাছের বিশেষ মেন্যুতে মুড়িঘণ্টই বা বাদ যাবে কেন! আর শেষ পাতে কি একটু টক-মিষ্টি চাটনি গোছের কিছু না-হলে চলে! তাই বানিয়ে নেওয়াই যায় চুনো মাছের টক।

মেন্যু তো নয় হল, কিন্তু টেবিল সাজানোর ক্ষেত্রেও নতুনত্বের ছোঁয়া না-থাকলে হয়! তাই রোজকার ব্যবহার করা বাসন এদিন ভুলে যাওয়াই ভাল। বাঙালিয়ানা আনতে ব্যবহার করা যায় মাটি কিংবা কাঁসার বাসন। তা-ছাড়াও কলাপাতা কিংবা পদ্মপাতাতেও সাজানো যেতে পারে পাত। এক্ষেত্রে জল পরিবেশনের জন্য অবশ্যই সঙ্গে থাকবে মাটির ভাঁড়!

Published by:Debalina Datta

(Source: news18.com)