#কেরলঃ এটাই নাকি রীতি! অর্থ, যশ, প্রতিপত্তি লাভের আশায় গ্রামের দুই মহিলাকে বলি দেওয়ার অভিযোগ! বলি দেওয়ার সময় দেওয়ালে এবং মেঝেতে ছিটকে পড়া যাওয়া চাপ চাপ রক্তই ব্ল্যাক ম্যাজিকে শুভ ইঙ্গিতবাহী! কেরলের প্রত্যন্ত গ্রামের এই নৃশংস ঘটনায় ফুঁসছে গোটা দেশ। ঘটনায় এক দম্পতি-সহ মূল অভিযুক্ত ইন্ধনদাতা তথা মাস্টারমাইন্ড আরও এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে কোচি পুলিশ। ঘটনায় হতবাক দম্পতির পড়শিরা। একেবারে সাদামাটা জীবনে অভ্যস্ত দু’জন কীভাবে এমন নৃশংস ঘটনায় শামিল হল, ভেবেই কুল পাচ্ছেন না কেউ।
ভাগবল সিং এবং তার স্ত্রী লায়লা থিরুভাল্লার বাসিন্দা। দম্পতি আর্থিক সঙ্কটে ছিলেন, আর্থিক নানা সমস্যায় জর্জরিত হয়ে পড়েছিলেন। সেই সময়ে ফেসবুকের মাধ্যমে তাদের পরিচয় হয় রশিদ ওরফে মুহামন্দ শাফির সঙ্গে। শাফি পেরুম্বাভুরের বাসিন্দা। পরিচয়ের পরে নিজেদের মধ্যে আলোচনাতেই দম্পতি আর্থিক সমস্যার কথা শাফিকে জানিয়েছিলেন বলে জেরায় জানতে পেরেছে পুলিশ। সেই সময়েই শাফি নর বলি দিয়ে সমস্যার দ্রুত সমাধানের কথা বলে। এমনকি শাফি নিজেই মহিলা জোগার করে দেওয়ার দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেয় এজেন্ট হিসেবে।
পুলিশি জেরায় অভিযুক্তেরা জানিয়েছে, বলির দেওয়ার পরে দুই মহিলার দেহ টুকরো টুকরো করে কেটে পাঠানামথিত্তার এলানতুর গ্রামে বাড়ির পিছনে পুঁতে দেওয়া হয়। এমনকি শাফির কথামতো বলির সেই নরমাংস খানিকটা রান্না করে খেয়েছিল অভিযুক্ত দম্পতি। কারণ শাফি বলেছিল, নরমাংস খেলে নিজেদের বয়স বা যৌবন ধরে রাখা সম্ভব। সেই মতোই মাংস রান্না করে খান দু’জনে। মঙ্গলবার পুঁতে দেওয়া দেহ উদ্ধারের পরে পদ্মা নামে মহিলার বুকের পাঁজরের কিছুটা অংশ মেলেনি, জেরার ধৃতদের দাবি, সেই অংশটুকুই রান্না হয়েছিল।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, যে দুই মহিলাকে বলি দেওয়া হয় তাঁদের নাম পদ্মা এবং রোজলিন। দু’জনেরই বয়স পঞ্চাশের আশেপাশে। দু’জনেই রাস্তার ধারে লটারির টিকিট বিক্রি করতেন সংসার চালানোর জন্য। রোজলিন স্বামীর সঙ্গে কাছেই কালাডি গ্রামে থাকতেন। তিনি জুন মাসে আচমকাই নিখোঁজ হয়ে যান। তারপর তাঁর ১৭ বছরের মেয়ে থানায় নিখোঁজের ডায়েরিও করেন, কিন্তু কোনও খোঁজ মেলেনি। কিন্তু নরবলির পরেও সমস্যার সমাধান না হয়ায় ফের শাফির সঙ্গে যোগাযোগ করেন দম্পতি। শাফি ফের তাদের নরবলির পরামর্শ দেন।
এ বারে পদ্মা সেপ্টেম্বর মাসে নিখোঁজ হয়ে যান, তাঁরও খোঁজ মেলেনি আর। দুই মহিলাকে বলি দেওয়ার পরে বাড়ির পিছনে চারটি বড় গর্ত খুঁড়ে, তাতে পুঁতে রাখা হয়েছিল। এরপর পুলিশ তদন্তে নেমে, তাঁদের মোবাইলের টাওয়ার লোকেসন ট্রাক করতেই নরবলির রহস্য সামনে আসে। তবে এখানেই শেষ নয়, আরও একজনকে বলি দেওয়া হয়েছে বলে জানতে পেরেছেন পুলিশকর্তারা। তাঁর খোঁজে তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযুক্তদের টানা জেরা করা হচ্ছে।