জলবায়ু পরিবর্তন-ভাইরাস স্পিলওভার: জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আর্কটিকের বরফ দ্রুত গলছে এবং এর কারণে বিশ্ব উষ্ণ হচ্ছে। এই বিপদ এখন আর আবহাওয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, মানুষের জন্য নতুন সমস্যাও তৈরি করতে পারে। বায়োলজিক্যাল জার্নালে ‘প্রসিডিংস অব দ্য রয়্যাল সোসাইটি বি’ জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে একটি গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে। যেখানে চমকপ্রদ তথ্য দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, পরবর্তী মহামারী কোনো প্রাণী থেকে নয়, বরফ গলে ছড়াবে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে হিমবাহের বরফ দ্রুত গলে যাচ্ছে, যার কারণে এতে ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া বেরিয়ে আসতে পারে।
জলবায়ু পরিবর্তন ভাইরাল স্পিলোভারের ঝুঁকি বাড়িয়েছে। এটি এমন একটি প্রক্রিয়া যেখানে ভাইরাস একটি নতুন হোস্ট পায়। এই হোস্ট একটি মানুষ, প্রাণী বা এমনকি একটি গাছ গাছপালা হতে পারে। ভাইরাসটি প্রথমে হোস্টকে সংক্রামিত করে এবং তারপরে মহামারী ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মৃত্তিকা বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বিশ্বে দ্রুত বরফ গলে যাওয়ায় নতুন ভাইরাস ছড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে। একই ভাইরাস দুর্বল ইমিউন সিস্টেমের একজন ব্যক্তির কাছে পৌঁছাতে পারে এবং তারপরে অন্য লোকেদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এটি করোনা ভাইরাস অর্থাৎ কোভিড-১৯ মহামারীর সময় দেখা গেছে।
2021 সালের একটি গবেষণা অনুসারে, বিজ্ঞানীরা 33 টি ভাইরাস আবিষ্কার করেছিলেন। তারা গত 15 বছর ধরে বরফে জমে ছিল। এর মধ্যে ২৮টি ছিল একেবারে নতুন। অর্থাৎ এগুলো সেই ভাইরাস, যা আগে কখনো দেখা যায়নি। এই সব ভাইরাসের উৎপত্তি তিব্বতের হিমবাহ থেকে। গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের কারণে এই হিমবাহটিও পিছিয়ে পড়েছিল।
আর্কটিক জল থেকে নমুনা নেওয়া হয়েছিল
ভাইরাস সম্পর্কে কথা বললে, তারা বিশ্বের প্রতিটি কোণে ঘটে। এই গবেষণাটি করার জন্য, বিজ্ঞানীদের দলটি আর্কটিক সার্কেলের বৃহত্তম পুকুর হ্যাজেন থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছিল। মিঠা পানির এই হ্রদটি কানাডায় রয়েছে। এতে পাওয়া আরএনএ এবং ডিএনএ এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত ভাইরাসের সাথে মিলে গেছে।
গবেষকরা বলেছেন, হিমবাহ গলে গেলে এতে উপস্থিত ভাইরাসগুলো বেরিয়ে আসবে এবং তা আমাদের মানুষকে সংক্রমিত করবে। এর পাশাপাশি আর্কটিক অঞ্চলটিকে গবেষণার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছিল কারণ এখানকার বরফ অন্যান্য এলাকার তুলনায় দ্রুত গলছে। সেই সঙ্গে এখানে তাপমাত্রা ক্রমাগত গরম হচ্ছে। যার কারণে ভাইরাল স্পিলওভারের ঝুঁকি বেড়েছে।
(Feed Source: indiatv.in)