মৈত্রেয়ী ভট্টাচার্য: রাজ্যে ক্রমশ বাড়ছে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্য়া। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে ডেঙ্গি আক্রান্ত হলেন ৬৬২ জন। এখনও পর্যন্ত রাজ্যের সরকারি হাসপাতালগুলিতে ভর্তি রয়েছেন ৮২১ জন। তিন দিন আগেই রাজ্যে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২৫ হাজারের কাছাকাছি। ফলে সেই সংখ্য়া কোথায় দাঁড়াচ্ছে তা সহজেই অনুমেয়। আক্রান্তের সংখ্যায় উপরের দিকে রয়েছে কলকাতা ও উত্তর ২৪ পরগনা। করোনার সময়েও রাজ্যকে ভুগিয়েছিল এই দুই জেলা। রাজ্য স্বাস্থ্য় দফতরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৮ সালের পর থেকে এই প্রথম এত লোক ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হলেন কলকাতায়। পাশাপাশি শহরতলি এলাকাতেও ডেঙ্গি বাড়ছে।
পুজোতেও ডেঙ্গির দাপটের কথা মাথায় রেখে গত ১৭ সেপ্টেম্বর কলকাতার বেসরকারি হাসপাতাল ও ল্যাবগুলিকে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশিকা দিয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। এদিন শহরের সব বেসরকারি হাসপাতাল ও ল্যবরেটরিগুলির সঙ্গে বৈঠকে বসেন স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম নিজে ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। ওই বৈঠকে বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে বেশ কয়েকটি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বেসরকারি হাসপাতালে যখন কোনও ডেঙ্গি রোগী ভর্তি হবেন তার তথ্য স্বাস্থ্য দফতরকে জানাতে হবে। সেই তথ্য স্বাস্থ্য দফতরের পোর্টালে আপলোড করতে হবে। চিকিত্সা ক্ষেত্রে কোনও Rapid টেস্ট করা যাবে না। একেবারে অ্যালাইজা মেথডে এনএসওয়ান টেস্ট করতে হবে। এর পাশাপাশি বেসরকারি ল্যাবগুলিকে বলা হয়েছে ডেঙ্গি পরীক্ষা রেট সাধারণের আয়ত্তের মধ্যে রাখতে হবে। কোনও ল্যাব ওই নির্দেশিকা না মানলে ক্লিনিক্যাল এসট্যাবলিসমেন্ট অ্যাক্ট অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ডেঙ্গি চিকিত্সার জন্য সরকারি প্রটোকল মেনে চলতে হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখন শিশুদের ফুলহাতা জামা পরিয়ে বাইরে বের করতে হবে। মশারি ছাড়া তাদের শোয়ানো যাবে না। ভোরে ও সন্ধেয় তাদের উপরে বিশেষ নজর রাখতে হবে। কারণ ওই সময়ে ডেঙ্গির মশা বেশ সক্রিয় থাকে। জ্বর এলে প্যারাসিটামল খাবে। তবে কোনও ব্যথার ওষুধ নয়। যত দ্রুত সম্ভব রক্ত পরীক্ষা করতে হবে। ডেঙ্গির আক্রমণ থেকে বাঁচার ক্ষেত্রে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হল আগাছা পরিষ্কার রাখা। এর পাশাপাশি নিজের বাসস্থানের আশেপাশে এবং রাস্তায় যাতে অতিরিক্ত জল না জমে সেই দিকে নজর রাখা।
কীভাবে চিকিৎসা হবে এই রোগের
চিকিত্সক মহলের পরামর্শ ডেঙ্গির চিকিৎসা দ্রুত শুরু করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রথম ৪-৫ দিনের পরে কিছু রোগীর অবস্থা সংকটজনক হয়ে যেতে পারে। অন্যরা সুস্থ হতে শুরু করেন। প্রথম থেকেই তীক্ষ্ণ নজরদারি, টেস্ট এবং প্যারাসিটামলের পাশাপাশি প্রচুর জল খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিত্সকেরা। ডেঙ্গির পরীক্ষা দ্রুত করে চিকিৎসা তাড়াতাড়ি শুরু করলে বেশিরভাগ মানুষ খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠতে পারেন। যদি রোগীর প্রসার কমে, পরীক্ষা করে যদি দেখা যায় যে শরীরে পিসিবি ২০ শতাংশের বেশি বেড়ে গিয়েছে, পেটে ব্যথা, বমি এবং শরীরের বিভিন্ন জায়গায় যদি জল জমে তাহলে অবশ্যই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া উচিত। এর সঙ্গেই তিনি জানিয়েছেন যে রোগীর কথায় যদি অসংলগ্নতা ধরা পরে তাহলেও সেই রোগীকে তৎক্ষণাৎ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া উচিত।
(Feed Source: zeenews.com)