#নয়াদিল্লি: শীত পড়ছে। ২০২২ সালের জন্য ৩০ অক্টোবর থেকে শীত মরশুম ধরে নিয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা ২১,৯৪১ টি সাপ্তাহিক উড়ানের অনুমোদন করেছে। আগে সমস্ত উড়ান সংস্থা মিলিয়ে দৈনিক মোট ৩,১৩৪টি উড়ানের অনুমোদন দেওয়া হত। ২০১৯ সালের শীতকালেও এই একই সংখ্যক উড়ানকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল ভারতে। তার পর করোনা অতিমারীর সময় সব কিছু বন্ধ হয়ে যায়।
নতুন নিয়ম প্রবর্তনে প্রথম দিনে বিমান উড়ান সংস্থাগুলি ২,৬৮৭টি উড়ান পরিচালনা করেতে পেরেছে। এটি প্রত্যাশিতই ছিল। মনে করা হয়েছিল প্রথম দিনেই ৩,১৩৪টি বিমান উড়তে পারবে— এমনটা নয়। ২০২২ সালের গ্রীষ্মকালীন অনুমোদিত উড়ানের তুলনায় এটি প্রায় ১০ শতাংশ বেশি৷
যাই হোক, প্রতিটি সময়সূচী ভারতে কিছু আকর্ষণীয় রুট-এর সংমিশ্রণ তুলে ধরে। অ্যালায়েন্স এয়ার, দেশের একমাত্র সরকার-নেতৃত্বাধীন বিমান সংস্থা। তারা গুয়াহাটি এবং শিলচরের মধ্যে মাত্র ৫৮ কিলোমিটারের একটি উড়ান শুরু করেছে। এটিই দেশের সবচেয়ে ছোট রুট। এয়ারলাইনটি সপ্তাহে তিনবার এই উড়ান পরিচালনা করে। দীর্ঘতম রুটের রেকর্ডটি অবশ্য রয়েছে এয়ার ইন্ডিয়ার ভাঁড়ারে। দিল্লি থেকে পোর্ট ব্লেয়ার—প্রায় ২,২৮২ কিলোমিটার পথে একটি বিরতিহীন উড়ান পরিচালনা করে এয়ার ইন্ডিয়া।
দেশের সবচেয়ে ছোট রুট—
এত দিন পর্যন্ত দেশের মধ্যে সব থেকে কম দূরত্বের এটিআর রুটে বিমান চালাত শীর্ষস্থানীয় বিমান সংস্থা ইন্ডিগোর। শিলচর এবং শিলংয়ের মধ্যে সপ্তাহে তিনদিন চলত এই বিমান। ১৩৪ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করতে সময় লাগত ৪০ মিনিট। ফ্লাইবিগ-ও গুয়াহাটি এবং রূপসির মধ্যে তার সবচেয়ে ছোট রুটে বিমান চালায়, যার দূরত্ব মাত্র ১৬৭ কিলোমিটার। স্পাইসজেট ভারতে কিউ৪০০-এর একমাত্র অপারেটর যারা টার্বোপ্রপের ক্ষেত্রে সংক্ষিপ্ততম রুটে বিমান চালায়— দিল্লি এবং জয়পুরের মধ্যে ২৩০ কিলোমিটার। এয়ারলাইনসের বোয়িং বিমান জম্মু এবং শ্রীনগরের মধ্যে ১৪৩ কিলোমিটারের পথ পাড়ি দেয়। এটিও যথেষ্ট ছোট রুটের উড়ান।
সমস্ত এয়ারবাস অপারেটর, এয়ার এশিয়া ইন্ডিয় এবং গো ফার্স্ট, যথাক্রমে দিল্লি-জয়পুর-দিল্লি এবং জম্মু-শ্রীনগর-জম্মু রুটে খুব সংক্ষিপ্ত পথে উড়ান চালায়। টাটা গ্রুপ এয়ারলাইন, ভিস্তারা, জম্মু-শ্রীনগর-জম্মুও রুটেও সংক্ষিপ্ত উড়ান পরিচালনা করে। এ ছাড়া, কন্নুর থেকে কালিকটের মধ্যে এয়ার ইন্ডিয়ার উড়ানটি এয়ারলাইনের জন্য সবচেয়ে কম পথের উড়ান— মাত্র ৯৫ কিলোমিটার। এটি দেশের সংক্ষিপ্ততম ন্যারো-বডি উড়ানও।
নবাগত আকাসা এয়ারের গুয়াহাটি-আগরতলা রুটটি ২৪৮ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেয়। এয়ারলাইনের জন্য এটি সবচেয়ে ছোট রুট। পাশাপাশি আঞ্চলিক অপারেটর স্টার এয়ার, বেঙ্গালুরু-হুব্বালি রুটে তাদের বিমান বহরে একটি ই১৭৫এস অন্তর্ভুক্ত করতে চাইছে।
ভারতের দীর্ঘতম রুট—
এয়ার ইন্ডিয়া দিল্লি থেকে পোর্ট ব্লেয়ার পর্যন্ত দেশের দীর্ঘতম রুট পরিচালনা করে। ইন্ডিগোর দীর্ঘতম রুটে বিমান পোর্ট ব্লেয়ার থেকে মুম্বই পর্যন্ত যাতায়াত করে। এই ২,২৭৯ কিলোমিটার পথ পেরোতে বিমানে সময় লাগে ৩ ঘণ্টা ২৫ মিনিট। ইন্ডিগোর ATR বহর আহমেদাবাদ থেকে কোলাপুর পর্যন্ত ৭৩২ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেয় ২ ঘণ্টা ১০ মিনিটে। আবার ফ্লাইবিগ-এর উড়ান গুয়াহাটি থেকে পটনা পর্যন্ত ৬৫২ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেয়, এয়ারলাইনের জন্য দীর্ঘতম রুট তো বটেই।
অ্যালায়েন্স এয়ারের জন্য সবচেয়ে দীর্ঘ রুটটি হল কলকাতা থেকে লীলাবাড়ি পর্যন্ত। ২ ঘণ্টা ১০ মিনিটের এই উড়ানটি পাড়ি দেয় ৭৬৬ কিলোমিটার পথ। ১,৪৫৬ কিলোমিটার দীর্ঘ বেঙ্গালুরু-গোয়ালিয়র রুটে কিউ৪০০ পরিচালনা করে স্পাইসজেট। এটি দেশের দীর্ঘতম টার্বোপ্রপ উড়ান।
শীতকালীন রুট রিভাম্প—
এয়ার এশিয়া ইন্ডিয়া, গো ফার্স্ট-এর মতো সমস্ত এয়ারবাস অপারেটর যথাক্রমে দিল্লি-কোচি-দিল্লি এবং দিল্লি-বেঙ্গালুরু-দিল্লি তাদের দীর্ঘতম রুট পরিচালনা করে৷ ভিস্তারা দিল্লি-ত্রিবান্দ্রম-দিল্লি রুটে ২,২৩২ কিলোমিটারের দীর্ঘতম পথে বিমান উড়ান পরিচালনা করে থাকে।
আকসা এয়ার বেঙ্গালুরু থেকে গুয়াহাটির তার দীর্ঘতম রুটের উড়ান পরিচালনা করে থাকে।
এয়ারলাইনস এবং তাদের উপস্থিতি
সমীক্ষা রিপোর্ট থেকে দেখা যায়, দিল্লি থেকেই সর্বাধিক সাপ্তাহিক উড়ান শুরু হচ্ছে, মোট ৩,২১৪টি। এর পরেই রয়েছে মুম্বই, সেখানে সর্বাধিক ৩,২১৪ টি উড়ান শুরু হয়। এর পর বেঙ্গালুরুতে মোট ১,৮৭৬টি এবং হায়দরাবাদে ১,১৯৪টি উড়ান শুরু হয়।
চেন্নাই একমাত্র বিমানবন্দর যেখান থেকে প্রতি সপ্তাহে এক হাজারের বেশি ঘরোয়া বিমান ওড়ে। সেখানে সংখ্যাটা ১০০৩।
শীতের মরশুম আরও একটু এগোলে আরও অনেক বিমানবন্দরেই বিমান ওঠানামার হার বাড়বে বলে আশা। এর মধ্যে রয়েছে রাউরকেলা, গোয়া, হলঙ্গি-সহ আরও কিছু বিমানবন্দর।