৯৭ লক্ষ মানুষের কাছ থেকে ১ ডলার করে ‘মুক্তিপণ’ চাই! না হলেই ডেটা ফাঁস: রিপোর্ট

৯৭ লক্ষ মানুষের কাছ থেকে ১ ডলার করে ‘মুক্তিপণ’ চাই! না হলেই ডেটা ফাঁস: রিপোর্ট

অস্ট্রেলিয়ার স্বাস্থ্যবিমা প্রদানকারী সংস্থায় সাইবার হানা। দেশের প্রধানমন্ত্রী-সহ ৯৭ লক্ষ মানুষের তথ্য হাতিয়ে নিয়েছে রুশ হ্যাকাররা। আর তারপর ডেটা ফেরত দিতে প্রত্যেকের কাছ থেকে ১ মার্কিন ডলার মুক্তিপণ দাবি করছে। অস্ট্রেলিয়ার পুলিশ এই ঘটনার কথা প্রকাশ করেছে। সংবাদসংস্থা এএফপি সূত্রে মিলেছে এই খবর।

রিপোর্ট অনুযায়ী, অস্ট্রেলিয়ার ফেডারেল পুলিশ কমিশনার রিস কেরশ এই হামলার জন্য রাশিয়া-র সাইবার অপরাধীদের দায়ী করেছেন। তিনি বলেন, অস্ট্রেলিয়ান পুলিশ রাশিয়ার পুলিশ-প্রশাসনের কাছে সহায়তার জন্য যোগাযোগ করবে। তিনি আরও বলেন, কোন হ্যাকাররা এই অপকর্ম ঘটিয়েছেন, তা পুলিশ ভালো করেই জানে। তবে তদন্তের স্বার্থে আপাতত পরিচয় প্রকাশ করবেন না।

র‍্যানসমওয়্যার অ্যাটাক

মেডিব্যাঙ্ক প্রাইভেট লিমিটেড, অস্ট্রেলিয়ার বৃহত্তম স্বাস্থ্য বিমা সংস্থা। র‍্যানসমওয়্যার হানার ফলে বর্তমানে সেখানকার প্রায় ৯৭ লক্ষ গ্রাহকদের ডেটা বিপন্ন হয়ে গিয়েছে। রয়টার্সের রিপোর্ট অনুযায়ী, মেডিব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ নিজেরাও জানিয়েছে যে, এই ঘটনায় হ্যাকাররা গ্রাহকদের ডেটা অ্যাক্সেস করেছিল।

বৃহস্পতিবার, হ্যাকাররা ডার্ক ওয়েবে অস্ট্রেলিয়ার রোগীদের চিকিৎসা সম্পর্কিত ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশ করে দেয়। তারপরে ৯৭ লক্ষ মেডিব্যাঙ্ক গ্রাহকের প্রত্যেকের কাছ থেকে ১ ডলার ‘মুক্তিপণ’ দাবি করে। ডার্ক ওয়েবে তথ্য ফাঁস হলে তার থেকে ভয়ানক পরিণতি হতে পারে। ব্যক্তিগত হ্যাকিং, আইডেনটিটি থেফট করে অপরাধ ঘটানো, টার্গেটেড বিজ্ঞাপনের বন্যা বয়ে যেতে পারে। এছাড়াও এক্ষেত্রে অনেক গ্রাহকের মাদকাসক্তি, অ্যালকোহল আসক্তি এবং যৌন সংক্রামিত রোগের মতো স্পর্শকাতর ডেটা রয়েছে। এগুলি ফাঁস হলে তাঁদের ব্যক্তিগত জীবন বিপন্ন হতে পারে।

মেডিব্যাঙ্ক যদিও ডেটা ফিরে পেতে অপরাধীদের কোনও মুক্তিপণ দিতে অস্বীকার করেছে। ‘সাইবার ক্রাইম বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে আমরা পরামর্শ নিয়েছি। তার উপর ভিত্তি করে আমাদের বিশ্বাস, মুক্তিপণ দিলেই যে আমাদের গ্রাহকদের ডেটা ফেরত নিশ্চিত, তার কোনও মানে নেই। টাকা নিয়েও ডার্ক ওয়েবে ডেটা বিক্রি হতে পারে। সেই কারণে টাকা দেব না আমরা,’ জানান মেডিব্যাঙ্কের সিইও ডেভিড কজকার।

এর প্রেক্ষিতে শুক্রবার সকালে ডার্ক ওয়েবেই নিজেদের প্রত্যুত্তর দেয় ওই হ্যাকাররা। তারা লেখে, ‘আমরা কথা রাখতে জানি।’ তাদের ব্যাখা, ‘আমরা টাকা নেওয়ার পরেও ডেটা ফাঁস করতে যাব কেন? তাহলে তো ভবিষ্যতে কেউ আর আমাদের বিশ্বাস করবে না।’ অর্থাত্, এই একই পন্থায় আগামিদিনেও হ্যাকিং চালিয়ে যেতে চায় এই হ্যাকাররা।

কুখ্যাত রুশ হ্যাকিং সংগঠন REvil

সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের অনুমান রুশ হ্যাকিং সংগঠন REvil এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে।

JBS Foods থেকে এর আগে একই পদ্ধতিতে তথ্য ফাঁস করার ভয় দেখিয়ে ১১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মুক্তিপণ দাবি করেছিল REvil । যদিও চলতি বছরের শুরুতে রুশ পুলিশ কর্তৃপক্ষ REvil-এর হ্যাকারদের ধরা হয়েছে বলে দাবি করেছিল।