মাঠজুড়ে শিম ফুলের শোভা, চাষির মুখে হাসির আভা

মাঠজুড়ে শিম ফুলের শোভা, চাষির মুখে হাসির আভা

এহসানুল হক, ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি : সবুজ পাতার মাঝে বেগুনি রঙের ফুলের শোভায় ভরে উঠছে শিমখেত। দূর থেকে তাকালেই দেখা যায় শিমের মাচায় সবুজের সঙ্গে দুলছে রঙিন সাদা ও বেগুনি ফুল। সাদা এবং বেগুনি রঙের মনোমুগ্ধকর ফুলে প্রকৃতি যেন নতুন রূপে সেজেছে।

শীতের শুরু না হতেই খেতে ঝুলছে স্থানীয় ও বারি-২ জাতের শিম। খেত থেকে শিম তুলে বাজারে বিক্রি করছেন অনেক চাষি। ভালো দাম পেয়ে চাষিদের মুখে দেখা দিয়েছে হাসির আভা।

ঈশ্বরগঞ্জে শিম চাষ করে ভালো ফলনের সম্ভাবনা দেখছেন চাষিরা। শীতকালীন সবজির মধ্যে অন্যতম হলো শিম। প্রতিবছরই উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বাণিজ্যিক ও পারিবারিক ভাবে চাষ হয়ে আসছে শীতকালীন সবজি শিম। কম খরচে অধিক লাভ হওয়ায় দিন দিন শীতের সবজি শিম আবাদে ঝুঁকছেন চাষিরা।

শনিবার (১২ নভেম্বর) উপজেলার রাজিবপুর ইউনিয়নের উজানচর এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, মাঠের পর মাঠজুড়ে শিমখেত, যা অপরূপ সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে। শিমের গাছ, পাতা-ফুল বাতাসে দোল খাচ্ছে। পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা।

উজানচর গ্রামের উজ্জ্বল মিয়া (৩২) এ বছর সব মিলিয়ে নিজের ৭০ শতাংশ জমিতে শিম আবাদ করেছেন। কথা হয় তাঁর সঙ্গে।

তিনি বলেন, ‘ইতিমধ্যে শিম গাছে ফুল এসেছে । আবার অনেক গাছে শিমও ধরেছে। যতো আগে আগে শিম বিক্রি করতে পারবো, ততো বেশি লাভ হবে। তবে ৭০ শতাংশ জায়গার সবটুকু তিনি চাষ করেননি, একই এলাকার জয়নাল উদ্দিন নামের এক কৃষককে তিনি ভাগে দিয়েছেন।’

কৃষক জয়নাল বলেন, এবার ৩০ শতাংশ জমিতে তিনি ভাগে (চুক্তি ভিত্তিক) শিম আবাদ করেছেন তিনি। যা লাভ হবে তার অর্ধেক মালিককে দিতে হবে, বাকী অর্ধেক তিনি রাখবেন। তিনি আশা করছেন শীতকালীন সবজি শিম বিক্রি করে বেশ দাম পাবেন।

গ্রামের চাষিরা বলেন, মৌসুমের শুরুর দিকে প্রকারভেদে ৭০-৮০ টাকা কেজি দরে জমি থেকেই শিম নিয়ে যান ব্যবসায়ীরা। তবে অল্প কিছুদিন পর বাজারে আমদানি বেড়ে গেলে দামও নেমে আসে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। তারপরও ভালো লাভ হয়।

এদিকে ঈশ্বরগঞ্জ পৌর বাজারে শনিবার শিম বিক্রি হয়েছে খুচরা ১২০ টাকা কেজি। এক দুই সপ্তাহ আগে ছিল ১৫০-১৬ টাকা কেজি।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ বছর উপজেলায় প্রায় ১২০ হেক্টর জমিতে শিমের আবাদ হয়েছে। যার মধ্যে রাজিবপুর ইউনিয়নেই ৯০ হেক্টর জমি শিম চাষ করা হয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ নুসরাত জামান বলেন, ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার রাজিবপুর ইউনিয়নে বেশি শিম চাষ হয়। এছাড়াও উচাখিলা, তারুন্দিয়া ইউনিয়নসহ বেশ কিছু এলাকায় শিমের আবাদ করা হয়েছে। এক- দুই সপ্তাহের মধ্যে বাজারে পুরোপুরি স্থানীয় শীতকালীন সবজি শিম পাওয়া যাবে।

এ বছর প্রকৃতি অনুকূলে থাকায় শিমের চাষাবাদ ভালো হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তিনি আরও জানান,বিষমুক্ত নিরাপদ শিম উৎপাদনের জন্য কৃষিবিভাগ সার্বক্ষনিকভাবে কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে কৃষি অফিস।

সান নিউজ/এইচএন