#নয়াদিল্লি: সংস্থার দায়িত্ব হাতে নেওয়ার পর এলন মাস্ক যে বেশ ভাল হারে কর্মী ছাঁটাই করতে চলেছেন, সদ্য আসা সেই খবরে স্তম্ভিত পেশাদার দুনিয়া। মূলত সংস্থার চুক্তিভিত্তিক কর্মীরাই কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তের শিকার। তবে অ্যামাজনের কর্ণধার জেফ বেজোসও যে ওই একই পথে হাঁটতে চলেছেন, সেই বিষয়ে বিন্দুবিসর্গও অনুমান করতে পারেনি বিশ্ব। না করতে পারলেও বিশ্ব জুড়ে কর্মী ছাঁটাইয়ের পারম্পর্য বহাল রাখতে চলেছে অন্যতম বৃহৎ এই ই-কমার্স সংস্থা।
কারণ হিসাবে দর্শানো হচ্ছে লভ্যাংশের অভাব। সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন ওঠে এই জায়গায় এসে- এই যে গত কয়েক মাস ধরে উৎসবের মরশুমে একের পর এক সেল চলেছে এই ই-কমার্স সাইটে, তা কি একেবারেই মুনাফার মুখ দেখায়নি? সাধারণ মানুষ যা-ই ভাবুন না কেন, অ্যামাজন কর্তৃপক্ষ অন্তত সেই জল্পনাতেই সিলমোহর দিয়েছেন। সংস্থার প্রধান কার্যনির্বাহি কর্তা অ্যান্ডি জেসি বদ্ধপরিকর- অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা এবং বাণিজ্যিক মন্দার মুখে পরিচালনা ব্যবস্থায় রদবদলের রাশ টানতেই হবে।
অ্যামাজন এই প্রসঙ্গে জানিয়েছে যে অতিমারী পূর্ববর্তী অবস্থায় বিশ্ব প্রায় ফিরে এলেও সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা আগের জায়গায় আসেনি। ফলে, যতই পণ্যে ছাড় দেওয়া হোক না কেন, বিক্রিবাটা প্রত্যাশামাফিক হয়নি বললেই চলে। শুধু তা-ই নয়, এই অর্থনৈতিক ধীরগতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে সংস্থা নানা আর্থিক পদক্ষেপও গ্রহণ করেছিল, কিন্তু তার কোনওটাই পরিকল্পনা মতো সার্থক হয়নি। অতএব, এখন উপায় একটাই- বিগত কয়েক ত্রৈমাসিকের লোকসানের হার কর্মীদের বেতন থেকে উসুল করা, সেই কারণেই কর্মী ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত। এমনও বলা হচ্ছে যে অলাভজনক ক্ষেত্র থেকে যে কর্মী ছাঁটাই করা হতে পারে, সংস্থা সেই ইঙ্গিত পূর্বেই দিয়ে রেখেছিল, এবার শুধু তার বাস্তবায়নের অপেক্ষা।
দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের খবর এই প্রসঙ্গে কিছু বিশদ আলোকপাত করেছে। প্রতিষ্ঠানের তথ্য যদি সত্যি হয়, তাহলে এবার কাজ হারাতে চলেছেন অ্যামাজনের প্রায় ১০ হাজার কর্মী। অঙ্কটা ট্যুইটারের কর্মী ছাঁটাইয়ের তুলনায় বেশি তো বটেই, কিন্তু আরও এক দিক থেকে আতঙ্কজনক- এই সংখ্যা সারা বিশ্বের নিরিখে সংস্থার কর্মীসংস্থানের ১ শতাংশের সামান্য কম। যে সব ক্ষেত্র থেকে কর্মী ছাঁটাই করা হবে, তা হল অ্যালেক্সা ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্ট, হিউম্যান রিসোর্স এবং রিটেল ডিপার্টমেন্ট, জানিয়েছে নিউ ইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদন।
অ্যামাজনের বক্তব্য- অ্যালেক্সা ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্টের পিছনে বিপুল পরিমাণ খরচ করা হলেও এই গ্যাজেট ক্রেতাদের মধ্যে জনপ্রিয় বা বলা ভাল অত্যাবশ্যকীয় হয়ে ওঠেনি, ফলে এই দিকে আর খরচ বাড়ানোর কোনও মানে হয় না। বলা হচ্ছে, করোনাকালে অ্যামাজন যে বিপুল পরিমাণে লাভের মুখ দেখেছিল, সেই অনুপাতে বর্তমানে যে লাভের আশা করেছিল, তা পূর্ণ হওয়া রিসেশনের বাজারে দূর অস্ত- ফলে কর্মী ছাঁটাই করেই সেই আর্থিক লোকসানের ফাঁকটা ভরাতে চাইছে সংস্থা।