কলকাতা: নিচুতলায় ঝগড়া অশান্তি থাকলেও, উপরমহলে তার আঁচ পৌঁছয় না। যৌথ সাক্ষাৎকারে কয়েক দিন আগেই দাবি করেছিলেন অভিনেতা তথা সাংসদ দেব এবং মিঠুন চক্রবর্তী। কিন্তু রাজনৈতিক ভাবে বিপরীত মেরুর বাসিন্দা দুই শিল্পীর ছবি ‘প্রজাপতি’ জায়গা পেল না বাঙালির ঐতিহ্যের নন্দনে।
রাত পোহালে জন্মদিন দেবের। তাঁর নতুন ছবি নিয়ে তুমুল উৎসাহ অনুরাগীদের মধ্যে। সেই আবহেই মন খারাপ করা খবর নিজেই জানালেন দেব। শনিবার ট্যুইটারে নন্দনে শো না পাওয়ার কথা জানান দেব। ছোট্ট ট্যুইটে তিনি লেখেন, ‘এই বার তোমাকে মিস করব নন্দন। কোনও সমস্যা নেই। পরের বার ফের দেখা হবে’।
অভিনয়ের পাশাপাশি রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত দেব এবং মিঠুন, দুই শিল্পীই। রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের সাংসদ দেব। এককালে তৃণমূলে থাকলেও, এখন ফুল পাল্টে বিজেপি-তে মিঠুন। তবে পরিপন্থী রাজনৈতিক অবস্থান, তাঁদের শৈল্পিক কাজের ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। তাই পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে রাজ্য রাজনীতির পারদ যখন চরমে, সেই সময় একসঙ্গে অভিনীত ছবি ‘প্রজাপতি’ মুক্তি পেয়েছে রাজ্যে।
Will miss u Nandan this time
No Issue
Will meet again…End of Story
— Dev (@idevadhikari) December 24, 2022
এখনও পর্যন্ত সব জায়গা থেকেই ছবি নিয়ে ভাল সাড়া মিলেছে। কিন্তু মাল্টিপ্লেক্সে বাংলা ছবি দেখতে অনীহা মানুষজন তুলনামূলক কম টাকার টিকিটে যে নন্দনে দৌড়ন, সেই ঐতিহ্যের নন্দনেই কেন জায়গা পেল না ছবিটি, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।
পরিচালক অভিজিৎ সেন বাবা এবং ছেলের গল্প ফুটিয়ে তুলেছেন ‘প্রজাপতি’ ছবিতে। তা নিয়ে গোড়া থেকেই উৎসাহিত ছিলেন দেব এবং মিঠুন দুই জনেই। তাঁদের রাজনৈতিক অবস্থান ছবি তৈরির পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায় কিনা প্রশ্নের জবাবে সম্প্রতি দুই শিল্পীই সৌজন্যের বার্তা দিয়েছিলেন। জানিয়েছিলেন, রাজনীতিতে কচাকচি সাধারণ নিচু স্তরের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে থাকে। উপরতলায় সকলেই সকলের বন্ধু। কিন্তু নন্দনে ছবির মুক্তি আটকে যাওয়ায় তাঁদের সেই সৌজন্যের বার্তা আদৌ ফলপ্রসূ হল না বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।
তবে এই প্রথম নয়। এর আগে, অনীক দত্ত পরিচালিত ‘অপরাজিত’ ছবিটিও জায়গা পায়নি নন্দনে। ওই ছবিতে অভিনয় করেছিলেন খোদ তৃণমূলের সায়নী ঘোষ, যিনি যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতিও। সে বারও কম বিতর্ক হয়নি। কিন্তু দেব, তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্নেহের পাত্র বলেই পরিচিত যিনি, তাঁর ছবি কেন নন্দনে জায়গা পেল না, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।
এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া চাইলে নাট্যব্যক্তিত্ব তথা অভিনেতা কৌশিক সেন বলেন, “যাঁরা ছবি দেখতে ভালবাসেন, তাঁদের জন্য খারাপ খবর। নন্দনে ছবি দেখতে যাওয়া নির্দিষ্ট সংখ্যক দর্শক রয়েছেন। তাঁরা নন্দনেই ছবি দেখতে ভালবাসেন। নিশ্চয়ই অপেক্ষা করেছিলেন তাঁরা। অপরাজিতার ক্ষেত্রেও হয়েছিল। এ বারও হল। তাই এর নেপথ্যে রাজনৈতিক কারণ খোঁজা খুব অন্যায় হবে না।”
(Feed Source: abplive.com)