সশস্ত্র বিপ্লবে নেতৃত্বদান থেকে মূলস্রোতের রাজনীতিতে, নেপালে ফের ক্ষমতায় ফিরলেন ‘প্রচণ্ড’

সশস্ত্র বিপ্লবে নেতৃত্বদান থেকে মূলস্রোতের রাজনীতিতে, নেপালে ফের ক্ষমতায় ফিরলেন ‘প্রচণ্ড’

কাঠমান্ডু: মাঝে পাঁচ বছরের বিরতি। নেপালে ফের প্রত্যাবর্তন বাম সরকারের। রবিবার, বড়দিনে ফের নেপালের প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত হলেন পুষ্পকমল দহল ‘প্রচণ্ড’ (Pushpa Kamal Dahal)। দেশের তৃতীয় বৃহত্তম রাজনৈতিক দল কমিউনিস্ট পার্টি অফ নেপাল (মাওয়িস্ট সেন্টার)-এর (Communist Party of Nepal (Maoist Centre)) চেয়ারম্যান তিনি। ২০১৭ সালে ক্ষমতা হারানোর পর ২০২২ শেষে হতে হতে তাঁর হাত ধরেই নেপালে ফের ক্ষমতায় ফিরল CPN-Maoist Centre। এর আগে, ২০০৮ থেকে ২০০৯ এবং ২০১৬ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত দু’বার নেপালের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন প্রচণ্ড (Nepal Prime Minister)।

নেপালে ফের প্রত্যাবর্তন বাম সরকারের

রবিবার প্রচণ্ডকে দেশের প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত করলেন প্রেসিডেন্ট বিদ্যাদেবী ভাণ্ডারী। প্রেসিডেন্টের দফতর থেকে বিবৃতি প্রকাশ করে বলা হয়েছে, দেশের সংবিধানের ৭৬ নম্বর অনুচ্ছেদের ২ ধারায় প্রচণ্ডকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করা হয়েছে। হাউজ অফ রিপ্রেজেন্টেটিভস-এর যে সদস্য দুই বা ততোধিক দলের সমর্থন জোগাড় করতে পারবেন, তিনিই প্রধানমন্ত্রী পদের দাবিদার হতে পারবেন বলে জানিয়েছিলেন বিদ্যাদেবী।

রবিবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলেন বিদ্যাদেবী। তার আগেই এ দিন সমর্থন জোগাড় করে সরকার গড়ার দাবি জানান প্রচণ্ড। CPN-UML দলের চেয়ারম্যান কেপি শর্মা ওলি, রাষ্ট্রীয় স্বতন্ত্র পার্টির সভাপতি রবি লামিছানে, রাষ্ট্রীয় প্রজাতন্ত্র পার্টির প্রধান রাজেন্দ্র লিংদেন এবং অন্যদের সঙ্গে এ দিন প্রেসিডেন্টের কাছে পৌঁছন প্রচণ্ড। তাতে তাঁকেই দেশের প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত করেন বিদ্যাদেবী। সোমবার বিকেল ৪টেয় আনুষ্ঠানিক ভাবে শপথগ্রহণ করবেন তিনি।

নেপালের সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, হাউজ অফ রিপ্রেজেন্টেটিভসের ২৭৫ জন সদস্য়ের মধ্যে ১৬৫ জনের সমর্থন জোগাড় করতে সফল হয়েছেন প্রচণ্ড। তাতেই তৃতীয় বারের জন্য নেপালের প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত হলেন তিনি।

হাউজ অফ রিপ্রেজেন্টেটিভসের ১৬৫ জনের সমর্থন রয়েছে প্রচণ্ডর সঙ্গে

১৯৫৪ সালের ১১ ডিসেম্বর কস্কি জেলার ধিকুরপোখারিতে জন্ম প্রচণ্ডর। দরিদ্র পরিবারের ছেলে প্রচণ্ড, গৃহযুদ্ধের আবহে ১৯৮১ সালে আন্ডারগ্রাউন্ড থাকা কমিউনিস্ট পার্টি অফ নেপাল (ফোর্থ কনভেনশন)-এ যোগ দেন। দীর্ঘ ১৩ বছর নিজেও আন্ডারগ্রাউন্ড ছিলেন প্রচণ্ড। সিপিএন-মাওয়িস্ট মূলস্রোতের, শান্তিপূর্ণ রাজনীতিতে উঠে এলে তিনিও আড়াল সরিয়ে বেরিয়ে আসেন। সশস্ত্র বিপ্লবের রাস্তা থেকে সরে আসেন চিরতরে। কিন্তু সশস্ত্র বিপ্লবী নেতার ভাবমূর্তি থেকেই নামের সঙ্গে জুড়ে যায় ‘প্রচণ্ড’ শব্দটি, সেই নামেই আজ পরিচিত তিনি গোটা দুনিয়ার কাছে। ১৯৯৬ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত সশস্ত্র বিপ্লবে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন প্রচণ্ড। ২০০৬ সালের নভেম্বর মাসে শান্তিচুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।

(Feed Source: abplive.com)