‘শাসকরা থিয়েটারকে সন্দেহের চোখে দেখে’, এক্সক্লুসিভ ‘সেরা বাঙালি’ মেঘনাদ ভট্টাচার্য

‘শাসকরা থিয়েটারকে সন্দেহের চোখে দেখে’, এক্সক্লুসিভ ‘সেরা বাঙালি’ মেঘনাদ ভট্টাচার্য

কলকাতা: ‘থিয়েটার জগতের কাছে করোনাকাল, দুঃস্বপ্ন’, বলেছেন নাট্যকলায় এবিপি আনন্দে (ABP Ananda) এবারের সেরা বাঙালি (Sera Bangali 2022)   মেঘনাদ ভট্টাচার্য (Meghnath Bhattacharya)।  মেঘনাদ  ভট্টাচার্য বলেন, ‘থিয়েটার ব্যাপারটাই হচ্ছে, থিয়েটার সবসময় স্ট্রাগলের মধ্যেই চলে। বিশেষ করে অর্থনৈতিক সঙ্কটাই থিয়েটারে প্রধানতম সঙ্কট।  থিয়েটারে দর্শক সংখ্যা বেশি হয় না। ৫০০ থেকে ৭০০ হয়।  থিয়েটার প্রতিদিন জন্মায় এবং প্রতিদিন মরে বলে, প্রচুর খরচা লাগে। তাই যারা থিয়েটারকে ভালবেসেছে, তাঁদের এই পথটার মধ্য দিয়ে চলতে হয়।  সে কষ্টটা আমরা কষ্ট মনে করি না, সে কষ্টের মধ্যে আনন্দ আছে।  যে আনন্দের জন্য আমাদের পথটা চলা।  এবং থিয়েটার সবসময় মনে করছে, থিয়েটার সমাজের জন্য কিছু করতে চেয়েছে।  মানুষের জন্য কিছু করতে চেয়েছে। এই যে দায়ে থেকে থিয়েটারটা করা , তাতে নিজের কষ্টটা খুব বড় হয়ে দাঁড়ায় না।’

‘থিয়েটার জগতের কাছে করোনাকাল, দুঃস্বপ্ন’

আমরা একটা কঠিন সময় পেরিয়ে এলাম, করোনা কাল। সেই সময় বিনোদন ইন্ড্রাস্ট্রি খুব সাফার করেছে, শো বন্ধ ছিল, থিয়েটার কি আবার মূল স্রোতে ফিরতে পেরেছে ? এবিপি আনন্দের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ মধ্যিখানে তো আমাদের খুবই খারাপ সময় গিয়েছে।  যারা থিয়েটার করেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অন্যত্র রুটিরুজির ব্যবস্থা করে থিয়েটার করেন।  কিন্তু থিয়েটারের উপর নির্ভর করেন, এমন অনেক কলাকুশলি, টেকনিশিয়ান আছেন,  এমনকি যারা টিকিট বিক্রি করেন, তাঁরাও তো এর মধ্যে জড়িত।  তাঁদের খুব দুঃসময় গিয়েছে। সেইসময় থিয়েটারের ছেলেরাই তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তাঁরাই টাকা সংগ্রহ করে রেশন দেওয়া এবং মান্থলি একটা টাকা দেওয়ানোর ব্যবস্থা করেছেন।  এখন সেই জায়গা থেকে আমরা কাটিয়ে উঠেছি।  পাশাপাশি বসে থিয়েটারটা দেখতে হবে।’ থিয়েটার সৃষ্টি করছে যারা এবং যারা দেখতে আসছে, ‘এই দুই ধরনের মানুষের বন্ধনের নামই থিয়েটার’, বলে দাবি  মেঘনাদ  ভট্টাচার্যের। সেই বন্ধনেই একটা গন্ডোগোল করছিল করোনা।  বন্ধন হতে দিচ্ছিল না, পাশাপাশি বসতে দিচ্ছিল না করোনা। সেখান থেকে কেটে উঠেছি, আমরা এখন। আস্তে আস্তে থিয়েটারে জনজোয়ার লেগেছে।

 ‘শাসকরা থিয়েটারকে সন্দেহের চোখে দেখে’

করোনা তো একটা স্বাস্থ্য শত্রু, কিন্তু এর মধ্যে সামাজিক নানা প্রতিবন্ধকতা এসেছে,  আপনার অভিজ্ঞতাটা কীরকম ? এবিপি আনন্দের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আসল কথা হচ্ছে, আমি যে খুব একটা বাধা পেয়েছি তা নয়। আমি খুব প্রত্যক্ষ রাজনীতির নাটক করিনি। মানবিকতার নাটক করেছি। মানুষের কথা বলবার চেষ্টা করেছি। দৈনন্দিন মানুষের সুখ দুঃখের কথাও বলতে পেরেছি। অতোটা আমরা ফেস করিনি। কিন্তু একটা কথা ঠিক, শাসক যারা থাকেন, তাঁরা থিয়েটারকে সন্দেহর চোখে দেখেন। তার থিয়েটারকে বরাবরাই সন্দেহর চোখে দেখেছেন, যে শাসকই আসুক।  তারা থিয়েটারকে খুব বেশি মদতও দিতে চাননি। খুব বেশি আঘাতও করতে চাননি , এই কারণে তাহলে খুব প্রতিক্রিয়া হয়ে যায়।  জ্যান্ত মানুষ তো, তাঁদের পিছুটান নেই। তাঁদেরকে আঘাত করেছে কম।’

(Feed Source: abplive.com)