মালাবো (ইকুয়েটোরিয়াল গিনি): ইবোলার (Ebola) ভয়ঙ্কর স্মৃতি উসকে দাপট দেখাচ্ছে ঘাতক মারবার্গ ভাইরাস (Marburg virus)। সেন্ট্রাল আফ্রিকার (Africa) ‘ইকুয়েটোরিয়াল গিনি’-তে (Equatorial Guinea) এখনও পর্যন্ত এই ভয়ঙ্কর ভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে ৯ জন মারা গিয়েছেন বলে সন্দেহ। ইবোলার মতোই এই মারবার্গ সংক্রমণেও ‘হেমারেজিক ফিভার’ হয়, জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। পরিস্থিতি হাতের নাগালে বেরোনোর আগেই কড়া ব্যবস্থা নিচ্ছে সেন্ট্রাল আফ্রিকার ওই দেশ। সোমবার সরকারি ভাবে জানানো হয়েছে, একটা গোটা প্রদেশে কোয়ারান্টিনে থাকবে।
কী পরিস্থিতি?
আফ্রিকার গ্যাবন ও ক্যামেরুন সীমান্ত লাগোয়া ঘন জঙ্গলপূর্ণ এলাকায় হঠাৎ কেন ‘হেমারেজিক ফিভার’-র বাড়বাড়ন্ত, জানতে গত সপ্তাহেই ছানবিন শুরু করেছিল ‘ইকুয়েটোরিয়াল গিনি’-র সরকার। তবে তখনও পর্যন্ত পরিস্থিতির ভয়াবহতা টের পাওয়া যায়নি। প্রশাসন জানিয়েছিল, মেরেকেটে তিন জনের অল্পস্বল্প উপসর্গ রয়েছে। সপ্তাহ কাটল না। হেলথ মিনিস্টার মিতোহা অন্দো’ও আয়কাবা সাংবাদিক সম্মেলন করে জানান, কিয়ে-টেম প্রদেশে স্বাস্থ্য সতর্কত জারি করা হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও রাষ্ট্রপুঞ্জের বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে লাগোয়া মঙ্গোমো প্রদেশেও ‘লকডাউন’ লাগু করেছেন তাঁরা। এই কড়াকড়ির ফলে কিয়ে-টেম প্রদেশের ৪ হাজার ৩২৫ জন বাসিন্দা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। আর প্রাণহানির নিরিখে যে সংশোধিত হিসেব উঠে এসেছে, তাতে স্পষ্ট গত ৭ জানুয়ারি থেকে ৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে অন্তত ৯টি সন্দেহভাজন সংক্রমিতের মৃত্যু হয়েছে। এখনও কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা বাকি। তখনই বোঝা যাবে যে সত্যিই মারবার্গ সংক্রমণেই ওই ৯ জনের প্রাণ গিয়েছিল কিনা। তবে প্রাথমিক ভাবে সমস্ত ইঙ্গিত সেই দিকেই, বলছেন সেই দেশের চিকিৎসকরা।
কী করে এই ভাইরাস?
মারবার্গ অত্য়ন্ত ছোঁয়াচে এক ধরনের প্যাথোজেন। তীব্র জ্বর, সঙ্গে ব্লিডিং– সব কিছু একসঙ্গে হয় এতে। দেহের একাধিক অঙ্গকে নিশানা করে এই ভাইরাস। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছয় দেহ আর নিজের মতো কাজ করার অবস্থায় থাকে না। ইবোলা যে ‘ফাইলোভাইরাস-পরিবারের’ অংশ, সেই পরিবারেরই আর এক সদস্য মারবার্গ। সাধারণত আফ্রিকান ফ্রুট ব্যাট এই ভাইরাস বহন করে। কিন্তু বাদুরগুড়ি নিজেরা কখনও এতে অসুস্থ হয় না। তবে মানুষ-সহ যে কোনও প্রাইমেট এই ধরনের বাদুরের সংসর্গে থাকলে তা তাদের দেহে ছড়াতে পারে। রক্ত বা দেহরসের মাধ্যমেও এক জনের দেহ থেকে আর এক দেহ সংক্রমণ ছড়াতে পারে। অতীতেও এর প্রাদুর্ভাব হয়েছে। তাতে মৃত্যুহার ২৪ থেকে ৮৮ শতাংশের মধ্যে ঘোরাফেরা করেছে।
সবটা মাথায় রেখে সাবধান হতে চাইছে আফ্রিকার এই দেশ।
(Feed Source: abplive.com)