কলকাতা: অর্থ (Money) মানেই সব সময় অনর্থ? নতুন গবেষণা বলছে, মোটেই নয়। ‘প্রসিডিংস অফ ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সেস’-এ (Proceedings Of National Academy Of Sciences) প্রকাশিত গবেষণাপত্র (Research Paper) অনুযায়ী বেশি রোজগার (Income Increases Happiness) মানে আনন্দের মাত্রাও বেশি। প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটির বিশিষ্ট গবেষক ড্যানিয়েল কানম্যান এবং পেনসিলভ্যানিয়া ইউনিভার্সিটির ম্যাথু কিলিংসওয়ার্থের ওই গবেষণায় এমনই ধরা পড়েছে। তার পরই হইচই। অর্থের সঙ্গে আনন্দের যোগ তা হলে সত্যিই রয়েছে?
কী বলছে গবেষণা?
১৮ থেকে ৬৫ বছর বয়সি ৩৩ হাজার ৩৯১ জনের উপর সমীক্ষা চালিয়ে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন দুই গবেষক। সমীক্ষায় যাঁরা অংশ নিয়েছিলেন তাঁদের প্রত্যেকেই কর্মরত। প্রত্যেকেরই বার্ষিক পারিবারিক আয় ন্যূনতম ১০ হাজার মার্কিন ডলার। গবেষণায় দেখা যায়, সবচেয়ে কম আনন্দে রয়েছেন তাঁরা, যাঁদের বার্ষিক পারিবারিক আয় ১০ হাজার ডলার। বিশদে বললে এঁদের আনন্দ রোজগারের মাত্রার সঙ্গে নির্দিষ্ট ভাবে সম্পর্কিত। কী রকম? দেখা যাচ্ছে, রোজগারের একটি স্তর পর্যন্তই আনন্দের সঙ্গে অর্থের সম্পর্ক রয়েছে এঁদের মধ্যে। যখনই বার্ষিক পারিবারিক আয় ১০ হাজার ডলার ছাড়িয়ে গিয়েছে, তার পর থেকে রোজগার বাড়লেও তাঁদের আনন্দের মাত্রা আর বাড়েনি। এর পর রয়েছেন দ্বিতীয় আর এক শ্রেণি। এঁদের ক্ষেত্রে রোজগার যত বেড়েছে, আনন্দের মাত্রাও ঠিক সে ভাবেই বেড়েছে। তৃতীয় শ্রেণির ক্ষেত্রে ছবিটা আরও আলাদা। সেখানের আনন্দের অনুভূতি বাড়তে শুরু করেছে বার্ষিক পারিবারিক আয় ১০ হাজার মার্কিন ডলার ছাপিয়ে যাওয়ার পর। গবেষক কিলিংসওয়ার্থের কথায়, ‘তিন শ্রেণির কথা বিবেচনা করে একত্রে বললে বলতে হয়, বেশি রোজগারের সঙ্গে আনন্দের বাড়বৃদ্ধির সুনির্দিষ্ট সম্পর্ক রয়েছে।’
ব্যতিক্রম?
তবে গবেষক কিলিংসওয়ার্থ জানাচ্ছেন, এই সম্পর্ক এত সহজ বা সরল নয়। কিছু ক্ষেত্রে আর্থিক স্বাচ্ছন্দ্যের পাশাপাশি তীব্র মনোকষ্টও থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে আরও রোজগার সেই মনোকষ্ট বা খারাপ থাকার অনুভূতি কমাতে পারে না। কিন্তু তাঁরা ব্যতিক্রমই, মনে করেন গবেষক কিলিংসওয়ার্থ। বাকিদের ক্ষেত্রে বেশি রোজগার বাড়তি আনন্দের সঙ্গে সম্পর্কিত, বলছেন দুই গবেষক। এই সমীক্ষার বাস্তব দুনিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ উপযোগিতা রয়েছে বলেও মনে করিয়েছেন তাঁরা। যেমন যাঁদের ক্ষেত্রে আনন্দের সঙ্গে রোজগারের সম্পর্ক রয়েছে তাঁরা করের হার নিয়ে বেশি ভাবনাচিন্তা করবেন। বা তাঁদের অধস্তন কর্মচারী থাকলেও কী ভাবে তাঁদের ঠিকঠাক পারিশ্রমিক দেওয়া যায়, সেটিও মাথায় রাখবেন এঁরা। কিন্তু একটি বিষয় দুই গবেষকই মনে করিয়েছেন। অর্থ মোটেও আনন্দের একমাত্র নির্ণায়ক মানদণ্ড নয়। কাজেই সেই ভাবে এই গবেষণার ব্যাখ্যা করা ভুল।
(Feed Source: abplive.com)