Shakib Khan Controversy: ২ কোটি ক্ষতিপূরণ দিতে রাজি ধর্ষণে অভিযুক্ত শাকিব খান! মীমাংসার পথ খুঁজতে প্রযোজকের সঙ্গে বৈঠক

Shakib Khan Controversy: ২ কোটি ক্ষতিপূরণ দিতে রাজি ধর্ষণে অভিযুক্ত শাকিব খান! মীমাংসার পথ খুঁজতে প্রযোজকের সঙ্গে বৈঠক

Shakib Khan Controversy, Bangladesh, Producer Vs Shakib Khan, জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: শাকিবের খানের বিরুদ্ধে একাধিক বিস্ফোরক অভিযোগ করেন ‘অপারেশন অগ্নিপথ’ সিনেমার অন্যতম প্রযোজক রহমত উল্ল্যাহ। সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড়ের গতিতে ভাইরাল হয়ে যায় খবর। সংবাদমাধ্যম কোনওভাবেই যোগাযোগ করে উঠতে পারেনি শাকিব খানের সঙ্গে। এমনকী রহমত উল্ল্যাহ দাবি করেন যে, তাঁরাও কোনওভাবে যোগাযোগ করতে পারেননি শাকিবের সঙ্গে। তবে যখন এই ঘটনায় উত্তাল হয়ে ওঠে বাংলাদেশ, তখন এই ঘটনায় অবশেষে মীমাংসার পথ খুঁজতে একটেবিলে বসলেন শাকিব ও প্রযোজক। এক ঘণ্টা ধরে চলে এই আলোচনা।

শাকিব খানের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনেছেন অস্ট্রেলিয়াবাসী বাংলাদেশী প্রযোজক রহমত উল্ল্যাহ। বুধবার শাকিব খানের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিতে লিখিত অভিযোগ জমা করেছেন তিনি। সেখানে তিনি শাকিব খানের অপেশাদার আচরণ, চুক্তিভঙ্গ ও ধর্ষণের মতো বিস্ফোরক সব অভিযোগ তুলেছেন। একটি তিন পাতার দীর্ঘ অভিযোগপত্র জমা করেছেন তিনি। বৃহস্পতিবার দীর্ঘ ১ ঘণ্টার আলোচনা শেষে প্রযোজক বলেন, ‘শাকিব নিজেই উদ্যোগী হয়ে তাঁর সঙ্গে মীমাংসায় বসতে চেয়েছেন। আজ বিকেল পাঁচটা থেকে এক ঘণ্টা ধরে চলে এই মীমাংসা। আমরা বসেছিলাম। কিন্তু ঘটনার এখনো কোনো মীমাংসা হয়নি। তবে শাকিব আমাকে আলোচনার মাধ্যমে আশ্বাস দিয়েছেন, হয়তো তিনি ছবি করে দেবেন অথবা তিনি বিনিয়োগ করা টাকা ফেরত দেবেন। তখন আমি তাঁকে বলেছি, অনেক পুরোনো হয়ে গেছে। এখন আর আমি ছবিটি করব না। তখন শাকিব খান নিজ থেকেই বলেছেন, তিনি প্রযোজক খুঁজে সিনেমাটির কাজ শেষ করবেন।’ সিনেমায় এখনও অবধি নিয়োগ করা ২ কোটি টাকাও ফেরত দিতে রাজি শাকিব।

ধর্ষণের অভিযোগ প্রসঙ্গে কী বলছেন শাকিব? বৈঠকে উপস্থিত প্রযোজক সমিতির নেতা খোরশেদ আলম বলেন, ‘সবাই তো মীমাংসা চান, সে জন্যই আসছেন। সেসব নিয়েই শাকিব কথা বলেছেন। তিনি একটা সমাধান চান। সে লক্ষ্যেই আলোচনা শুরু হয়েছে। আজ এটুকু নিয়েই কথা হয়েছে।’

প্রসঙ্গত, রহমত উল্ল্যাহর অভিযোগ পত্রে বলা হয়েছে, “২০১৭ সালে পূর্বচুক্তি মোতাবেক অভিনেতা শাকিব খান ‘অপারেশন অগ্নিপথ’ নামক সিনেমার কাজে অস্ট্রেলিয়ায় আসেন। আমি সেই চলচ্চিত্রের অন্যতম প্রযোজক। তার মতো একজন বিখ্যাত অভিনেতাকে নিজের চলচ্চিত্রে অভিনয় করাতে পারব জেনে পুলকিত ছিলাম। চলচ্চিত্রটি মুক্তি পেলে ব্যবসাসফল হবে সেই বিশ্বাস ছিল। ‘অপারেশন অগ্নিপথ’ মুক্তি পেলে সেটি হতো অস্ট্রেলিয়ায় অভিনীত প্রথম বাংলাদেশি চলচ্চিত্র। আমার এবং এটার সাথে সংশ্লিষ্ট সকলের আশা ছিল সিনেমাটির হাত ধরে অস্ট্রেলিয়া এবং বাংলাদেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক সম্পর্কে নতুন একটি অধ্যায় রচিত হবে। শাকিব খান একজন বিখ্যাত অভিনেতা। তার অভিনীত চলচ্চিত্রের দর্শক চাহিদা অনেক। তাই আমাদের প্রত্যাশা ছিল তিনি আমাদের সাথে পেশাগত আচরণ করবেন। অথচ, আজ পর্যন্ত এই সিনেমার কাজ তিনি শেষ করেন নাই।‘অপারেশন অগ্নিপথ’ ছবির শুটিং চলাকালীন শাকিব খান দ্বারা যেসব ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন, তার একটি তালিকা উল্লেখ করেছেন এই প্রযোজক। তা হলো-

১.আমাদের পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি নেয়া সত্ত্বেও কোনও রকমের পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই শুটিং বাতিল করে দিতেন।

২. তার খাদ্যাভ্যাসজনিত চাহিদা ছিলো এমন যে, হঠাৎ করে তিনি অদ্ভুত রকমের খাবার খেতে চাইতেন; আর তাতেই পুরো শুটিং ইউনিট নিয়োজিত হতো তার পছন্দের খাবার খুঁজে বের করার জন্যে। এতে করে শুটিংয়ের কাজে যেমন ব্যাঘাত হতো, তেমনি চলচ্চিত্রের নির্মাণ বায় নিয়ন্ত্রণহীনভাবে বেড়ে গিয়েছিল।

৩. তিনি শুটিং করতে আসতেন নিজের ইচ্ছা মতো সময়ে। অনেক সময় এমন হতো যে অত্যন্ত ব্যয়বহুল সেট বানিয়ে আমরা তার জন্যে অপেক্ষা করতাম। তিনি হয়ত শেষ বেলায় দুই এক ঘণ্টা অভিনয় করার জন্য আসতেন। এভাবে শুটিং না করেও সকলের বেতন দিয়ে আমরা শুধু অপেক্ষা করতাম তিনি আসবেন বলে।

৪. এখন বর্ণনা দিচ্ছি তার ব্যয়বহুল যৌনাচারের। তাকে নিয়মিত পতিতালয়ে নিয়ে যেতে হতো, আর তা না হলে তার হোটেল কক্ষে অস্ট্রেলিয়ান যৌনকর্মীদের নিয়ে আসতে হতো। এই ব্যাপারটি ছিল প্রতিদিনের রুটিন। কখনো কখনো একাধিকবার। এই সকল যৌনকর্মীদের মোটা অংকের পারিশ্রমিক আমাদেরকেই দিতে হতো।

৫. একবার তিনি আমাদের একজন নারী সহ-প্রযোজককে কৌশলে ধর্ষণ করে বসলেন। ভুক্তভোগী এই নারীকে তিনি অত্যন্ত পৈশাচিকভাবে নির্যাতন করলেন। গুরুতর জখমসহ রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়েছিল। নির্যাতিতা তখন এই ব্যাপারে অস্ট্রেলিয়ান পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। (এনএসডাব্লিউ পুলিশ রেফারেন্স নং: ই ৬২৪৯৪৯৫৯) নির্যাতিতা নিজেও একজন বাংলাদেশ বংশোদ্ভূত নারী। আমি সেই ফৌজদারি অভিযোগের সাক্ষী ছিলাম। এই ঘটনার পর তিনি এবং তার পরিবার সামাজিকভাবে যেই গ্লানি এবং কুৎসার স্বীকার হন, তা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। ধর্ষণের বিচার চাইতে গিয়ে একটা পর্যায়ে তার নিজের এবং তার পরিবারের টিকে থাকাটাই অসম্ভব হয়ে পড়ে। ওইদিন আমরা যখন সহকর্মীকে নিয়ে হাসপাতালে ব্যস্ত, শাকিব খান সেইদিন কাউকে কিছু না জানিয়ে অস্ট্রেলিয়া থেকে চুপিসারে চলে যান।

রহমত উল্লাহর দাবি, পরবর্তীতে তিনি শাকিব খানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন। জানা যায় যে এই মামলায় অস্ট্রেলিয়ায় আটকও হয়েছিলেন সুপারস্টার। অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ‘২০১৮ সালে তিনি (শাকিব খান) আবার অস্ট্রেলিয়ায় আসলে ধর্ষণের অভিযোগে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন। সামাজিক চাপে এবং আরও নিগ্রহের ভয়ে নির্যাতিতা প্রকাশ্যে মুখ খুলতে রাজি না হওয়ায় শাকিব সেই যাত্রায় ছাড়া পেয়ে যান।’ সেই মামলায় ছাড়া পেয়ে কাউকে কিছু না জানিয়েই তড়িঘড়ি অস্ট্রেলিয়া ছেড়ে দেশে ফিরে যায় শাকিব খান। ‘অপারেশন অগ্নিপথ’ ছবির পরিচালনা করছিলেন আশিকুর রহমান। এতে শাকিবের নায়িকা হিসেবে যুক্ত হয়েছিলেন সিবা আলী খান। তাদের পক্ষ থেকে অবশ্য কোনও অভিযোগের খবর প্রকাশ্যে আসেনি।

(Feed Source: zeenews.com)