কেরল: নাম কমলাক্কানি৷ বয়স, আনুমানিক ১০৮ বছর৷ জন্ম, ১৯১৫ সাল৷ পেশা ছোট এলাচের খেতের শ্রমিক৷ পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বর ১০০ -র মধ্যে ৯৭৷ পড়াশোনা আজকালকার প্রজন্মের অনেকাংশের কাছেই এখন জলভাতের মতো৷ নামী স্কুল, ততোধিক দামী বই, খাতা, ইউনিফর্ম৷ এই প্রজেক্ট, সেই প্রজেক্টে মুড়ি মুড়কির মতো টাকা খরচ৷ তা সত্ত্বেও পড়াশোনা করার, শেখার ইচ্ছেটা চোখে পড়ে হাতে গোনা মানুষের মধ্যে৷ বেশিরভাগেরই দৌড় ওই নম্বর আর কেরিয়ারের দিকে৷ কিন্তু, জীবনের প্রায় শেষ সীমায় দাঁড়িয়ে কমলাক্কানিরা আর কিছুই চাননা৷ চান শুধু শিখতে৷ লেখাপড়া শিখতে৷
জ্ঞান হওয়া ইস্তকই ছোট এলাচের খেতে কাজ করা শুরু৷ তামিলনাড়ুর ঠেনি জেলায় আদি বাস হলে, পরবর্তীকালে কমলাক্কেনির পরিবার চলে আসে কেরলের বন্দনমেদুতে৷
বেশ কিছুদিন হল কেরল সরকারের সম্পূর্ণম শাস্ত্র সাক্ষরতা প্রকল্পের অধীনে নিজের নাম নথিভুক্ত করেছিলেন কমলা৷ এই প্রকল্পের মাধ্যমে প্রবীণ ব্যক্তিদের যত্ন সহকারে লেখাপড়া সেখানোর বিষয়ে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে সে রাজ্যের সরকার৷ অদম্য ইচ্ছা, অধ্যবসায় এবং পরিশ্রম করে বর্তমানে তামিল এবং মালায়লাম দুই ভাষাতেই সমান দক্ষ হয়ে উঠেছেন কমলা৷ স্বাক্ষরতা প্রকল্পের পরীক্ষায় ১০০ র মধ্যে ৯৭ নম্বর পেয়েছেন তিনি৷ তাঁকে দেখে অনুপ্রাণিত প্রকল্পের বাকি প্রবীণ সদস্যেরা৷
কমলাক্কানির নাতি বলেন, ‘‘সামনের মাসেই ঠাকুমা ১০৯ বছর পূর্ণ করবে৷ অনেক দিন থেকেই দেখছি ঠাকুরমার লেখাপড়ার দিকে খুব ঝোঁক৷ খুব শেখার ইচ্ছে৷ এর আগে কিছুদূর পড়াশোনা করেছিলেন তামিলনাড়ুতে৷ এখানে ফের সম্পূর্ণম শাস্ত্র প্রকল্পের অধীনে নাম নথিভুক্ত করেন৷ এখন তো সবচেয়ে বেশি নম্বর পেয়ে সরকারের কাছে সম্মান স্মারকও পেয়েছেন উনি৷’’