অবৈধ প্রেম-ঈর্ষা-আগুন…! মা-কে ‘ফাঁসাতে’ নাবালিকা মেয়ের হাড়হিম কীর্তি….

অবৈধ প্রেম-ঈর্ষা-আগুন…! মা-কে ‘ফাঁসাতে’ নাবালিকা মেয়ের হাড়হিম কীর্তি….

কলকাতা: তখনও ভোরের আলো সেই ভাবে ফোটেনি। হঠাৎই ঘুম ভাঙতেই, গোটা ঘরে কালো ধোঁয়া। জ্বলছে আসবাব। ফোন যায় দমকলে। ফোন পান হরিদেবপুর থানার কর্তব্যরত পুলিশ কর্মীরা। সকলেই ছোটেন সেখানে। আগুন নেভানো হয়। দমকল ফিরে আসে। এই পর্যন্ত দেখে মনে হয়েছিল নেহাতই একটা ফ্ল্যাটে আগুনের ঘটনা। কিন্তু আগুনের নেপথ্যে রয়েছে বড় রহস্য তা আঁচ করে উঠতে পারেনি পুলিশ।

সোমবার একটু বেলা গড়াতেই হরিদেবপুর থানায় এসে হাজির ওই ফ্ল্যাটের নাবালিকা কিশোরী। হাতে কিছু প্রিন্ট আউট। পুলিশ সূত্রে খবর, ওই কিশোরী থানায় এসে অভিযোগ করে তার মা সোনালি চন্দ ও মায়ের বন্ধু প্রসূন মান্না ষড়যন্ত্র করে তাকে (নাবালিকাকে) খুন করার চেষ্টা করেছে। মেয়েকে খুনের পরিকল্পনা করেই সোনালি ভোরে ঘরে আগুন লাগিয়ে দেয়। এখানেই শেষ নয়, খুনের ষড়যন্ত্রের সপক্ষে পুলিশের কাছে তুলে ধরে সোনালি ও তার বন্ধুর টেক্সট মেসেজের স্ক্রিনশট নেওয়া প্রিন্ট কপি।

ওই তথ্য প্রমাণ দেখেই প্রাথমিকভাবে সোনালিকে নিতে আসা হয় থানায়। মেয়ের অভিযোগের ভিত্তিতে মা-কে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে গ্রেফতার করা হয় সোনালির বন্ধুকেও। তবে এখানেই শেষ নয়। ঘটনা শুনে পুলিশের মনে সন্দেহ দানা বাঁধে। মঙ্গলবার সকাল থেকেই ওই কিশোরীকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে তদন্তকারীরা। পুলিশের দাবি শুরু থেকেই বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করতে থাকে ওই কিশোরী। কিন্তু নিজের বয়ানের ফাঁদে পড়ে যায় ওই কিশোরী। অবশেষে পুলিশের কাছে ওই কিশোরী স্বীকার করে নেন মা নন, ঘরে আগুন লাগায় সে নিজেই।

তাহলে মায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ? ষড়যন্ত্র সংক্রান্ত মেসেজ? এখানেই তদন্তকারীরা রহস্য ভেদ করেন। ওই কিশোরী পুলিশকে জানায়, মায়ের মোবাইল ফোনটি ক্লোন করে সে। এরপর মা ও মায়ের বন্ধুর মধ্যে যে টেক্সট মেসেজ হয়েছে তারই ভুয়ো টেমপ্লেট তৈরি করে। আর তাতেই চ্যাটগুলো এমন ভাবে লেখা হয় যাতে পুলিশ দেখলেই বিশ্বাস করে ফেলবে। কিন্তু পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে শেষ রক্ষা হল না। মাকে ফাঁসাতেই এমন পরিকল্পনা নিয়েছিল ওই কিশোরী, দাবি পুলিশের। সূত্রের দাবি ফোনের ব্লুটুথের সূত্র ধরেই রহস্য ভেদ হয়েছে।

পুলিশের কাছে মিথ্যা অভিযোগ করা, বিভ্রান্ত করার অভিযোগে কিশোরীর বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে তাকে পাঠানো হয় হোমে। বুধবার জুভেনাইল জাস্টিট বোর্ডের সামনে কিশোরীকে হাজির করবে পুলিশ। অন্যদিকে রহস্য উন্মোচনের আগেই আদালতে পেশ করা হয় সোনালি ও তার বন্ধুকে।

এরমধ্যে সমস্ত বিষয় স্পষ্ট হতেই আদালতে পুরো বিষয় জানায় হরিদেবপুর থানার পুলিশ। দুজনের একদিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। তবে পুলিশের অনুমান বাবা মায়ের সম্পর্কের টানাপোড়েন, আলাদ থাকা সমস্ত কিছুর প্রভাব পড়ে থাকতে পারে কিশোরীর মনে। কিশোরীর বাবাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে পুলিশের তরফে।

(Feed Source: news18.com)