প্রাতর্ভ্রমণে বেরিয়ে প্রাণ গেল, গুলি লাগল মাথায়, লাহৌরে খুন হলেন খালিস্তানি নেতা

প্রাতর্ভ্রমণে বেরিয়ে প্রাণ গেল, গুলি লাগল মাথায়, লাহৌরে খুন হলেন খালিস্তানি নেতা

ইসলামাবাদ: প্রাতর্ভ্রমণে বেরিয়ে পাকিস্তানে খুন হলেন ভারতে ‘ওয়ান্টেড’ ঘোষিত খালিস্তানি নেতা। অজ্ঞাত পরিচয় এক আততায়ী তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। সরাসরি মাথায় এসে গুলি লাগে তাঁর। গুলি চালিয়েই ঘটনাস্থল থেকে আততায়ী চম্পট দেয় বলে দাবি করেছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। এই নিয়ে চলতি বছরে ভারতে ‘সন্ত্রাসবাদী’ ঘোষিত দুই জঙ্গি পাকিস্তানে খুন হলেন (Khalistani Leader Murdered)। এর আগে, ফেব্রুয়ারি মাসে হিজবুল মুজাহিদিনের স্বঘোষিত কম্যান্ডার বশির আহমেদ পীর খুন হন রাওয়ালপিণ্ডিতে। তাঁকেও গুলি করে হত্যা করে অজ্ঞাত পরিচয় আততায়ীরা (Pakistan News)।

শনিবার সকালে ৬টা নাগাদ পাকিস্তানে খুন হন খালিস্তান কম্যান্ডো ফোর্সের (KCF) প্রধান পরমজিৎ সিংহ পঞ্জওয়ার  (Paramjit Singh Panjwar) ওরফে মালিক সর্দার সিংহ। ৬৩ বছর বয়সি পরমজিৎ আগে থেকেই ভারতে ‘ওয়ান্টেড’ ঘোষিত। বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইন ২০২০-র আওতায় তাঁকে সন্ত্রাসবাদী হিসেবে চিহ্নিত করেছে দিল্লি। এতদিন লাহৌরেই ছিলেন তিনি।

শনিবার সকালে সেখানকার জওহর টাউন এলাকার সানফ্লাওয়ার হাউজিং সোসাইটির পার্কে হাঁটতে বেরোন। সেই সময়ই দুই আততায়ী তাঁর উপর হামলা চালায় বলে অভিযোগ। আততায়ীদের ছোড়া একটি গুলি মাথায় এসে লাগে পরমজিতের। কিছু বুঝে ওঠার আগেই মোটর সাইকেলে চেপে দুই আততায়ী ঘটনাস্থল থেকে চম্পট দেয় বলে জানা গিয়েছে।

হামলার সময় দেহরক্ষী নিয়েই বেরিয়েছিলেন পরমজিৎ। এলোপাথাড়ি গুলিবৃষ্টিতে পরমজিতের এক দেহরক্ষীও আহত হন। পরে হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁরও। সকালে  হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরই পরমজিৎকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। পাকিস্তানের পঞ্জাব প্রদেশের পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে।

পরমজিতের হত্যাকে ‘হাইপ্রোফাইল’ ঘটনা হিসেবেই দেখা হচ্ছে। পঞ্জাব প্রদেশের পুলিশের পাশাপাশি, পাক গুপ্তচর সংস্থা ইন্টার সার্ভিস ইনটেলিজেন্স (ISI), সেনা গুপ্তচর (MI) এবং সন্ত্রাস মোকাবিলা বিভাব (CTD) বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। যেখানে খুন হন পরমজিৎ, শনিবার ওই এলাকায় তল্লাশি  চালানো হয়। সংবাদমাধ্যমকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি সেখানে।

১৯৮৮ সালে অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল তথা ভাখরা বিয়াস ম্যানেজমেন্ট বোর্ডের তৎকালীন চেয়ারম্যান চণ্ডীগড়ে খুন হন। সেই মামলায় নাম জড়ায় পরমজিতের। এ ছাড়াও, ১৯৮৯ সালে পাটিয়ালিয়া থাপর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ১৯ পড়ুয়ার হত্যা, ওই বছরই এসএসপি পাটালা গোবিন্দ রামের ছেলে রাজন বাইন্সের হত্যায়ও নাম জড়িয়েছে তাঁর। তার পরই পঞ্জাব পুলিশের ‘ওয়ান্টেড’ তালিকায় নাম ওঠে তাঁর। আট থেকে নয়ের দশকে পঢ্জাবে একের পর এক রোমহর্ষক অপরাধের নেপথ্যে পরমজিৎ যুক্ত ছিলেন। আজও তা মনে করে শিউড়ে ওঠেন অনেকে।

১৯৮৬ সালে খালিস্তান কম্যান্ডো ফোর্সে যোগ দেন পরমজিৎ। পাকিস্তান থেকে তিনি ISI-এর সাহায্য পেতেন বলে অভিযোগ। কাঁওয়ারজিৎ সিংহের মৃত্য়ুর পর সংগঠনের দায়িত্ব পান পরমজিৎ। ১৯৯৫-’৯৬ নাগাদ পাকিস্তানে গিয়ে আশ্রয়  নেন। পাকিস্তানে চরমপন্থীদের তিনি অস্ত্রশিক্ষা দিতেন বলেও শোনা যায়। ভারতে অনুপ্রবেশ, অস্ত্র, মাদক সরবরাহেও তাঁর ভূমিকার কথা উঠে আসে। বিচ্ছিন্নতাকামীদের যোগাযোগে ব্যবহৃত রেডিও পাকিস্তানের পরিচালনা কার্যেও যুক্ত ছিলেন। যদিও  বিগত কয়েক বছর ধরে তেমন সক্রিয় ছিলেন না পরমজিৎ। তাঁর খুন হওয়ার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছে পাক সরকার। পঞ্জাব পুলিশকে বলা হয়েছে, ISI-এর হাতে তদন্তভার ছেড়ে দিতে।

(Feed Source: abplive.com)