Exclusive: ভিক্ষে করলে কী হবে? লাল মাটির শিকড় এখনও লড়াইয়ের শক্তি যোগায় সাবিনাকে!

Exclusive: ভিক্ষে করলে কী হবে? লাল মাটির শিকড় এখনও লড়াইয়ের শক্তি যোগায় সাবিনাকে!

#কলকাতা : বোলপুরে, বাঙালি পাড়ায় আমার বাপের বাড়ি ছিল।বাবা কৃষক ছিল। এইট অবধি বাসরা পাড়া হাইস্কুলে পড়েছিলাম। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরাপত্তার কাজও করেছিলাম। বিয়ে হল। আঠেরো বছর আগে স্বামী মারা গেল। এক পঙ্গু মেয়ের জন্য, পেট চালাতে এখন, ভিক্ষা করে খাই।’ বলছিলেন ষাট বছরের সাবিনা খাতুন।’

দুপুর ১২:৩০ নাগাদ ধর্মতলার ওয়াই চ্যানেলের সামনে রাস্তার পাশে বসে কাঁচা টাকা গুনতে দেখা যায় তাঁকে।একবার নয় সাবিনা বেশ কয়েক বার গুনেও পঞ্চাশ টাকায় পৌঁছাতে পারছিল না।খানিক রাগী আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখলেন,বেশ চোখ রাঙাচ্ছে নটসূর্য। সেই কোন সকালে ব্যারাকপুর থেকে ট্রেনে করে শিয়ালদহ এসেছিল।সেখান থেকে হেঁটে ধর্মতলা। সকাল থেকে ঘুরে ৪৭টাকার বেশি রোজগার হয়নি।

 শনিবার দুপুর যেন বেশ অপরিচিত ছিল ওর কাছে। বাড়ি ব্যারাকপুর ,মল্লিকপুর রেল লাইন ধার বস্তিতে। বাড়িতে ১৮ বছরের পঙ্গু মেয়ে নূরজাহান। মেয়ে জন্ম থেকেই পঙ্গু। সকালে আসার সময় পাশের বাড়ির এক মহিলার কাছে,টাকা দিয়ে আসে। সে খাওয়ায়। সারাদিন পরে ১০০/১৫০ টাকা যা ভিক্ষে করে পায়। সেটা নিয়ে বাড়ি ফেরে। খরচ অনেক, জ্বালানী হিসেবে কেরোসিন তেল কেনে। বিদ্যুৎ নেই। বাজারে এক লিটার কেরোসিন ৯০ টাকা। ইচ্ছে থাকলেও, এক তরকারি সেদ্ধ ভাতের বেশি খরচ করার ক্ষমতা নেই।

তবে লক্ষ্মীর ভান্ডার আর বিনা পয়সায় চাল গম, অনেকটা বেঁচে থাকার রসদ জুগিয়েছে। স্বামী মরে যাওয়ার পর প্রতিবন্ধী মেয়ের অসুখ থেকে আরম্ভ করে সবই ৬০ বছরের সাবিনা সামলান।বেশ গর্বের সঙ্গে বলছিলেন, ‘বোলপুরের মেয়ে আমি। রবীন্দ্রনাথের মাটির গন্ধ আমার গায়ে।কপালের দোষে আজ ভিখারি। ভিক্ষে করে খাই।’

রবিবার অনেক বেলায় সাবিনাকে দেখা গেল। ঠিক একই জায়গায়। আজ তার মনে অনেক দুঃখ। ঝড়ে কুঁড়েটার ক্ষতি হয়েছে। গতকাল অনেক রাত হয়ে গিয়েছিল বাড়ি ফিরতে।’ আজ আর ভিক্ষে পাবো না। আবার ঝড় উঠবে বলছে। মেয়েটার শরীর ভালো নেই।’

 লাল মাটির মেয়েটা যেন,কবির কবিতার পংক্তির মত, ধর্মতলায় পড়ে আছে। চোখে মুখে একটা আদর্শের ছায়া। একটাই কথা, ‘পেটে ধরেছি ফেলে তো আর দিতে পারি না।’

Published by:Sanjukta Sarkar

(Source: news18.com)