আপেল চাষ হচ্ছে বাঁকুড়ায়! তীব্র গরমে কীভাবে সম্ভব এই পাহাড়ি ফলের চাষ? বিরাট চমক

আপেল চাষ হচ্ছে বাঁকুড়ায়! তীব্র গরমে কীভাবে সম্ভব এই পাহাড়ি ফলের চাষ? বিরাট চমক

বাঁকুড়া: আপেল চাষ হচ্ছে বাঁকুড়ায়! ভাবা যায়। যে ফল পাহাড়ের নাতিশীতোষ্ণ জলবায়ুতে চাষ হয় সেই ফল পরীক্ষামূলকভাবে বাঁকুড়ার বিভিন্ন জায়গায় চাষ করা হচ্ছে। আপেল ফলনের জন্য প্রয়োজনীয় তাপমাত্রা হচ্ছে ৫-৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাঁকুড়ার মত চরমভাবাপন্ন জলবায়ুর এলাকায় লাল রুক্ষ মাটিতে যে আপেল চাষ আজ থেকে পাঁচ বছর আগে পর্যন্ত অসম্ভব বলে মনে হত। সেই আপেল পরীক্ষামূলকভাবে চাষ হচ্ছে বাঁকুড়ায় এবং তাদের দেখা দিয়েছে ফুল এবং ফলও।

বিশেষ করে বাঁকুড়া জেলার দামোদরপুরে অবস্থিত পরশমনি ডেভেলপমেন্ট এন্ড রিসার্চ ফাউন্ডেশনে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ফার্মিং সিস্টেম রিসার্চ এর সহযোগিতায় পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করা হচ্ছে আন্না, দোসার্ট গোল্ডেন, HRMN-99 প্রজাতির আপেলের পরীক্ষামূলক চাষাবাদ। প্রায় ৮০ টি আপেল গাছ বসানো আছে পরশমণিতে। প্রায় তিন বছর ধরে চলছে এই চাষাবাদ। জি করণ করতে গেলে প্রয়োজন কমপক্ষে পাঁচ বছরের অভিজ্ঞতা।

ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড রিসার্চ ফাউন্ডেশনের মালিক সিদ্ধার্থ সেন জানান “বিগত তিন বছর ধরে প্রায় প্রত্যেকটি গাছেই ফুল এবং ফল ধরছে। আপেল চাষের জন্য ঠিক কতটা জলের প্রয়োজন বা মাটিতে কি কি খনিজের প্রয়োজন তা নিয়ে গবেষণাও চলছে। বিগত তিন বছর এবং তার আগেও কয়েক বছরের অভিজ্ঞতা থেকে বলবো যে লাল ল্যাটেরাইট মাটিতে যদি আপেল চাষ হয় তাহলে সেটা একটি কৃষি বিপ্লবের সমান। আমি যথেষ্ট আশাবাদী। তবে এর বাণিজ্যিকরণ করতে গেলে আরও সময় লাগবে।”

জেলা উদ্যানপালন দফতরের অভিজ্ঞ আধিকারিক এবং ফিল্ড অফিসার সঞ্জয় সেনগুপ্ত এই বিষয়ে জানান , “বাঁকুড়ার লাল মাটি এবং বাঁকুড়া জলবায়ু ইজরায়েলের সবুজ আন্না প্রজাতির আপেল চাষের জন্য উপযুক্ত। এক্ষেত্রে একমাত্র বাধা হল ফলনের সময়ের তাপমাত্রা। আন্না আপেল বা সবুজ আপেল ফলনের জন্য প্রয়োজনীয় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা হল ৮ ডিগ্রি। এই তাপমাত্রা খুব কমই বাঁকুড়া জেলায় আমরা পাই। একবার ফলন হয়ে গেলে প্রায় ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রা সহ্য করতে পারে এই আপেল।”

তিনি এও জানান যে উত্তরপ্রদেশের একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিশেষ প্রজাতির আপেলের চারা পাঠানো হবে তালডাংরা হর্টিকালচার রিসার্চ ফাউন্ডেশনে। তারপর জেলা উদ্যান পালন দফতরের সহায়তা একটি গবেষণা হতে চলেছে আপেল সংক্রান্ত। বাঁকুড়া জেলায় আঙুর ফলাতে সময় লেগেছিল প্রায় সাড়ে চৌদ্দ বছর। এখন বাঁকুড়া জেলার বিভিন্ন জায়গায় সুমিষ্ট আঙ্গুর পাওয়া যায়। ঠিক সেই রকমই পরীক্ষামূলকভাবে বিগত কয়েক বছর ধরেই চাষ করা হচ্ছে আপেল। বাঁকুড়ার পরশমণি এই পরীক্ষামূলক চাষাবাদ বেশ বড় ভাবেই করছে। শুধুমাত্র প্রয়োজন একটু ধৈর্য ও সময়, তাহলেই হয়তো অদূর ভবিষ্যতে বাঁকুড়ার আপেল ছড়িয়ে যাবে গোটা পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতবর্ষে এমনটাই আশা রাখছে বাঁকুড়ার মানুষ।

(Feed Source: news18.com)