কালিয়াগঞ্জ: ভোজ্য তেলের দাম আকাশছোঁয়া, রান্নার গ্যাসের দাম দিন দিন বাড়ছে। বাড়ছে অন্যান্য জিনিসপত্রের দামও। তবে এরই মধ্যে উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জের এক তেলেভাজা বিক্রেতা এখনও পর্যন্ত মাত্র এক টাকায় চপ বিক্রি করছেন।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন তেলেভাজার ব্যবসা করে রোজগারের কথা বলছেন সেই সময় কাকতালীয় ভাবে ওই তেলেভাজা বিক্রি করছেন এক মহিলা, নাম গীতা ঘোষ। জ্বালানির আঁচে চোখে জল আমজনতার, তবে অগ্নিমূল্য বাজারেও ১ টাকায় চপ বিক্রি করে তাক লাগিয়ে দিচ্ছেন উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জের গীতা।
গীতার চপের দোকান
বাজারদরের পারদ যতই ঊর্ধ্বমুখী হোক তাঁর দোকানে ষোলো আনা ফেললেই মিলবে আলুর চপ, লঙ্কার চপ, রসুনের চপ। তাঁর এই ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড এলাকার ‘আত্মনির্ভরতা’র পথ দেখাচ্ছে বলেও দাবি এলাকাবাসীর। কালিয়াগঞ্জের শান্তি কলোনির শ্মশানের পাশেই বসেন গীতা দেবী। প্রতিদিন সন্ধ্যা ছটাতেই খুলে যায় তাঁর দোকানের ঝাঁপ। তাঁর তেলেভাজার দোকান বন্ধ হয় কোনও দিন রাত ১১টা, আবার কোনও কোনও দিন রাত বারোটায়।
গীতা দেবীর দোকান খোলার সঙ্গে সঙ্গে দম ফেলার ফুরসত থাকে না তাঁর। রাত দশটা অবধি দোকানে খরিদ্দারদের আনাগোনা চলতেই থাকে। জানা যায়, গীতা দেবী এই দোকান করে আসছেন গত ৩০ বছর ধরে। বছরের বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রকম তাঁর দোকানে চপ বানিয়ে ইতিমধ্যে কালিয়াগঞ্জ শহর শুধু নয়, আশপাশের এলাকার মধ্যেও তাক লাগিয়ে দিয়েছেন তিনি। তিনি এই কাজ একাই করে আসছেন বছরের পর বছর ধরে।
চপ বিক্রেতা গীতা ঘোষ জানান, এই তেলেভাজার দোকানের উপর নির্ভর করেই তাঁর তিন-তিনটি মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন তিনি। গত ২০ বছর আগে তাঁর স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে তাঁকে একাই লড়াই করতে হয়েছে সংসারকে আগলে রাখার জন্য। তারপর একে একে তিন মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন তিনি। এখন তিনি একাই চপ বানিয়ে বিক্রি করে উপার্জন করেন তা দিয়ে কোনও রকমে তাঁর সংসার চলে যায় মাত্র।
(Feed Source: news18.com)