![৫ বছরে রেকর্ড মাত্রায় বাড়বে উষ্ণতা! বিপদে মানুষ, নয়া গবেষণায় উদ্বেগে বিজ্ঞানীরা ৫ বছরে রেকর্ড মাত্রায় বাড়বে উষ্ণতা! বিপদে মানুষ, নয়া গবেষণায় উদ্বেগে বিজ্ঞানীরা](https://images.news18.com/static-bengali/2023/05/Global-Warming.jpg?im=FitAndFill,width=1200,height=675)
আগামী ৫ বছরে গোটা বিশ্বেই রেকর্ড হারে বাড়তে চলেছে উষ্ণতা। এর জন্য দায়ী হতে পারে মনুষ্যসৃষ্ট কিছু কারণ। শুধু তা-ই নয়, এর পিছনে আর একটা কারণও রয়েছে। সেটা হল এল নিনো। বুধবার এমনটাই ঘোষণা করেছে বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা।
ওই সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে যে, এখনও পর্যন্ত বিশ্বের উষ্ণতম বছর হিসেবে রেকর্ড গড়েছে ২০১৬ সাল। আর আগামী ৫ বছরের মধ্যেই তাপমাত্রার এই রেকর্ড ছাড়িয়ে যাওয়ার ৯৮ শতাংশ সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে এর সুদূরপ্রসারী ফল ভোগ করতে চলেছে মানুষ। স্বাস্থ্য, খাদ্য নিরাপত্তা, জল ব্যবস্থাপনা এবং পরিবেশের উপর প্রভাব পড়বে। এর জন্য সকলকে প্রস্তুত থাকতে হবে।
এটা কেন গুরুত্বপূর্ণ?
বিজ্ঞানীদের বক্তব্য, উষ্ণতার সামান্য বৃদ্ধি কিন্তু তাপপ্রবাহ, দাবানল, খরা এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে হওয়া বিপদের পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে পারে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, ২০২১ সালে বিশ্বব্যাপী উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে উত্তর-পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে তাপপ্রবাহের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছিল। যার জেরে সমস্ত স্থানীয় রেকর্ডও ভেঙে গিয়েছিল। আর এর বলি হয়েছিল শতাধিক মানুষ।
এল নিনোর জেরে বিশ্বব্যাপী বৃষ্টির ধরনের ক্ষেত্রেও বড়সড় বদল আসতে পারে। আবহাওয়া সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে যে, আগামী ৫ বছরে উত্তর ইউরোপ এবং সাব-সাহারান আফ্রিকার সাহেলের মতো এলাকায় গ্রীষ্মকালীন বৃষ্টির পরিমাণ বাড়বে বলে আশা করা হয়েছিল। এমনকী এ-ও আশা করা হয়েছিল যে, অ্যামাজন এবং অস্ট্রেলিয়ার কিছু অংশে বৃষ্টির পরিমাণ কমবে।
প্রতিষ্ঠানের রিপোর্টে আরও জানানো হয়েছে যে, আগামী পাঁচ বছরের কোনও এক বছরে ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস অথবা ২.৭ ডিগ্রি ফারেনহাইট হতে পারে, এর দুই-তৃতীয়াংশ সম্ভাবনা রয়েছে। যা ১৯ শতকের গড় হিসেবের তুলনায় উষ্ণ। তবে এর অর্থ এই নয় যে, এটা প্যারিস জলবায়ু চুক্তির বিশ্ব উষ্ণায়ন ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ধরে রাখার লক্ষ্যকে লঙ্ঘন করবে।
আসলে বহু রাষ্ট্রনেতা জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি সহনীয় মাত্রায় রাখতে ১.৫ ডিগ্রির মাত্রার উপর জোর দিয়েছেন। তবে রাষ্ট্রগুলি এই লক্ষ্য পূরণের জন্য প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনতে বেশ দেরি করে ফেলেছে। ফলে এখন বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, ২০৩০-এর গোড়ার দিকেই এই সীমা অতিক্রম করে যাবে গোটা বিশ্বই।
লা নিনা-ই একমাত্র বাঁচাতে পারে:
সেই ১৯ শতক থেকে সারা বিশ্বে গড় উষ্ণতা প্রায় ১.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেয়েছে। আসলে মানুষ ক্রমাগত জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার করে চলেছে। যার জেরে পরিবেশে মিশছে কার্বন-ডাই অক্সাইডের মতো ক্ষতিকর গ্যাস। এদিকে লা নিনা-র বছরে ভূপৃষ্ঠের তাপমাত্রা কম থাকে, আর এল নিনো-র বছরে ভূপৃষ্ঠের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। সেই অনুযায়ী, রেকর্ড উষ্ণতম বছর অর্থাৎ ২০১৬ সাল ছিল এল নিনো-র বছর। আবার এর পরিবর্তে বিগত তিন বছরে লা নিনা অবস্থা বিরাজ করেছে। যা ২০১৬ সালের মাত্রার থেকে কম ছিল। এখন বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, এই বছরের গরমে এল নিনো অবস্থার প্রত্যাবর্তন ঘটতে চলেছে। আর তা যেহেতু পরিবেশের গ্রিনহাউজ গ্যাসের ক্রমবর্ধমান মাত্রার সঙ্গে মিশছে, ফলে তাপমাত্রাও বৃদ্ধি পেয়ে নতুন করে রেকর্ড গড়বে।