কীভাবে ভানু বাগকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল কটকে ? কী ঘটেছিল মাঝপথে ?

কীভাবে ভানু বাগকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল কটকে ? কী ঘটেছিল মাঝপথে ?

পার্থপ্রতিম ঘোষ, শান্তনু নস্কর ও আশাবুল হোসেন, কলকাতা : এগরা থেকে পালিয়ে ওড়িশার কটক ! মাঝপথে একাধিক হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার চেষ্টা। শেষে নাম-পরিচয় ভাঁড়িয়ে কটকের হাসপাতালে ভর্তি। কিন্তু, শেষরক্ষা হল না। জবানবন্দি নেওয়ার আগেই মৃত্যু হল এগরার অবৈধ বাজি ব্যবসায়ী ভানু বাগের ! কীভাবে ভানু বাগকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল কটকে ? কী ঘটেছিল মাঝপথে ? এবিপি আনন্দর এক্সক্লুসিভ রিপোর্ট।

নেওয়া গেল না জবানবন্দি। পেশ করা গেল না আদালতে। এগরা বিস্ফোরণকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত অবৈধ বাজি কারখানার মালিক ভানু বাগের মৃত্যু হল কটকের হাসপাতালে !

ভানুর মৃত্য়ুর নেপথ্য়ে রহস্য় ? প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরা। রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, “তিনি কি মারা গেলেন নাকি তাঁকে খুন করা হল ? এই বিষয়ে সবার আগে তদন্ত হওয়া উচিত।”

প্রদেশ কংগ্রেস অধীর চৌধুরী বলছেন, সেদিন যদি তাঁকে ধরা যেত তাহলে আজকে তাঁর মৃত্যু হতো না। তাঁর চিকিৎসা করিয়ে প্রকৃত ঘটনার বিস্তারিত তথ্য পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ জানতে পারতো। পশ্চিমবঙ্গ সিআইডি জানতে পারতো। এই যে তদন্ত করবার দায়িত্ব তারা কেন পারল না ভানু বাগকে ধরতে, এর জেরে চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হওয়া, সেই চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হওয়া এবং রিক্স নেওয়া এবং তাঁর মৃত্যু হওয়া সব কিছুর মধ্যে প্রচুর প্রচুর প্রশ্ন লুকিয়ে আছে।

প্রায় ৮০ শতাংশ অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় মোটরবাইক, গাড়ি, তারপর অ্যাম্বুল্যান্সে করে ওড়িশার কটকের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল এগরা বিস্ফোরণকাণ্ডের মূল অভিযুক্তকে। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে সেখানেই মৃত্যু হয় ভানু বাগের। সূত্রের খবর, রাত সাড়ে ১২টার সময় কটকের হাসপাতালে পৌঁছে, ভানু বাগের জবানবন্দি নেওয়ার চেষ্টা করেন সিআইডির আধিকারিকরা।চিকিৎসকদের সঙ্গে কথাও বলেন গোয়েন্দারা। কিন্তু, ভানু বাগ কথা বলার মতো অবস্থা ছিলেন না। শেষে রাত ২.৪০ মিনিটে এগরা বিস্ফোরণকাণ্ডের ম
ূল অভিযুক্তর মৃত্যু হয়।

ওড়িশা প্রশাসন সূত্রের খবর, শুক্রবারই শ্রীরামচন্দ্র ভঞ্জ মেডিক্যাল কলেজে, ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে ভানু বাগের ময়না
তদন্তের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। এনিয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলছেন, “অমূল্য সম্পদ, চলে গেলেন। এতে তৃণমূলের বিরাট ক্ষতি হল ! এই ক্ষতি কীভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পূরণ করবেন সেটা ভবিষ্যৎই বলবে। “

অন্যদিকে, তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের পাল্টা বক্তব্য, “তিনি যদি জীবিত থাকতেন এবং তাঁকে যদি জেরা করার সুযোগ হতো, তাহলে এই সত্যিটাই সামনে চলে আসতো যে, শুভেন্দু অধিকারীদের অনুগামী এই ভানু। ফলে, সব থেকে স্বস্তির নিঃশ্বাস যে ফেলেছেন, তাঁর নাম শুভেন্দু অধিকারী।”

সূত্রের খবর, খাদিকুলে বিস্ফোরণস্থল থেকে আহত ভানুকে মোটরবাইকের মাঝে চাপিয়ে ওড়িশার দিকে রওনা দেয় ২ জন।
সীমানা পেরিয়ে, ওড়িশার জলেশ্বরের কাছাকাছি যেতেই, সেখানে পৌঁছে যায় ভানু বাগের ভাইপো ইন্দ্রজিতের বোলেরো গাড়ি। এরপর এগরা বিস্ফোরণকাণ্ডের মূল অভিযুক্তকে নিয়ে যাওয়া হয় বালেশ্বরের বেগুনিয়ায়। কিন্তু, সেখানে কোথাও ভানু-কে ভর্তি করানো যায়নি।

সূত্রের খবর, প্রাথমিক চিকিৎসার পরে, ফকির মোহন মেডিক্যাল কলেজ থেকে ভানু বাগকে রেফার করা হয় শ্রীরামচন্দ্র ভঞ্জ মেডিক্যাল কলেজে। কিন্তু, তাঁকে সেখানে না নিয়ে গিয়ে, অ্যাম্বুল্যান্সে করে ভানুকে নিয়ে যাওয়া হয় কটকের রুদ্র হাসপাতালে।

জানা গেছে, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার সময় কৃষ্ণপদকে রুদ্র হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেইসময় ৪ জন ছিলেন। বলা হয়, ফ্যামিলি প্রোগ্রামে বিস্ফোরণে আহত হয়েছে। শেষমেষ ওই হাসপাতালেই মৃত্য়ু হয় এগরা বিস্ফোরণকাণ্ডের মূল অভিযুক্তের।

(Feed Source: abplive.com)