কেন্দ্রীয় শিক্ষানীতির প্রতিবাদে এসএফআইয়ের অবস্থান কর্মসূচি

কেন্দ্রীয় শিক্ষানীতির প্রতিবাদে এসএফআইয়ের অবস্থান কর্মসূচি

কলকাতা: কেন্দ্রীয় শিক্ষানীতির বিরোধিতা করে লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে এসএফআই। তারই অংশ হিসেবে কলেজ স্কোয়ারে ২৫-২৬ মে সারা রাতব্যাপী অবস্থান বিক্ষোভে সামিল হল এসএফআই পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটি। নয়া জাতীয় শিক্ষানীতি এবং ইউজিসি-র যে সাম্প্রতিকতম সার্কুলার, সেই সার্কুলার বাতিল-সহ শিক্ষাক্ষেত্রের ওপর লাগাতার আক্রমনের বিরুদ্ধে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু হয় দুপুর ৩’টে থেকে।

ছাত্রদের মিছিল কলেজ স্কোয়ার চত্বর পরিক্রমা করার পর দুপুর থেকে শুরু করে সারা রাতব্যাপী অবস্থান বিক্ষোভে বিভিন্ন জেলার ছাত্র আন্দোলনের কর্মীরা সামিল হয়। অবস্থান বিক্ষোভের মঞ্চে দিনের বিভিন্ন সময়ে এসে তাদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, সমাজকর্মী, গণ-আন্দলনের কর্মীরা। অবস্থানে প্রারম্ভিক বক্তব্য রাখেন অভিনেতা চন্দন সেন, শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকার, কবি মন্দাক্রান্তা সেন, শিক্ষাবিদ অম্বিকেশ মহাপাত্র, অভিনেতা দীপাঞ্জন ভট্টাচার্য প্রমুখ বিশিষ্টজনেরা। উপস্থিত আছেন এসএফআই নেতৃত্ব প্রতীকউর রহমান, সৃজন ভট্টাচার্য প্রমুখ।

অবস্থানের মঞ্চে ছাত্র নেতৃত্বের বক্তব্যে উঠে এসেছে শিক্ষার সাম্প্রদায়িকীকরণ, লাগামহীন বেসরকারীকরণ, সিলেবাস বিকৃতি-সহ নানা প্রসঙ্গ। এই অবস্থান বিক্ষোভের মঞ্চ থেকে আগামীদিনে  ছাত্র, গবেষক, শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী, অভিভাবক-সহ সমাজের বৃহত্তর অংশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে বিজেপি সরকারের চাপিয়ে দেওয়া এই শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে আরও বড় পরিসরে আন্দোলন গড়ে তোলার ডাক দেন এসএফআই নেতৃত্ব।

এসএফআইয়ের নেতৃত্বের অভিযোগ, যে কেন্দ্রীয় সরকারের এই শিক্ষানীতি এবং ইউজিসির রাজ্য সরকারকে পাঠানো সার্কুলারের মধ্যে দিয়ে শিক্ষার বেসরকারিকরণ এবং লাভজনক সংস্থাগুলোকে সুযোগ পাইয়ে দেওয়ার যে প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে, তৃণমূলের সরকার তার বিরোধিতার বদলে আদতে তাকেই রূপায়িত করতে চাইছে। বিজেপি বিরোধিতার প্রশ্নে সামনের সারিতে লড়াই করছেন বামপন্থীরাই। একইভাবে এসএফআইয়ের তরফে আরও অভিযোগ করে জানানো হয়েছে, যে বিজেপির বহু আগেই রাজ্যের সরকার ডারউইনের তত্ত্বসহ বিভিন্ন বিজ্ঞানসম্মত এবং যুক্তিসিদ্ধ বিষয়গুলোকে সিলেবাস থেকে বাদ দিয়েছে। রাজ্যজুড়ে পিপিপি মডেলের বাস্তবায়নে সরকারের উদ্যোগ কার্যত স্পষ্ট, যা বিজেপির পরিকল্পনাকে আদতে পরিপুষ্ট করছে।

কর্পোরেট স্বার্থের অনুকূলে শিক্ষাব্যবস্থাকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা, শিক্ষাক্ষেত্রে অবাধ টেন্ডারবাজি, ছাত্রছাত্রীদের স্বাভাবিক লেখাপড়ার রুটিনকে ভেঙে দিয়ে অবৈজ্ঞানিক রুটিন এবং কারিকুলাম তৈরীর চেষ্টা, নতুন পরীক্ষাব্যবস্থার মাধ্যমে ছেলেমেয়েদের ওপর চাপ বাড়ানোর চেষ্টাসহ স্কুলশিক্ষা এবং প্রাথমিক শিক্ষার পরিকাঠামোকে ভেঙে দেওয়ার চক্রান্তের বিরুদ্ধে সরব হন এস এফ আই নেতৃত্ব। রাজ্যের ৮২০৭ স্কুল বন্ধ হয়ে যাওয়া, মিড ডে মিল-সহ বিভিন্ন প্রকল্পে লাগামহীন দূর্নীতির বিরুদ্ধে সমাজের সর্বস্তরে আন্দোলন গড়ে তোলার ডাক দেন এসএফআই কর্মীরা।

(Feed Source: news18.com)