ত্রিপুরাঃ ছিল সংস্কৃত, ত্রিপুরার উচ্চমাধ্যমিকে প্রথম কৃষকের ছেলে, পড়তে চান সাইকোলজি নিয়ে

ত্রিপুরাঃ ছিল সংস্কৃত, ত্রিপুরার উচ্চমাধ্যমিকে প্রথম কৃষকের ছেলে, পড়তে চান সাইকোলজি নিয়ে

প্রিয়াঙ্কা দেববর্মণ

কৃষকের ছেলে। ছোটবেলায় থেকেই লড়াই করে বড় হয়েছেন। সেই ছেলে ত্রিপুরার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করলেন। কলা বিভাগ থেকে ৫০০-র ৪৯৩ নম্বর পেয়েছেন অরিন্দম মাল্লা। আর সেই সাফল্যের পর দক্ষিণ ত্রিপুরার বেলোনিয়ার ঋষ্যমুখ উচ্চমাধ্যমিক স্কুলের পড়ুয়া জানান, আগামিদিনে মনোবিজ্ঞান (সাইকোলজি) নিয়ে পড়তে চান। ‘কমন ইউনিভার্সিটি এন্ট্রান্স টেস্ট’ (CUET) দিয়ে ত্রিপুরার বাইরে কোনও ভালো কলেজে ভরতি চান। নাহলে গোমতি জেলার উদয়পুর বা আগরতলার জেলার কোনও কলেজে মনোবিজ্ঞান নিয়ে পড়ার ইচ্ছা আছে।

সোমবার ত্রিপুরার উচ্চমাধ্যমিকের ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। শীর্ষস্থান অধিকার করেছেন অরিন্দম। আর পাঁচজনের মতো সব বিষয়ের গৃহশিক্ষক ছিল না। সেই সুযোগও ছিল না। কারণ কোনওক্রমে কষ্টের সংসার চলে। দ্বাদশ শ্রেণিতে শুধুমাত্র ইংরেজির গৃহশিক্ষক ছিলেন। আর একেবারে শেষলগ্নে এডুকেশনের জন্য গৃহশিক্ষকের সাহায্য পেয়েছিলেন অরিন্দম। বাকি রাষ্ট্রবিজ্ঞান, মনোবিজ্ঞান এবং সংস্কৃত নিজেই পড়তেন। সাহায্য করতেন মা শিপ্রা দত্ত এবং দিদি সন্দীপা। যে দিদি ২০২০ সালে উচ্চমাধ্যমিকে পঞ্চম হয়েছিলেন। আপাতত বেলোনিয়ার কলেজে ইংরেজি নিয়ে পড়ছেন।

তাতেই মিলেছে সাফল্য। তবে সেজন্য যে সারাক্ষণ চোখ-মুখ গুঁজে পড়াশোনা করতেন অরিন্দম, সেটা মোটেও নয়। বরং তিনি জানান, সারাদিনে মেরেকেটে তিন থেকে চার ঘণ্টা পড়তেন। ক্রিকেট, ফুটবল, ব্যাডমিন্টন, দাবার মতো বিভিন্ন খেলা চুটিয়ে খেলতেন। সেইসঙ্গে নিয়মিত সংবাদপত্রও পড়েন। দেশে-বিদেশের বিভিন্ন খবরের পাশাপাশি রাজনীতির প্রতি আগ্রহও আছে।

তবে রাষ্ট্রবিজ্ঞান নিয়ে পড়ার ইচ্ছা নেই অরিন্দমের। বরং মনোবিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করতে চান। অরিন্দম বলেন, ‘আমি মনোবিজ্ঞান নিয়ে উচ্চশিক্ষা চালিয়ে যেতে চাই। আমি কমন ইউনিভার্সিটি এন্ট্রান্স টেস্টে বসতে চাই। আমি যদি ভালো নম্বর পাই এবং ত্রিপুরার বাইরে কোনও ভালো কলেজে সুযোগ পাই, তাহলে আমি সেখানে চলে যাব। অথবা (গোমতি জেলার) উদয়পুর বা আগরতলার কলেজে মনোবিজ্ঞান নিয়ে পড়ার জন্য আবেদন করব।’

সেইসঙ্গে নিজের একটা প্রত্যাশার কথাও জানান অরিন্দম। তিনি জানান, আগামিদিনে রাজ্যের বিভিন্ন স্কুলে এডুকেশন, স্বাস্থ্য, প্রযুক্তি এবং খেলাধুলো নিয়ে পড়াশোনার সুযোগ আরও বাড়বে বলে আশা করছেন। অরিন্দমের কথায়, ‘এখনও রাজ্যের অনেক স্কুলে মনোবিজ্ঞান এবং এডুকেশন নেই। আমি আশা করব , যারা সেই বিষয়গুলি নিয়ে পড়তে চায়, তারা শীঘ্রই সেই বিষয়গুলি পেয়ে যাবে।’ সেইসঙ্গে রাজ্য সরকারের তাঁর আর্জি, বিদ্যাজ্যোতি স্কুলের যে পড়ুয়ারা গরিব, তাঁদের বিনামূল্যে পড়াশোনার সুযোগ করে দেওয়া হোক।

(Feed Source: hindustantimes.com)