তল্লাশি-ব্যবসা বন্ধের হুমকি দেয় ভারত, মারাত্মক অভিযোগ ট্যুইটার প্রতিষ্ঠাতার

তল্লাশি-ব্যবসা বন্ধের হুমকি দেয় ভারত, মারাত্মক অভিযোগ ট্যুইটার প্রতিষ্ঠাতার

নয়াদিল্লি: কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকারের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ। অভিযোহ তুললেন মইক্রোব্লগিং সাইট ট্যুইটারের (Twitter) সহ-প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক ডর্সি (Jack Dorsey)। তাঁর দাবি, কৃষক আন্দোলন নিয়ে একাধিক অ্যাকাউন্ট এবং সরকারের সমালোচক বলে পরিচিত একাধিক হ্যান্ডল ব্লক করার জন্য চাপ সৃষ্টি করে ভারত সরকার। অন্যথায় ভারতে ব্যবসা বন্ধ থেকে আধিকারিক এবং কর্মীদের বাড়িতে তল্লাশি চালানোর হুমকিও দেওয়া হয়।

সোমবার একটি সাক্ষাৎকারে এমন বিস্ফোরক দাবি করেছেন জ্যাক। ট্যুইটারের CEO থাকাকালীন কোনও দেশের সরকার তাঁর উপর চাপ সৃষ্টি করেছিল কিনা জানতে চাওয়া হয়। তার উত্তরে জ্যাক জানান, কৃষক আন্দোলন চলাকালীন সেই নিয়ে পোস্ট দেওয়া একাধিক অ্যাকাউন্ট এবং সরকারের সমালোচক বলে পরিচিত সাংবাদিকদের অ্যাকাউন্ট বন্ধের একাধিক অনুরোধ এসেছিল।

কী মর্মে অনুরোধ জানানো হয়, তাও ব্যাখ্যা করেন জ্যাক। তিনি বলেন,” অনুরোধের মর্মার্থ এমন ছিল যে, ভারতে ট্যুইটারের ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়া হবে, যা কিনা আমাদের জন্য ব্য়বসার বড় ক্ষেত্র। বলা হয়, ‘তোমাদের কর্মীদের বাড়িতে তল্লাশি চালানো হবে’, এবং তা করাও হয়। বলা হয়,  ‘নির্দেশ না মানলে তোমাদের দফতর বন্ধ করে দেব’। এখানে ভারতের কথাই বলি, যা কিনা একটি গণতান্ত্রিক দেশ।”

২০২১ সালে কেন্দ্রীয় নীতির বিরুদ্ধে কৃষকদের আন্দোলন চলাকালীন, ভারত সরকারের তরফে ট্যুইটারকে প্রায় ১২০০ অ্যাকাউন্ট বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয় বলে জানা যায়। খালিস্তান যোগ রয়েছে বলে দাবি করেও একাধিক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করতে বলা হয় বলে অভিযোগ। তার আগে, আরও ২৫০টি অ্যাকাউন্ট বন্ধের নির্দেশ যায় বলে খবর আসে। সেই সময় ট্যুইটারের তরফে একাধিক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়াও হয়। পরে তার মধ্যে অনেক অ্যাকাউন্ট আবার আনলকও করে দেওয়া হয়, যা নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে সংঘাত বাধে ট্যুইটারের। কেন্দ্রীয় তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রককে সেই সময় ট্যুইটার জানায়,অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়া বাক স্বাধীনতার পরিপন্থী।

২০২১ সালের মে মাসে বিজেপি নেতাদের কিছু পোস্টকে ভুল তথ্য বলে চিহ্নিত করে ট্যুইটার। তার পর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অধীনস্থ দিল্লি পুলিশের বিশেষ সেল দিল্লি এবং গুরুগ্রামে ট্যুইটারের দফতরে হাা দেয়। নোটিস ধরানো হয় তাদের। তাই জ্যাক বিষয়টি নিয়ে সরাসরি কেন্দ্রকে নিশানা করায় শোরগোল শুরু হয়েছে। যদিও কেন্দ্রীয় তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখর জ্যাকের দাবি নস্যাৎ করেছেন। তাঁর দাবি, জ্যাকের অধীনে ট্যুইটার লাগাতার ভারতের আউন লঙ্ঘন করছিল। কখনও কখনও ভুয়ো তথ্যও ছড়াচ্ছিল। জ্যাক মিথ্যে কথা বলছেন বলেও দাবি করেছেন রাজীব।

তবে ট্যুইটারের বর্তমান কর্ণধার, ইলন মাস্কও (Elon Musk) এর আগে ভারতে সোশ্যাল মিডিয়া সংক্রান্ত নীতি-নিয়ম নিয়ে মুখ খুলেছিলেন। এ বছর এপ্রিল মাসে তিনি জানান, ট্যুইটার কর্মীদের জেলে পাঠানোর চেয়ে ভারত সরকারের অ্যাকাুন্ট ব্লক করার নির্দেশ মেনে চলাই যুক্তিযুক্ত বলে মনে হয় তাঁর। ২০২১ সালের নয়া তথ্য-প্রযুক্তি নীতি নিয়েই এমন মন্তব্য করেন মাস্ক, যাতে নিয়ম না মানলে জেল হেফাজতের নিদান রয়েছে।

(Feed Source: abplive.com)