রাত পোহানোর অপেক্ষা শুধু, একবছর করে বয়স কমে যাবে সব নাগরিকের, ঘড়ির কাঁটা থমকে যাচ্ছে এই দেশে

রাত পোহানোর অপেক্ষা শুধু, একবছর করে বয়স কমে যাবে সব নাগরিকের, ঘড়ির কাঁটা থমকে যাচ্ছে এই দেশে

সোল: জীবনযাত্রা থেকে সিনেমা, তাদের অনুসরণ করে গোটা বিশ্ব। এবার উলটপুরাণ ঘটতে চলেছে দক্ষিণ কোরিয়ায় (South Korea)। নাগরিকদের বয়স নির্ধারণে চিরাচরিত ধারা থেকে সরে আসছে তারা। এতকাল সদ্যোজাত শিশুর বয়স এক বছর বলেই ধরা হতো দক্ষিণ কোরিয়ায় (Age Counting Law)। সেই ধারা থেকে সরে এসে, বিশ্বের অন্যত্র যেমন ভূমিষ্ঠ হওয়ার সময় থেকে শিশুর বয়স এক দিন, দু’দিন করে বাড়তে থাকে, সে ভাবেই হিসেব নিকেশ করার সিদ্ধান্ত নিল সে দেশের সরকার। অর্থাৎ এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে দক্ষিণ কোরিয়ার সমস্ত নাগরিকদের বয়স এক বছর করে কমে যাবে (Viral News)।

দক্ষিণ কোরিয়ায় বয়স নির্ধারণের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মাপকাঠি মেনে চলার দাবি উঠছিল দীর্ঘদিন ধরেই। সেই মতো দেশের নাগরিক আইনে রদবদল ঘটানো হয়েছে। গতবছর ঘোষণা হলেও, এতদিনে তা কার্যকর হতে চলেছে। নয়া নিয়মে জন্মের তারিখ অনুযায়ীই প্রত্যেক নাগরিকের বয়স নির্ধারিত হবে। দক্ষিণ কোরিয়ার সরকারের তরফে বিবৃতি জারি করে এমনই ঘোষণা করা হয়েছে। বুধবার থেকে এই নয়া নিয়ম কার্যকর হচ্ছে। সেই অনুযায়ী, কাল থেকেই একবছর করে বয়স কমে যাচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়ার নাগরিকদের।

দক্ষিণ কোরিয়ায় এতদিন ভূমিষ্ঠ হওয়ার মুহূর্ত থেকেই শিশুর বয়স এক বছর বলে ধরা হতো। মাতৃগর্ভে থাকা সময়কালকে শিশুর জীবনের একবছর হিসেবে গন্য করা হতো। অর্থাৎ ভূমিষ্ঠ হওয়া মাত্র ওই শিশুকে এক বছর বয়সি হিসেবে ধরা হতো। আবার কয়েক দিন বা মাসের মধ্যে নববর্ষে থাকলে, আরও একটি বছর যুক্ত হয়ে বয়স দু’বছর বলে গন্য হতো সেখানে। একমাত্র দক্ষিণ কোরিয়াতেই এতদিন এই পদ্ধতিতে বয়স নির্ধারণ করা হতো। মূলত সামাজিক এবং কর্মক্ষেত্রেই এই পদ্ধতিতে বয়সের হিসেব হতো। তাতে বাইরেরে দুনিয়ায় গিয়ে ধন্দে পড়তেন সে দেশের নাগরিকরা। গত বছর নির্বাচনে নাম লেখানোর সময় দেশের প্রেসিডেন্ট ইয়ুন সুক ইয়ুলই এই চিরাচরিত পদ্ধতি থেকে বেরিয়ে আসার দাবিতে সমর্থন জানান। এবার তা কার্যকর হতে চলেছে।

বুধবার থেকে এই নিয়ম কার্যকর হচ্ছে। তবে দক্ষিণ কোরিয়ার নাগরিকদের জন্মের শংসাপত্র থেকে পরিচয়পত্র, বয়স পাল্টাতে ছোটাছুটি করতে হবে না। কারণ সরকারি নথিতে জন্মের তারিখ এবং বছরের নিরিখেই বয়স নির্ধারিত হয়। ভোটদান, পেনশনের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম প্রযোজ্য, যাতে জীবনকালের নিরিখে সুযোগ সুবিধা পান সকল নাগরিক। তবে স্কুলে ভর্তি এবং সেনায় ভর্তির ক্ষেত্রে বয়স আপডেট করাতে হবে। কারণ সেক্ষেত্রে এতদিন চিরাচরিত প্রথাই চলত।

বয়স নির্ধারণের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক নিয়মকে মাপকাঠি করা নিয়ে গত বছর একটি সমীক্ষাও হয় দক্ষিণ কোরিয়ায়। তাতে আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনে চলার সপক্ষে সমর্থন জানান দেশের তিন-চতুর্থাংশ নাগরিক। তার পরই দেশের সংসদে বিল ওঠে। অবশেষে বুধবার থেকে কার্যকর হচ্ছে। তবে দক্ষিণ কোরিয়ায় পানশালায় ঢোকা এবং সিগারেট কেনার ক্ষেত্রে ন্যূনতম বয়স হতে হয় ১৯ বছর। তাই সেখানে বয়স কী উপায়ে ধরা হবে, তা নিয়ে ধন্দ দেখা দেয়। তবে জানা গিয়েছে, দক্ষিণ কোরিয়ার পানশালা এবং সিগারেটের দোকানে বয়স ধরা আন্তর্জাতিক মাপকাঠির নিরিখেই। তাই সমস্যা হওয়ার কথা নয়।

(Feed Source: abplive.com)