কথায় বলে দাঁত থাকতে কেউ দাঁতের মর্ম বোঝে না। আসলে দাঁত যে কোনও প্রাণীর ক্ষেত্রেই খুব গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। কিন্তু সেভাবে দাঁতের যত্ন মানুষ ছাড়া অন্য কোনও প্রাণীই করে না। অনেকেই যুক্তি দেন বাঘ দাঁত মাজে না, অথচ, আস্ত মোষ ওই দাঁতেই পিষে খায় সে। কিন্তু বাঘের দাঁত যে মানুষের মতো ৫০-৬০ বছর পর্যন্ত আস্ত থাকে না! তাই মানুষকে দাঁতের যত্ন করতেই হবে।
সকালে ঘুম থেকে উঠেই আমরা প্রথম যে কাজটি করি তা হল দাঁত মাজা। এক সময় মানুষ নিমের ডাল দিয়ে দাঁত মাজত। তারপর এল ব্রাশ।
কিন্তু তাতেও যে সবটা সমাধান হল, তা কিন্তু বলা যায় না। আসলে বেশির ভাগ মানুষই যেভাবে দাঁত ব্রাশ করেন, তা হয়তো সঠিক নয়। সাধারণত আমরা সবাই একইভাবে দাঁত ব্রাশ করি। কেউ ডান দিক থেকে বাম দিকে আবার কেউ বাম থেকে ডানে ব্রাশ করে থাকেন। চিকিৎসকরা বলছেন, এমন পদ্ধতি ভুল। এই ভাবে নিয়মিত ব্রাশ করলে দাঁতের যত্ন তো দূর, উল্টে সমস্যা তৈরি হতে পারে। এভাবে ব্রাশ করলে দাঁতের মাঝখানে আটকে থাকা খাবারের অংশ পরিষ্কার হবে না। ওই আটকে থাকা খাবারের কারণে দাঁতের ক্ষয় তৈরি হবে।
তাই বদলে ফেলতে হবে ব্রাশ করার পদ্ধতি। আড়াআড়ি নয়। বরং দাঁতের উপর ব্রাশ চালাতে হবে উপর-নিচে, উল্লম্ব ভাবে। এই ভাবে উপর-নিচে স্ট্রোক দিয়ে দাঁত ব্রাশ করলে দাঁতের ফাঁকে ফাঁকে আটকে থাকা যেকোনও খাবারের টুকরো, ব্যাকটেরিয়া— সবই বেরিয়ে যাবে।
আবার দাঁত ভুল ভাবে ব্রাশ করলে দাঁতের এনামেল নষ্ট হয়ে যেতে পারে। সব থেকে বড় বিষয় হল, মানুষ দাঁতের প্রতি এতটাই অসচেতন যে প্রাথমিক ভাবে কোনও সমস্যার কথা নজরেই পড়ে না।
বিশিষ্ট দন্তচিকিৎসক পি জোছনা সিঙ্গুরি বলেন, ‘দাঁতের স্বাস্থ্যরক্ষায় ব্রাশ করার ধরনে ছোটখাটো পরিবর্তনই অনেকখানি কার্যকর হতে পারে। অনুভূমিক না হয়ে ব্রাশের গতি উল্লম্ব বা বৃত্তাকার হলে অনেক ভাল ভাবে দাঁত পরিষ্কার করা যাবে।