মণিপুর হিংসা নিয়ে উত্তাল সংসদ, বিরোধী জোট INDIA-কে নিশানা মোদির, তুলনা করলেন জঙ্গিগোষ্ঠীর সঙ্গে

মণিপুর হিংসা নিয়ে উত্তাল সংসদ, বিরোধী জোট INDIA-কে নিশানা মোদির, তুলনা করলেন জঙ্গিগোষ্ঠীর সঙ্গে

নয়াদিল্লি: মণিপুর হিংসা নিয়ে উত্তাল সংসদ (Manipur Violence)। সেই আবহে বিরোধী জোট INDIA-কে নিশানা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। জঙ্গিগোষ্ঠীর সঙ্গে বিজেপি বিরোধী জোটের তুলনা করলেন তিনি। বললেন, “ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন, PFI-তেও তো INDIA আছে!” সংসদের বাদল অধিবেশনের আগে বিজেপি সংসদীয় কমিটির সঙ্গে বৈঠক করেন মোদি। সেখানেই এমন মন্তব্য করেন (Opposition Alliance)।

মঙ্গলবার বিজেপি সংসদীয় কমিটির সঙ্গে বৈঠকে বিরোধী জোটকে নিশানা করে এমন মন্তব্য করেন মোদি। তাঁকে উদ্ধৃত করে বিজেপি নেতা রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেন, “ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন, পপুলার ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়ার মতো জঙ্গি সংগঠনেও INDIA রয়েছে। সেখান থেকেই নাম ধার করেছে বিরোধী শিবির। বিরোধীদের জোট দিশাহীন। এমন দিশাহীন বিরোধী জোট আগে দেখিনি।” (Parliament Monsoon Session)

সেখানেই থামেননি মোদি। মোদিকে উদ্ধৃত করে রবিশঙ্কর বলেন, “INDIA নাম রেখে নিজেদের প্রশংসা করে ওরা। ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেস, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি, ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন, পপুলার ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়া-ও INDIA শব্দের ব্যবহার করে। INDIA নাম ব্যবহার করলেই হয় না। দেশের নাম ব্যবহার করে বিভ্রান্ত করা যায় না মানুষকে। ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেস, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা বিদেশি নাগরিক ছিলেন।”

বিগত দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে চলে আসা মণিপুর হিংসা নিয়ে এই মুহূর্তে উত্তাল সংসদের বাদল অধিবেশন। মণিপুর নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে বিবৃতি দিতে হবে, সংসদে বিরোধীদের আলোচনার সুযোগ দিতে হবে বলে একদিকে দাবি করছেন বিরোধীরা। মণিপুর নিয়ে আলোচনা এড়াতে সংসদের অধিবেশন আটকানো হচ্ছে বলেও দাবি করছেন তাঁরা। আপ সাংসদ সঞ্জয় সিংহকে সাসপেন্ড করার প্রতিবাদে রাতভর অবস্থানও করেছেন সংসদের বাইরে। অন্য দিকে, কেন্দ্রের অভিযোগ বিরোধীরাই অধিবেশন হতে দিচ্ছেন না।

সেই নিয়ে চাপানউতোরের মধ্যে মঙ্গলবার বিরোধী জোটকে নিশানা করলেন মোদি। বিরোধীদের ‘পরাজিত’, ‘ক্লান্ত’ এবং ‘আশাহত’ বলেও কটাক্ষ করেন তিনি। বিরোধীর শুধু মোদির বিরোধিতা করছেন বলে দাবি করেন।  ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনেও বিজেপি বিপুল জনসমর্থন পেয়ে বিজয়ী হবে বলে দাবি করেন মোদি।

মোদির এই মন্তব্যে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে সমাজবাদী পার্টির সাংসদ জয়া বচ্চন বলেন, “চেয়ারকে সম্মান করি। তাই প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে কিছু বলতে চাই না। কিন্তু ২০১৪ সাল থেকে প্রধানমন্ত্রীর সব ভাষণ যদি শুনি আমরা, তাহলেই সবকিছু পরিষ্কার হয়ে যাবে।” তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্য়োপাধ্যায়ের বক্তব্য, “বোঝা যাচ্ছে, নরেন্দ্র মোদি ভয় পেয়ে গিয়েছেন। এই জোট কাজ করতে শুরু করেছে। সংগঠিত ভাবে, পরিকল্পিত চিন্তাভাবনা নিয়ে এগোচ্ছে। সেটা যে কাজ করছে, বুঝতে পারছেন, বুঝতে পারছেন সময় হয়ে এসেছে। তাই এসব উল্টোপাল্টা মন্তব্য করছেন।”

মোদির মন্তব্যের প্রেক্ষিতে কংগ্রেস নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেন, “কংগ্রেসের মতো একটা দীর্ঘদিনের প্রতিষ্ঠান, যা ১৩৮ বছর অতিক্রম করেছে, তখনও জন্মই হয়নি বিজেপি-র। বিজেপি কখনও ইংরেজদের বিরুদ্ধে লড়াই করেনি, জঙ্গিগোষ্ঠীর বিরুদ্ধেও লড়াই করেনি…মোদি ভুলে যাচ্ছেন জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়তে গিয়ে প্রাণ দিয়েছেন ইন্দিরা গাঁধী, রাহুল গাঁধী। তাঁদের কে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়তে গিয়ে প্রাণ দিয়েছেন? একটা মণিপুর নিয়ে উত্তর দিতে পর্যন্ত ভয় পাচ্ছেন। তাই কী বললেন, তাতে আমাদের কিছু যায় আসে না।”

সিপিএম সংসদ বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, “দুর্ভাগ্যজনক বিষয় যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নিজের দেশের ইতিহাস জানেন না। জানেন না দেশের ব্যাপক সংখ্যাগরিষ্ঠ জনসংখ্যার ভাবনার প্রতিফলন। তিনি তাঁর সন্ত্রাসবাদী যে মানসিকতা, তারই প্রকাশ ঘটালেন। বৃহত্তর রাজনৈতিক সম্মেলনকে সন্ত্রাসবাদী, মুজাহিদিন বলছেন। প্রমাণ হয়, বিজেপি এবং মোদি সাধারণ মানুষের ঐক্যকে ভয় পাচ্ছেন তাই সবের মধ্যে সন্ত্রাস দেখছেন।”

(Feed Source: abplive.com)