রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা অনেকটা নেমে গিয়েছিল। যেখানে অক্সিজেনের স্যাচুরেশন ৯০-র নীচে নামলেই আতঙ্কের চোরাস্রোত খেলে যায়, সেখানে পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা ৬৮-তে ঠেকেছিল। সেটা নিয়ে উদ্বেগ থাকলেও অতীতে বুদ্ধদেববাবুর শারীরিক অবস্থা আরও খারাপ হয়েছিল বলে জানিয়েছে চিকিৎসক মহল। ওই মহলের দাবি, বুদ্ধবাবু বরাবরই যেন ‘ফাইটার’। অতীতে একাধিকবার অত্যন্ত সংকটজনক পরিস্থিতি থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছেন। বিশেষত তিনি যখন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন, তখন বিপদ আরও বেশি ছিল।
চিকিৎসা মহল সূত্রের খবর, বুদ্ধদেববাবু যখন করোনায় (২০২১ সালের মে’তে) আক্রান্ত হয়েছিলেন, তখন তাঁর শারীরিক অবস্থা আরও সংকটজনক ছিল। এখন তুলনামূলকভাবে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর শারীরিক অবস্থা ভালো আছে। তবে মূল উদ্বেগের জায়গা হল বুদ্ধবাবুর শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা। অক্সিজেন স্যাচুরেশন ৬৮-তে নেমে যাওয়ার বিষয়টা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। যা ৯০-র নীচে নামলেই বিপদের আশঙ্কা থাকে।
তবে আপাতত বুদ্ধদেববাবুর সংকট কিছুটা কেটেছে বলে সূত্রের খবর। উডল্যান্ডস হাসপাতালের মেডিক্যাল বুলেটিনেও তেমন ইঙ্গিত মিলেছে। বুদ্ধদেববাবুর রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা কত আছে, তা জানানো না হলেও সূত্রের খবর, বুদ্ধবাবুর অক্সিজেনের স্যাচুরেশন বেড়ে দাঁড়িয়ছে ৮৩-তে। অর্থাৎ ৭০-র নীচের স্তর থেকে মোটামুটি ৯০-র কাছাকাছি এসে গিয়েছে। সেটা যত দ্রুত বাড়বে, তত বুদ্ধদেববাবুর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল হবে। তাই সাময়িকভাবে কিছুটা সংকট কেটেছে। পুরোপুরি বিপন্মুক্ত বলা না গেলেও যে অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল, সেখান থেকে তাঁর শারীরিক অবস্থা অনেকটা স্থিতিশীল হয়েছে।
হাসপাতালের তরফে কী জানানো হয়েছে? মেডিক্যাল বুলেটিনে জানানো হয়েছে, বুদ্ধদেববাবুর শ্বাসনালীর নীচের দিকে সংক্রমণ আছে। তাঁর ‘টাইপ ২ রেসপিরেটরি ফেলিয়োর’ হয়েছে। অর্থাৎ রক্তে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের মাত্রা বেশি আছে। অক্সিজেনের মাত্রা কমে গিয়েছে। তাঁকে আপাতত বাইপ্যাপ সাপোর্টে রাখা হয়েছে। দেওয়া হয়েছে অ্যান্টি-বায়োটিক। একাধিক পরীক্ষা করা হয়েছে। সেইসব পরীক্ষার রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে। আপাতত শারীরিকভাবে স্থিতিশীল আছেন (রক্তচাপ এবং হৃদস্পন্দন স্থিতিশীল আছে) বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে।
যে মেডিক্যাল বুলেটিনের ভিত্তিতে চিকিৎসকরা মনে করছেন যে আগের থেকে বুদ্ধদেববাবুর শারীরিক অবস্থার উন্নত হয়েছে। এখন মূল চ্যালেঞ্জ হল যে তাঁর রক্ত থেকে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের মাত্রা কমিয়ে ফেলা। সেটা যদি ঠিকঠাকভাবে কমানো যায়, তাহলে রবিবার সকালে বাইপ্যাপ সাপোর্টের প্রয়োজন নাও হতে পারে বলে মত চিকিৎসক মহলের একাংশের।
(Feed Source: hindustantimes.com)