বাংলার সফলতম ক্রিকেটারদের মধ্যে প্রথম পাঁচে থাকবে, মনোজের জায়গা নেওয়ার কেউ নেই, বলছেন ঋদ্ধি

বাংলার সফলতম ক্রিকেটারদের মধ্যে প্রথম পাঁচে থাকবে, মনোজের জায়গা নেওয়ার কেউ নেই, বলছেন ঋদ্ধি

সন্দীপ সরকার, কলকাতা: মাঠে তাঁরা দীর্ঘদিনের সহযোদ্ধা। ঘরোয়া ক্রিকেটে তো বটেই, আইপিএলে, স্থানীয় ক্রিকেটে এমনকী অফিস ম্যাচেও কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করেছেন।

মনোজ তিওয়ারির (Manoj Tiwary) অবসরের কথা জেনে ঋদ্ধিমান সাহা (Wriddhiman Saha) আবেগে ভাসছেন। সাফ বলে দিচ্ছেন, ‘বাংলার সফল ক্রিকেটারদের তালিকা তৈরি করতে বসলে প্রথম চার-পাঁচজনের মধ্যে মনোজ থাকবে। বড় দলের বিরুদ্ধে ওর পারফরম্যান্স, দারুণ কিছু সাহসী ইনিংস তো আছেই, পাশাপাশি এসিএল ছিঁড়ে যাওয়ার পর ফিরে আসা – মনোজ একটা চরিত্র।’

আপনার দেখা মনোজের সেরা ইনিংস কোনটা? এবিপি লাইভকে ঋদ্ধিমান বলছেন, ‘রঞ্জি ট্রফিতে আমার প্রথম ইনিংসের কথা মনে আছে। ইডেনে হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে ম্যাচ ছিল বাংলার। আমার অভিষেক ম্যাচ। আমি ১১১ করেছিলাম, মনোজ ডাবল সেঞ্চুরি করেছিল। তার আগে সেঞ্চুরি, ডাবল সেঞ্চুরি ছিল ওর। তবে সেই ইনিংসটা স্পেশ্যাল ছিল। এত দাপট নিয়ে ব্যাটিং করেছিল।’ যোগ করলেন, ‘আমার কয়েক মরশুম আগে ওর অভিষেক হয়েছিল। তবে আমরা সমসাময়িক বলা যেতে পারে। একসঙ্গে প্রচুর ম্যাচ খেলেছি। ওর টেম্পেরামেন্ট বলুন বা রান করা দক্ষতা, এক কথায় অসাধারণ। মিডল অর্ডারে ও ব্যাট করতে নামা মানে ভরসা থাকত যে, মনোজ আছে মানে রান করবেই।’

বাংলা দলে তাঁর কাটানো সেরা সময়ের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে ঋদ্ধিমানের। বঙ্গ উইকেটকিপার বলছেন, ‘একটা সময় ব্যাটিংয়ে মনোজ, আমি, বলে ডিন্ডা, অলরাউন্ডার লক্ষ্মীরতন শুক্ল – বাংলার হয়ে একসঙ্গে অনেক ম্যাচ খেলেছি। জিতেছি। বোঝাপড়া দারুণ ছিল আমাদের। ডিন্ডা বাংলার সর্বকালের অন্যতম সেরা বোলার। এলআর বাংলার সর্বকালের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার। মনোজ ব্যাটারদের মধ্যে সর্বকালের অন্যতম সেরা।’

ঋদ্ধিমান এখন বাংলার হয়ে খেলেন না। ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলেন ত্রিপুরার জার্সিতে। বলছিলেন, ‘শেষ ২ বছর সক্রিয় রাজনীতিতে নেমেও ক্রিকেট খেলে গিয়েছে মনোজ। আমি বাংলার হয়ে আর না খেললেও খবর রাখি। মনোজ যেভাবে দলের হয়ে ধারাবাহিকভাবে অবদান রেখেছে, অসাধারণ।’

মনোজের দায়বদ্ধতা উদাহরণ হওয়া উচিত, মনে করেন ঋদ্ধিমান। বলছেন, ‘ক্লাব ক্রিকেটেও ওর দায়বদ্ধতা ছিল দেখার মতো। মোহনবাগানের হয়ে ক্লাব ম্যাচেও যেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের মতো মানসিকতা নিয়েই খেলত। এমনকী অফিসের ম্যাচেও নিজের সেরাটা দিত। জেতার জন্য ঝাঁপাত।’

ভারতীয় দলে কি আরও সুযোগ প্রাপ্য ছিল মনোজের? ঋদ্ধির কথায়, ‘জাতীয় দলে কিছুদিন ছিল। হয়তো ধারাবাহিকভাবে সুযোগ পায়নি। জানি না অন্য কোনও কারণ ছিল কি না ওকে বাদ দেওয়ার নেপথ্যে। সেঞ্চুরি করার পরেও সুযোগ পায়নি, সেটা ঠিক।’

গতবারও রঞ্জিতে বাংলাকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ফাইনালে তুলেছেন। মনোজের শূন্যস্থান পূরণ করবেন কে? ‘এখনকার বাংলা দলে মনোজের জায়গা পূরণ করার মতো কাউকে দেখেনি। ওর পরিবর্ত নেই’, সাফ বলে দিচ্ছেন ঋদ্ধিমান।

ভবিষ্যতে ক্রিকেট মাঠে অন্য কোনও ভূমিকায় দেখা যাবপে মনোজকে? ঋদ্ধিমান বলছেন, ‘রাজনীতিতে রয়েছে। জানি না সেখানে ও চালিয়ে যাবে কি না। তবে রাজনীতি ছাড়লে হয়তো কখনও না কখনও ক্রিকেটে ফিরে আসবে। রাজনীতিতে থেকে কতটা সময় দিতে পারবে নিশ্চিত নই।’

(Feed Source: abplive.com)