আবার যে ছেলেটা র্যাগিংয়ের শিকার হচ্ছে, সে আগামী দিনে সিনিয়র হলে আরও বেশি মাত্রায় র্যাগিং করার পরিকল্পনা করলে, এই অপসংস্কৃতি বাড়তেই থাকে! এ বিষয়ে মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ইন্দ্রনীল সাহা বলছেন, এর পিছনে থাকে ডমিনেট করার মানসিকতা বা জুনিয়র ছাত্রদের দিয়ে কিছু কাজ করিয়ে নেওয়ার ইচ্ছে। এটা খারাপ মানসিকতার লক্ষণ বলেই মনে করছেন তিনি। সেই সঙ্গে মনোবিদ মনে করছেন, এই ধরনের ঘটনা, কখনও কখনও ঠেলে দেয় আত্মহত্যার দিকে।
ভয়ঙ্কর র্যাগিং-এর ফলে বহু পড়ুয়া আতঙ্কে ক্যাম্পাস ছেড়ে চলে যায়। কাউকে কাউকে তো চিকিৎসকেরও শরণাপন্নও হতে হয়। কিন্তু তাতেও কেন র্যাগিং করার এই ভয়ঙ্কর প্রবণতা বন্ধ হয় না? মনোবিদ অয়নাংশু নায়কের মতে, এর পিছনে একটা পাওয়ার প্লে-র মানসিকতা থাকে। অন্যকে ব়্যাগিং করে নিজের ক্ষমতা প্রদর্শন করার চেষ্টা। অনেক সময় মনের ভিতর হীনমন্যতা কাজ করে। একজন জুনিয়রকে দাবিয়ে দিয়ে একটা আত্মপ্রসাদ লাভ করেন তাঁরা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুরুতে র্যাগিংয়ের নামকরণ করা হতো বিভিন্ন গ্রিক বর্ণ যেমন, আলফা, বিটা, এপসাইলন, ডেল্টা প্রভৃতির নামানুসারে এবং এদেরকে বলা হতো অর্গানাইজেশন বা ফ্র্যাটার্নিটি। এসব ফ্র্যাটার্নিটিতে আসা নবীনদেরকে বলা হতো প্লেজেস। শুরুর দিকে প্লেজেসদেরকে কেবল কিছু সাহসিকতা, শারীরিক সক্ষমতা ও বুদ্ধিমত্তার পরীক্ষা নিয়েই ছেড়ে দেওয়া হতো। কিন্তু, ধীরে ধীরে তা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। যা একসময় ছিল প্রবীণদের সাথে নবীনদের বন্ধন সুদৃঢ় করার উপায়, পরে সেটাই প্রাণঘাতী রূপ নেয়।
অনেকে বলে থাকেন, র্যাগিংয়ের কারণে মারা যাওয়া প্রথম শিক্ষার্থী হলেন মর্টিমার লেগেট। ১৮৭৩ সালে নিউ ইয়র্কের কর্নেল ইউনিভার্সিটিতে প্রথম সেমেস্টারে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। খাড়া পাহাড়ে দেওয়াল থেকে শক্ত পাথরের উপর পড়ে তাঁর থেতলে গেছিল। কিন্তু, দুর্ভাগ্য়ের বিষয় তার ১৫০ বছর বাদেও সেই র্যাগিং নামক ব্য়াধি দূর তো হয়ইনি, উল্টে ভয়ঙ্কর আকার নিয়েছে।
(Feed Source: abplive.com)