কলকাতা: আমরা সাধারণত বাড়িতে গমের বা জোয়ার আর বাজরার রুটি খাই। তবে আজ আমরা আদিবাসী হেঁশেলের এমন রুটি সম্পর্কে আলোচনা করব যার নাম খুবই কম শোনা যায়। আজ আমরা আসলে বলছি গোন্দলি চালের রুটির কথা। এটি ভারতের আদিবাসীদের অন্যতম প্রধান খাবার।
আজকাল অনেকেই এই গোন্দলি চালের রুটি খেতে শুরু করেছেন, অনেকেই এর স্বাদ ও গন্ধে মুগ্ধও হয়েছেন। গত কয়েকদিন হল ঝাড়খণ্ডের রাজধানী রাঁচির জেল চকে অবস্থিত বিরসা মুন্ডা উদ্যানে উপজাতীয় উৎসবে চলছ। সেখানেই অনেকে এই রুটির স্বাদ গ্রহণ করেছেন। তবে সকলের পক্ষে এখানে আসা সম্ভব নয়, তাই বাড়িতে এই রুটি বানিয়ে কীভাবে খেতে হয় সেই নিয়েই আজ আমরা আলোচনা করব। ওই উৎসবে অংশ নিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা শালিনী এক্কা। তিনি জানিয়েছেন সারা বছরই তাঁরা এই চালের রুটি খান, বিশেষ করে নবখানির সময় এই রুটি তৈরি করা হয়। এই নবখানি উৎসব আসলে নতুন ধান কাটার সময় পালিত নবান্ন উৎসবের মতো।
শালিনী আরও জানান, গোন্দলি চাল ঝাড়খণ্ড জুড়েই পাওয়া যায়। প্রথমে চাল ভাল করে ধুয়ে সারারাত ভিজিয়ে রাখতে হয়। তারপর পরদিন সকালে এটি পিষে এর মণ্ড তৈরি করা হয়। এতে বিশেষ কোনও মশলা বা সবজি যোগ করা হয় না। তবে স্বাদ অনুযায়ী সামান্য লবণ ব্যবহার করা যেতেই পারে।
এরপর একটি গরম মাটির পাত্রে চালের মণ্ড ঢেলে রুটির আকারে ছড়িয়ে দিতে হয়। রুটি ফুলে উঠতে শুরু করলে এতে এক চামচ সূর্যমুখী তেল ছড়িয়ে দিতে হবে। সূর্যমুখী তেলের স্বাদ যেমন বাকি তেল থেকে অনেক আলাদা তেমনই এটি খেতেও অনেক উপকারী। ১৫ মিনিটের জন্য রুটি ঢেকে রেখে পাত্রের ঢাকনা সরিয়ে আলাদা প্লেটে তুলে নিতে হবে। খাওয়ার সময় এতে আধ চা চামচ খাঁটি মধু মিশিয়ে গরম গরম পরিবেশন করতে হবে।
স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী গোন্দলি রুটি
যাঁরা ওজন কমাতে চান বা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করতে চান তাঁরা এই রুটি খেতে পারেন। এতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকায় এটি আমাদের হজম প্রক্রিয়াকে ঠিক রাখে। যেহেতু এতে মধু ব্যবহার করা হয় তাই সুগারের রোগীরাও সহজেই খেতে পারেন।
রাঁচির পারস হাসপাতালের জেনারেল ফিজিশিয়ান ডা. অনুজ জানান, গোন্দলি চাল আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। এই ভাতে অনেক ধরনের পুষ্টিকর উপাদান যেমন ভিটামিন এ, বি, সি, ভিটামিন বি১ এবং উচ্চ পরিমাণে ফাইবার এবং খুব কম ক্যালোরি থাকে। এর কারণে এটি ওজন কমাতে বা ডায়াবেটিস রোগীদের পক্ষে অত্যন্ত ভাল একটি বিকল্প হতে পারে।