কলকাতা: সৈকত শিট আর অরিত্র মজুমদার! হঠাৎ করে স্বপ্নদীপের মৃত্যুকাণ্ডে উঠে আসছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কালেক্টিভের অন্যতম নেতৃত্ব ও হস্টেলের প্রভাবশালী দুই ছাত্রনেতার নাম৷ আর তার সঙ্গেই প্রকাশ্যে আসছে অদ্ভুত তথ্য, এরাই নাকি স্বপ্নদীপের ঘটনার পর মিটিং বসিয়েছিল মেন হস্টেলে, বন্ধ করে দিয়েছিল হস্টেলের দরজা৷ সেখানে পুলিশকে ঢুকতে পর্যন্ত দেয়নি৷ আপাতত এই দুই নেতাই পলাতক বলে শোনা যাচ্ছে, কিন্তু এদের দু’জনকেই খুঁজছে পুলিশ৷
অরিত্র মজুমদার ওরফে ‘আলু’ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টির অন্যতম পরিচিত নাম৷ প্রভাবশালী এক নেতৃত্বও বটে৷ এক সময়ে ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টির স্টুডেন্টস ইউনিয়নের সদস্য কার্যত রাজ করতেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলে৷ তার দাপটে ত্রস্ত থাকত হস্টেল৷ একটি পাতা নড়ারও খবর ‘আলু’-র কাছে থাকত৷ সে রাতে হস্টেলের গেট বন্ধ করার প্রধান কাণ্ডারি ছিল এই ছাত্রনেতা৷ বহুদিন আগে পড়াশোনার পাঠ শেষ হয়েছে, গবেষণার সঙ্গে হয়ত তিনি যুক্ত ছিলেন, কিন্তু হস্টেলে এ ভাবে নিয়মিত থাকার অধিকার তাঁর ছিল না বলেই অনেকে মনে করছেন, যদিও বিষয়টি পুরোটাই এখন তদন্তের বিষয়৷
এ সবের মধ্যে থেকেই উঠে আছে ‘কালেক্টিভ’-এর নামও৷ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীন সংগঠনগুলির নিয়ন্ত্রণ এই সময়ে ছিল ‘কালেক্টিভ’-এর হাতে৷ আর সেই সংগঠনের শীর্ষ নেতৃত্বের মধ্যে অরিত্র ছিলেন একজন, ছিলেন সৈকতও৷ পড়ুয়াদের চ্যাটে যা উঠে আসছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, কালেক্টিভের লোকেরাই সেদিন রাতে মিটিংয়ে বসেছিল এই মৃত্যুর ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য৷ ওই ভাইরাল চ্যাটে দেখা গিয়েছে, লেখা হয়েছে, আলু প্রমাণ লোপাটেরও চেষ্টা করেছিলেন৷ তবে সবটাই এখন তদন্ত সাপেক্ষ৷
এ দিকে বুধবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় আরও ছ’জনকে গ্রেফতার করল কলকাতা পুলিশ৷ মঙ্গলবার রাতভর জেরার পর বুধবার সকালে এই চার জনকে গ্রেফতার করা হয়৷ এই চার জনের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক প্রাক্তন ছাত্র রয়েছে বলেও খবর মিলেছে৷ পরে আবারও দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়৷ শেষ দু’জনের মধ্যে একজনরে সুন্দরবন থেকে ও একজনকে বারুইপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়৷ সব মিলিয়ে গ্রেফতারির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ছয়৷